চন্দনাইশে মুজাফফর হত্যা মামলার চার্জশীটের বিরুদ্ধে নারাজি

0

নিজস্ব সংবাদদাতা,চন্দনাইশ : উপজেলার পশ্চিম এলাহাবাদে জায়গা সম্পত্তির বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সালে কোরবানী ঈদের আগের রাতে সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়ে ৪ দিন পরে চমেক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে মুজাফফর আহমদ। সে মামলায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ৯ মার্চ ৪২ জনকে আসামী চার্জশীট দাখিল করে পিবিআইএ’র পুলিশ পরিদর্শক (টিএইচবি) শ্যামল কান্তি দাশ। বৃহস্পতিবার(৩০ মার্চ) চার্জশীট গ্রহণের শুনানীর দিনে বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে মামলাটি পুনঃ তদন্তের জন্য সিআইডিতে প্রেরণ করেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে।

৩০মার্চ আদালতে মামলার শুনানীকালে বাদীর নারাজি দাখিল করার প্রেক্ষিতে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদীনি মনোয়ারা বেগমের কান্নাজড়িত কন্ঠে বক্তব্য শুনেন। এ সময় তিনি তার দেবরকে কিভাবে সন্ত্রাসীরা রাত্রীবেলা গুলি করে হত্যা করে ঘটনার বিবরণ দিয়ে চার্জশীটের বিরুদ্ধে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা তার দেয়া বক্তব্য এবং তার সাক্ষীদের বক্তব্য যথাযথভাবে উপস্থাপন করেন নি। তাছাড়া তার দাখিলীয় ৪০ জনের আসামী থেকে ১৮ জনের নাম সংযুক্ত করলেও ২২ জনের নাম বাদ দেয়ায় তিনি এ নারাজি দাখিল করেন।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সাবেক পিপি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. কফিল উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক জেলা পিপি এড. আবুল হাশেম, এড. আবদুল হান্নান। আসামীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি যথাক্রমে এড. খোরশেদুল আলম, এড. মুজিবুল হক ও এড. রফিক আহমদ। আদালত উভয়পক্ষের শুনানীয়ান্তে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআই-চট্টগ্রামের এ এস পি সমপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা দিয়ে তদন্তে জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা যায়।

মামলার রেকর্ড সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর রাতে পশ্চিম এলাহাবাদ এলাকায় জায়গা সম্পত্তির বিরোধকে কেন্দ্র করে রাত্রীবেলা একদল সন্ত্রাসী মুজাফফরের নতুন বাড়ীতে হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাদের লুটপাট ও ভাংচুর করে ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, ১০ লক্ষ নগদ টাকা, দেড় লক্ষ টাকার মূল্যবান কাপড়-চোপড়, ১০ লক্ষ টাকার ভাংচুর করে ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ এনে থানায় মামলা দায়ের করেন মুজাফ্ফরের বড় ভাই আকতারের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। অভিযোগে আরও বলা হয়, সন্ত্রাসীরা ২টি ট্রাক, ১টি হাইচ, ১টি নোহা, ৪/৫টি মোটর সাইকেল নিয়ে এসে তাদের উপর হামলা চালায়।

এ সময় সন্ত্রাসীদের গুলিতে মুজাফ্ফর (৪০) গুলিবিদ্ধ হলে, প্রথমে বিজিসি ট্রাস্ট হাসপাতাল, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে ৯ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৩ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। বাদীনি ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর ৪০ জনের নাম দিয়ে আদালতে একটি বিশেষ দরখাস্ত দেন। সে মামলায় প্রথমে চন্দনাইশ থানার এস আই স্বপন চন্দ্র দাশ প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেন। পরবর্তীতে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরিত হওয়ার পর, ২০১৫ সালের ৫ মার্চ চট্টগ্রাম সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক মো. হোসেন খান তদন্তভার গ্রহণ করেন।

তিনি দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি সিআইডি হেড কোয়ার্টারে প্রেরণ করেন। একই সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ও পুলিশ পরিদর্শক (সিআইডি), চট্টগ্রামের শ্যামল কান্তি দাশ তদন্তভার গ্রহণ করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ৯ মার্চ ৪২ জনকে আসামী করে, ৫৬ জনের সাক্ষী করে চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীটে পশ্চিম এলাহাবাদের দুলা মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন, মো. শাহজাহান, মো. কামাল উদ্দিন, মো. গোলাম কিবরিয়া, মো. গোলাম মোস্তফা, মো. মাসুদ, পুত্রবধূ হুরাইন জান্নাত প্রিয়া, রুবি আক্তার, তাহমিনা আক্তার সহ ৪২ জনকে চার্জশীটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অন্যান্য আসামীদের মধ্যে চন্দনাইশ সদর, চৌধুরী পাড়া, দোহাজারী, মোহাম্মদপুর, রশিদাবাদ, মুরাদাবাদ, পশ্চিম এলাহাবাদ, পার্শ্ববর্তী পটিয়া খরনা, নগরপাড়ার একজন জনপ্রতিনিধি আসামী রয়েছে বলে জানা যায়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.