সৈয়দ শিবলী ছাদেক কফিল::চট্টগ্রামে গণসাক্ষরতা অভিযান ও ব্র্যাকের যৌথ উদ্যোগে `এডুকেশন ওয়াচ ২০১৬’ প্রতিবেদন বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতহয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধূরী এবং প্রধান অতিথির ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ও চট্টগ্রাম বিভাগের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক দীপক চক্রবর্তী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপসচিব) উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসাবে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মাহবুবুর রহমান বিল্লাহ, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুারো চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোঃ জুলফিকার আমিন, চট্টগ্রাম মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার বি এম শরিফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার মো. নজরুল ইসলাম।
উক্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের সব বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে চট্টগ্রামের গ্রামীণ সাক্ষরতার হার। এডুকেশন ওয়াচ-২০১৬ এর জরিপের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামের গ্রামীণ জনপদে সাক্ষরতার হার ৪৫ দশমিক ৪ ভাগ। অন্যদিকে সাক্ষরতার হারের দিক থেকে এগিয়ে আছে বরিশাল বিভাগের গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা। এ বিভাগের গ্রামীণ সাক্ষরতার হার ৫৭ দশমিক ৩ ভাগ। মহানগরগুলোতে সাক্ষরতার হার ৬৩ দশমিক ৩ ও পৌরসভা অঞ্চলে সাক্ষরতার হার ৫৬ দশমিক ৫ ভাগ।
১১ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং পঠন সামগ্রী ব্যবহারের মাত্রা নিয়ে জরিপ করে সংস্থাটি। জরিপে জানা যায়, এই বয়সীদের ৯২ দশমিক ১ ভাগই মুঠোফোন ব্যবহার করে। এরপরের অবস্থানে আছে টেলিভিশন। ৭১ দশমিক ১ ভাগ অংশ টেলিভিশন দেখে। এদের মধ্যে সর্বনিম্ন ৬ দশমিক ৭ ভাগ কম্পিউটার ব্যবহার করে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ১৬ দশমিক ৬ ভাগ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগের স্থানীয় সরকার পরিচালক দীপক চক্রবর্তী বলেন, সাক্ষরতার হারে চট্টগ্রাম বিভাগ পিছিয়ে আছে। এটি চিন্তার বিষয়। এ বিভাগে পার্বত্যাঞ্চল ও দ্বীপাঞ্চল রয়েছে। এগুলো অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। এখানে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার অনেক বেশি। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার কারণ খুঁজে বের করতে হবে এবং এ উত্তরণের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, সংবিধানে একটি ধারার শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখানে মোটা দাগে তিন ধারার শিক্ষা (বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম, মাদ্রাসা) বিদ্যমান। আবার এখানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোনো রকম জবাবদিহি ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। তাদের আয়ের উৎস কী তা স্পষ্ট নয়। বিশ্বের কোথাও এভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয় না। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট আইনি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এ জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকে একমত হতে হবে।
সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার। এডুকেশন ওয়াচের এ সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য-উপাত্ব ও নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন সুপারিশ উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক কে এম এনামুল হক। মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আনোয়ারা আনাম, সনাক চট্টগ্রামের সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, শিক্ষাবিদ গাজী গোলাম মাওলা, মানবাধিকার কর্মী নূরজাহান খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহাব উদ্দিন নিপু, অপরাজেয় বাংলাদেশ এর কো-অর্ডিনেটর মাহবুবুল আলম সহ আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিব।