চন্দনাইশে বোরো চাষে ইঁদুরের উপদ্রব ধান কেটে সাবাড়

0

নিজস্ব সংবাদদাতা,চন্দনাইশ : চন্দনাইশ উপজেলার বোরে ধান ক্ষেতে ইঁদুরের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনে-রাতে ইঁদুরের দল ধানের পাতা কেটে নষ্ট করছে ফসলি জমির ধান।  সরজমিনে, উপজেলার বরকল, হারলা, চাকমার বিল, আড়ালি বিল, শুচিয়া বিলসহ বিভিন্ন বিলে এক জাতীয় বড় বড় ইঁদুর সামান্য পানি থাকা অবস্থায়ও লাফিয়ে লাফিয়ে বোরো ধানের গাছ কেটে বিনষ্ট করছে। ইঁদুরগুলো দেখতে সাইজে অনেক বড়। দিনে এবং রাতে এ সকল ইঁদুর ধান কেটে সাবাড় করছে প্রতিনিয়ত।

সাধারণত লোকজন দেখলে ইঁদুরগুলো দৌড়ে নিরাপদ আশ্রয় নিলেও কিছুক্ষণ পর মানুষের সমাগম কমে গেলে কৃষকদের রোপিত ধানের চারা কেটে বিনষ্ট করছে। এ সকল ইঁদুর নিধনে কৃষকেরা কোন রকম পদক্ষেপও নিতে পারছে না বলে জানান। ফলে কৃষকদের রোপিত বোরো ধানগুলো ফসল দেয়ার পূর্ব মুহুর্তে এ ধরনের ইঁদুর ধান কাটার কারণে নষ্ট হচ্ছে শত শত একর জমির রোপিত ধান। এ ব্যাপারে ইঁদুর মারার কোন রকম ব্যবস্থা নিতে না পেরে কৃষকেরা অসহায় এবং দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ইঁদুর নিধনে কৃষকেরা সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করেছেন।

কৃষকদের মতে অন্যান্য সময় এ ধরনের ইঁদুর উপদ্রব ছিল না। হঠাৎ করে ফসলি জমিতে পানি থাকা অবস্থায় ইঁদুরের আক্রমণে কৃষকেরা হতবাক। অনেকেই এ সকল ইঁদুর নিধনে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, সেটিও অনেকে জানেন না বলে জানান। ফসলি জমিতে এ ধরনের ইঁদুর অব্যাহত থাকলে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না। ফলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না।

ইঁদুরের উপদ্রব বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান হোসেন মজমুদার বলেছেন, কৃষকদেরকে সমন্বিত পদ্ধতিতে ইঁদুর নিধন করতে হবে। একেক সময় একেক পদ্ধতি ব্যবহার করে ইঁদুর নিধন করতে হবে। কারণ ইঁদুর চালাক প্রাণী। বিষ দিয়েছে জানতে পারলে এ খাদ্য সহজে সে সে খায় না। সে জন্য প্রথমে কোন কোন সময় ইঁদুর মারার যন্ত্র বা ফাঁদ বসাতে হবে, কোন সময় গমের মধ্যে, শুটকির মধ্যে, বিস্কুটসহ বিভিন্ন জাতীয় খাবারে বিষ মিশিয়ে ইঁদুর নিধন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এ ইঁদুরের উপদ্রব আগেও ছিল।

তবে যে সব এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল বা নজরদারী থাকে, সেখানে ইঁদুরের উপদ্রব থাকত। বর্তমানে কিছু কিছু ধানি জমিতে সাধারণত কৃষকের চলাচল কম হওয়ার কারণে ইঁদুরের উপদ্রব নজরে পড়ছে। তিনি বলেন, বড় জাতীয় কিছু ইঁদুর পানিতে সাঁতার কেটে ভাসমান অবস্থায় তাদের খাবার আহরণ করে, ধানের গাছ কাটে। এ সকল ইঁদুর মারার জন্য ভাসমান বস্তুর মধ্যে বিস্কুট, গম ও শুটকিতে ইঁদুরের বিশ মিশিয়ে ইঁদুর নিধন প্রক্রিয়া করতে কৃষকদের পরামর্শ দেন।

এ ব্যাপারে প্রয়োজনে তিনি কৃষকদেরকে তাদের মাঠকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে ইঁদুর নিধনের পদ্ধতিগুলো জেনে নেয়ার পরামর্শ দেন। সে সাথে কৃষকদের রোপিত ধানের জমির আশেপাশে চলাফেরার পাশাপাাশি ধানি জমি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন তিনি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করছেন ইঁদুরের উপদ্রবের মাধ্যমে ধান কাটার কারণে লক্ষ্যমাত্রায় তেমন কোন প্রভাব পড়বে না বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.