চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত

0

নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দনাইশ: চন্দনাইশ সদরস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি অনিয়মিত চিকিৎসকদের উপস্থিতির কারণে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ১০ জন কনসাল্টন্টের মধ্যে আছে মাত্র ৩ জন। এদের মধ্যে ২ জন আসে সাপ্তাহে ২/৩ দিন।

বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে জনগণের দৌড় গোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দিতে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ২০১৩ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করেছেন। কিন্তু চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি চিকিৎসকদের অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে সেবা নিতে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায় চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১০ জন কনসাল্টন্ট এবং ৪ জন মেডিকেল অফিসারের স্থলে কনসাল্টন্ট এনেস্তেশিয়া, মেডিকেল অফিসার প্যাথলোজি, মেডিকেল অফিসার সহকারী সার্জন, মেডিকেল অফিসার এনেস্তেশিয়া পদ গুলি দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে। তাছাড়া জুনিয়ার কনসাল্টন্ট (শিশু) ডাঃ মো. শাহ আলম পেষনে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন । একই ভাবে ৭ আগষ্ট ’১৪ সাল থেকে ডাঃ মো. শেখ সাদী পেষনে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছেন। মেডিকেল অফিসার ডাঃ আতাউর রহমান বিগত ৩ বছর ধরে রেলওয়ে হাসপাতালে পেষনে কর্মরত আছেন।

এদিকে চন্দনাইশে কর্মরত কনসাল্টন্ট (গাইনী) ডাঃ তাজিন সুলতানা, ডাঃ প্রতীক চৌধুরী সপ্তাহে ২/৩ দিন অফিস করেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এব্যাপারে ডাঃ তাজিন সুলতানা বলেছেন মাত্র তিন জন কনসাল্টন্ট থাকায় তাদের উপর প্রেসার রয়েছে। তিনি বলেন নিয়মিত রোগী দেখলেও এন্ট্রি দেননা। শুধুমাত্র রেফার রোগীদের এন্ট্রি দেয়া হয়। ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যাপারে তিনি বলেন তারাহুরার মধ্যে হয়তো দেয়া হয়নি। গতকাল ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি হাসপাতালে অনুপস্থিতি ছিলেন। অপরদিকে ডাঃ প্রতীক চৌধুরী অনিয়মিত আসার কথা অস্বীকার করে বলেছেন চিকিৎসক স্বল্পতার কারণে কোরবানীর বন্ধে রাত্রীকালীন দায়িত্ব্রও পালন করতে হয়েছে। ভূল বশতঃ ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার নাও হতে পারে বলে তিনি বলেন।

৪ লক্ষ টাকা মূল্যের ডেন্টাল চেয়ারটি ২০১৪ সালে আসার পর থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অচল রয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে এক্সরে মেশিনটি অচল হয়ে পড়ে আছে। ৭ লক্ষ টাকা মূল্যেল ১৪ সালে আসা আল্টাসনোগ্রাফি মেশিনটি সনোনিষ্ট মেডিকেল অফিসার পদায়নের অভাবে ব্যবহার না হয়ে নষ্ট অবস্থায় বক্স বন্ধী হয়ে পড়ে আছে।

চন্দনাইশে ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের মধ্যে বরকলের দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রসেনজিৎ ঘোষ পেষনে চমেক হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। সাতবাড়ীয়া ডাঃ মিনহাজুল হক দুই মাসের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে সংযুক্ত রয়েছেন। দোহাজারীর কর্তব্যরত ডাঃ সানজিদা চৌধুরী ১ বছরের অধিক কাল ধরে লন্ডনে উচ্চ ডিগ্রী অর্জনের জন্য আছেন। ধোপাছড়ি ও কাঞ্চনাবাদে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসকের পদগুলি খালি রয়েছে। বৈলতলী ও মোহাম্মদপুর কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসকের পদ ২টি খালি রয়েছে। তাছাড়া হাশিমপুর কেন্দ্রের কর্তব্যরত ডাঃ রশ্মি বড়ুয়া চলতি বছর ২০ মে থেকে অনুমোদিত অনুপস্থিত রয়েছেন। জোয়ারা হারলা কেন্দ্রের কর্তব্যরত ডাঃ নুসরাত জাহান গত ১৩ আগষ্ট থেকে মাতৃজনিত ৬ মাসের ছুটিতে রয়েছেন। বরমা কেন্দ্রের ডাঃ বোরহান উদ্দীন পেষনে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছেন।

তাছাড়া চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভান্ডার রক্ষক, র্ফামাসিষ্ট, ল্যাব টেকনোলজিষ্ট, ওটি বয়, প্যাথোলোজিষ্ট, ফিজিওথেরাপী, রেডিওগ্রাফার, আয়া, ওয়ার্ড বয় ২জন, স্বাস্থ্য সহকারী ২৫টি পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে। তাছাড়া দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭ জন চিকিৎসকের স্থলে গাইনী চিকিৎসকের পদটি খালি রয়েছে। মেডিকেল অফিসার (ডেন্টাল সার্জন) ডাঃ লায়লা ইয়াছমিন পেষনে ৫ বছর ধরে চমেক হাসপাতালে রয়েছে। এদিকে অফিস সহায়ক সুইপার, ভান্ডার রক্ষক, ফার্মাসিষ্ট, ল্যাব টেকনোলজিষ্টের পদগুলি দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে।

এদিকে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর কাজেম আলী, সাবসেন্টারে জোয়ারার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অফিস সহায়ক হাবিবুর রহমান ও দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয় ইউছুপ, ভান্ডার রক্ষক মো. নাছির দীর্ঘদিন ধরে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত হয়ে কর্ম স্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মসিষ্টের ৫টি পদই খালি রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.