অরণ্যে সুন্দরী কাপ্তাই

0

সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি::রাঙামাটির জেলার অন্যতম সুন্দর স্থান কাপ্তাই। রাঙামাটি সবচে কাছের উপজেলা এটি। এছাড়া কাপ্তাই চট্টগ্রাম শহরেরও খুব কাছেই। ছোট্ট একটা উপজেলা শহর। চট্টগ্রাম শহর থেকে কাপ্তাই সড়কের এক পাশে উঁচু-নিচু পাহাড় আর অন্যপাশে রয়েছে ঘন গাছ। চন্দ্রঘোনা-লিচুবাগান-বরইছড়ি পেরিয়ে উঁচু-নিচু পাহাড়ি রাস্তা আর ঘন গাছে ভর্তি ছোট ছোট পাহাড়, ডানপাশে খর কর্ণফুলী নদী। কখনও কখনও রাস্তায় হয়ে গেছে কর্ণফুলী নদীর তীর।

রাস্তার দুই পাশে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান। এখানে আছে হরিণ, হাতি, বানর, বনবিড়ালসহ হরেক রকম বন্য প্রাণী। আছে নানা প্রজাতির পাখি। বনবিভাগ এখানে গড়ে তুলেছে পিকনিক স্পট ও রেস্টহাউস।

জাতীয় উদ্যানের বাইরে রিভারভিউ পার্ক, গিরিনন্দিনী পিকনিক স্পট এবং প্রশান্তি পিকনিক ও অবসর বিনোদন স্পট। অবকাশের জন্য এই স্পটে আছে দুটি কটেজ। তবে রাতে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই।

কাপ্তাইয়ে রয়েছে নৌবাহিনী এবং বনশিল্প উন্নয়ন সংস্থার পিকনিক স্পট। প্যানোরামা ঝুম রেস্তোরাঁ গড়ে তুলেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এখানে গাছের ওপর তৈরি করা পাখির ঘর ‘টুনি’ দেখে শিশুরা আনন্দ পাবে। অবকাশের জন্য কয়েকটি কটেজও রয়েছে এখানে।

কাপ্তাই গেলে অবশ্যই দেখবেন: হ্রদ থেকে কর্ণফুলী নদীতে মালামাল পার করার ছোট্ট ‘রোপওয়ে’র দেখা মিলে কাপ্তাইয়ে। বাঁধ দেওয়ার ফলে হ্রদ থেকে কোনো নৌ-যানই নদীতে যেতে পারে না। তাই রাস্তার ওপর দিয়ে রোপওয়ের মতো ক্রেনে হ্রদ থেকে ছোট ছোট নৌকা, বাঁশের ভেলা বা কাঠের গুঁড়ি নদীতে নেওয়া হয়। কাপ্তাইয়ের পাশেই চিৎমরমে আছে বৌদ্ধমন্দির। সহজেই যে কোনো কারো নজর কাড়বে এটি।

রাতে থাকার জন্য ভালো কোনো হোটেল নেই এখানে। থাকতে চাইলে বনবিভাগ, বনশিল্প উন্নয়ন সংস্থা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী পেপার মিল বা স্থানীয় প্রশাসনের রেস্টহাউসগুলোর কোনো একটিতে থাকতে পারেন। তবে এর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে রাখুন।

কাপ্তাইয়ে রাত না কাটিয়ে জেলা শহর রাঙামাটিতেও চলে যেতে পারেন। হ্রদের পাড় ঘেঁষে তৈরি করা সড়কটি সত্যিই নয়নাভিরাম। এই পথে কাপ্তাই থেকে রাঙামাটি যেতে মাত্র এক ঘণ্টা সময় লাগে। রাস্তার পাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে এতোটাই ব্যস্ত রাখবে যে, কখন এই দূরত্ব অতিক্রম করলেন বুঝতেই পারবেন না।

বিশাল কাপ্তাই হ্রদের টলটলে পানি থেকে মাঝে মধ্যেই ভেসে ওঠা ছোট ছোট দ্বীপ-পাহাড় দেখতে দেখতেও রাঙামাটি যেতে পারেন। কাপ্তাই জেটিঘাট থেকে লঞ্চ বা ট্রলারে রাঙামাটি যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। পানির সাথে খেলা করতে করতে মুহূর্তেই মিলিয়ে যাবে এই দুই ঘণ্টা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.