আইসিসি চ্যাম্পিয়নস পাকিস্তান

0

সিটিনিউজবিডি ডেস্ক :  ভারতকে গুড়িয়ে দিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতলো পাকিস্তান। স্বপ্নের ফাইনালে ফেবারিট ভারতকে উড়িয়ে দিয়েছে সরফরাজ বাহিনী। কোহলি বাহিনীকে ১৮০ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো এ শিরোপা ঘরে তুললো তারা।

ফাইনালে ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে ফখর জামান আর শেষের ঝড়ে মোহাম্মদ হাফিজ দলকে এনে দিয়েছিলেন বিশাল সংগ্রহ। জিততে রেকর্ড গড়তে হতো ভারতকে, অসাধারণ বোলিং করা মোহাম্মদ আমির, জুনায়েদ খান, হাসান আলিরা তার ধারে কাছে যেতে দেননি বিরাট কোহলির দলকে।

এক পেশে ফাইনালে উজ্জ্বীবিত পাকিস্তান জিতেছে ১৮০ রানে। ওয়ানডেতে রানের দিক থেকে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এটাই তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। আগের সেরা ছিল ২০০৫ সালে দিল্লিতে ১৫৯ রানের জয়।

লন্ডনের ওভালে রোববার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ৩৩৮ রান করে পাকিস্তান। কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে এটাই তাদের সর্বোচ্চ রান। ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে এটাই ভারতের বিপক্ষে তাদের সর্বোচ্চ রান। এর আগে দুইবার ৩২৯ রান করেছিল পাকিস্তান।

শিরোপা ধরে রাখতে পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়া, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বোচ্চ রান তাড়া আর ইংল্যান্ডের মাটিতে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হতো ভারতকে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় লক্ষ্য ছোঁয়ার আশাও জাগাতে পারেনি। ৩০ ওভার ৩ বলে গুটিয়ে যায় ১৫৮ রানে।

চোট কাটিয়ে ফেরা বাঁহাতি পেসার আমির শুরুতেই কাঁপিয়ে দেন ভারতকে। লক্ষ্য তাড়ায় পথ দেখাতে দলটি তাকিয়ে ছিল ছন্দে থাকা টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের দিকে। তাদের দ্রুত বিদায় করে কাজটা ভীষণ কঠিন করে তুলেন আমির।

ইতিহাস গড়ার দিনে পাকিস্তানের সেরা বোলার মোহাম্মদ আমির। ৬ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতীয় শিবিরে হিংস্র থাবা হানেন তিনি। পরে তার পথ অনুসরণ করেন শাদাব খান, জুনায়েদ খান ও হাসান আলি। হাসান নেন ৩ উইকেট। জুনায়েদ খান ২ উইকেট ও শাদাব খান ১ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন।

এর আগে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। ম্যাচের গোড়াপত্তন করতে নেমে স্বপ্নের শুরু এনে দেন আজহার আলি ও ফখর জমান। ভারতের শক্তিশালী বোলিং লাইনআপকে তুলোধোনা করে গড়েন ১২৮ রানের জুটি। দলীয় এ রানে ভুল বোঝাবুঝির ফলে রানআউটের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি আজহার (৫৯)।

আজহার ফিরলে বাবরকে নিয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন ফখর। সব চোখ ধাঁধানো শটে দলের রান বাড়িয়ে চলেন তিনি। যার পথ পরিক্রমায় তুলে নেন ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি। অবশ্য সেঞ্চুরি করে ক্রিজে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

দলীয় ২০০ রানে হার্দিক পান্ডেকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে রবীন্দ্র জাদেজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ১০৬ বলে ১২ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৪ রানে অসাধারণ ইনিংস খেলেন তিনি।

ফখরের বিদায়ের পর শোয়েব মালিককে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন বাবর। তবে সেই যাত্রায় থেমে যান শোয়েব মালিক (১২)। দলীয় ২৪৭ রানে ভুবনেশ্বর কুমারের বলে জাদভের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।

এরপর ক্রিজে আসা আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজকে নিয়ে দলকে বড় স্কোরের পথে পৌঁছে দেয়ার জন্য লড়ে যান বাবর। এবার থেমে যান এ টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান নিজেই। দলীয় ২৬৭ রানে ফিফটি থেকে মাত্র ৪ রান দূরে থাকতে জাদভের বলে যুবরাজ সিংয়ের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন তিনি।

বাবরের পর ক্রিজে আসেন ইমাদ ওয়াসিম। তাকে নিয়ে স্বপ্নের স্কোর গড়ার পথে এগিয়ে যান হাফিজ। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন ইমাদও। শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে দু’জনই হাঁকাতে থাকেন একের পর এক চার-ছক্কা। শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যাটিং নৈপুণ্যে ৪ উইকেটেই ৩৩৮ রান তোলে পাকিস্তান। হাফিজ ৫৭ ও ইমাদ ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ভারতের হয়ে ভুবনেশ্বর কুমার, হার্দিক পান্ডে ও কেদার জাদভ নেন ১টি করে উইকেট।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.