কক্সবাজার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : মানুষ পানিবন্দী

0

শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর প্রতিনিধি : কয়েক দিনের ভারী-টানা বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ী ঢল ও জোয়ারের পানিতে কক্সবাজার ঈদগাঁও’সহ সদরের বিস্তুীর্ণ এলাকা কোমর পানিতে নিমজ্জিত। বন্যাকবলিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে হাজার হাজার নারী-পুরুষ। ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বেড়ীবাঁধ। সরেজমিনে দেখা যায়, কোমরসমান পানিতে তলিয়ে গেছে চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন। এছাড়া পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ইউনিয়নের পুকুরিয়াঘোনা, নতুন মহাল, খামার পাড়া, দক্ষিণ পাড়া, মাতবরপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকা।

পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলী, চরপাড়া, রাজঘাট, গাইট্যা খালী এলাকায় হাজার খানেক পরিবার জোয়ারের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। পুরনো বেড়ীবাঁধটি সংস্কার না হওয়ায় নিয়মিত জোয়ারের পানির চেয়ে ৩/৪ ফুট পানি উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কের উপর দিয়ে ঈদগাঁও নদীর ঢলের পানি উপচে পড়ছে। পাহাড়ী ঢলে ঈদগাঁও নদীর প্রবল স্রোত সরাসরি আঘাত হানতে পারে ওই সড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে। যেকোন মুহুর্তে আরো বড় ধরণের ভাঙ্গনঝূঁকির আশংকা করছে এলাকাবাসী।

ঈদগাঁও বাজার রক্ষাবাধেঁর উপর দিয়ে প্রবল বেগে ঢলের পানি উপচে পড়ে ঈদগাঁও বাজারের উত্তর পাশের্^ বাঁশঘাটা ও তৎপার্শ্বস্থ এলাকাসমুহ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বাঁশঘাটা ঝুলন্ত ব্রীজটি। পারাপার বন্ধ রয়েছে বলে জানান কয়েকজন পথচারী। ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক গোমাতলী এলাকার বাসিন্দা মুহিদুল্লাহ মহিদ বলেন, গোমাতলী কে দুর্গত এলাকা ঘোষনা করে- সেখানকার পানি বন্দি মানুষের জন্য দ্রুত ত্রান সামগ্রী পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসক- উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি। দীর্ঘ ১ বছর ধরে সাগরের জোয়ার ভাটার সাথে পানিবন্দি হয়ে অমানবিক জীবন যাপন করছে পোকখালী ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ।গত বছর রোয়ানোর তান্ডবে গোমাতলীর বেড়িবাধ ভেঙ্গে সাগরের জোয়ার ভাঠায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করে আসছে এখানকার অসহায় মানুষগুলো। এছাড়া চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ৭/৮ শত পরিবার পানিবন্দী রয়েছে বলে জানা গেছে।

চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন ২৭নং স্লুইচগেইটটি স্থানীয় প্রভাবশালী কামাল উদ্দীন নামের এক ব্যক্তি জোর পূর্বক বন্ধ করে রাখায় উজান থেকে নেমে আসা পানি বের হতে না পারায় এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে একাধিকবার তাগাদা দিলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

চৌফলদন্ডী পুকুরিয়া ঘোনার বাসিন্দা জয়নাল উদ্দীন জানান, ঈদগাঁও নদীর ঢলের পানি জলনাশী দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে চৌফলদন্ডীর নতুন মহাল, ঘোনাপাড়া, খামারপাড়া পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার ওই অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের কার্যকরী ব্যবস্থা না থাকায় চৌফলদন্ডী ও পোকখালীর চিংড়িঘের, আবাদি জমি, ঘরবাড়ি, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ হাজার হাজার নারী-পুরুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.