ঝুঁকির পাহাড়ে আবারও বসতি!

0

সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি::গত জুন মাসে রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধস সংগঠিত হয়। এতে করে সেনাবাহিনীর ৪ কর্মকর্তা সহ ১২০ জন মারা যায় এবং একশ’রও অধিক মানুষ আহত হয়। বিধ্বস্ত হয় হাজারো বসতবাড়ি। আশ্রয়হীন মানুষেরা দীর্ঘদিন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার পরে গত ৭ সেপ্টম্বর আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দিলে মানুষগুলো ফিরে যায় পুরানো সেই পাহাড়ে। ঝুঁকি আছে জেনেও বসতবাড়ি নির্মাণ করছে পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে।

শুক্রবার বিকালে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় অনেকেই আবারও সেই ঝুঁকির পাহাড়ে বসত বাড়ি তৈরি করছে কিংবা অনেকে বসত বাড়ি নির্মাণ করে আবারো বসবাস করা শুরু করে দিয়েছে।

রাঙামাটি শহরের শিমুলতলি এলাকার বাসিন্ধা নিলুফা আক্তার বলেন, পাহাড় ধসে আমার বাড়ি-ঘর সব কিছু বিধ্বস্ত হয়ে যায়। আমরা দীর্ঘ দিন আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলাম। কিন্তু প্রায় তিন মাস আমাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার পরে নগত ছয় হাজার টাকা, দুই বার টিন এবং এক বস্তা চাউল দিয়ে বাহির করে দেখ। এসমস্ত জিনিস দিয়ে কি করা যায় বলেন? প্রথমে বলেছিলো আমাদেরকে অন্য কোন নিরাপদ স্থানে পূর্ণবাসন করবে কিন্তু এখন এসব দিয়ে বলছে এইবলে সরকারি পূর্ণবাসন।

তিনি ক্ষোভ জানিয়ে আরো বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন কষ্ট করে আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলাম, সরকার আমাদেরকে প্রতিনিয়ত দেখাশুনা করেছে। কিন্তু শেষে এসে এই কেমন বিচার করলো? যে সহায়তা দিয়েছে এদিয়ে তো কোন ঘরই তৈরি করা যাবে না। কোন একটা এনজিও থেকে লোণ নিয়ে ঘর তৈরি করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো বৃষ্টি হলে ভয় লাগে, তবুও কি করবো? বৃষ্টি হলে স্বামী, সন্তান সবাই বসে বসে আল্লারে ডাকি।

একই স্থানে বসবাস করা আনোয়ারা বেগম বলেন, পাঁচ সন্তান আর অসুস্থ স্বামী নিয়ে আমি দীর্ঘ দিন আশ্রয় কেন্দ্রে ছিলাম। প্রশাসন প্রথমে বলেছে আমাদেরকে এই ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে আর বসবাস করতে দেওয়া হবে না, সবাইকে পূর্ণবাসন করা হবে। কিন্তু পরে দেখা গিয়েছে টাকা, টিন, চাউল দিয়ে আমাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্র ছেড়ে দিতে বলেছে। এখন আমরা কোথায় যাবো। তাই আগের স্থানেই এসে উঠেছি। আমাদের করার কিছুই নেই।একে গরিব মানুষ, তার উপরে ভূমি ধসের কারণে যা সম্ভল ছিলো সব হারিয়েছি এখন আমাদের যাওয়ার কোন পথ নেই বলেই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও আগের জায়গায় বসবাস করছি বলে গভির হতাশা কন্ঠ নিয়ে বলেন এ মহিলা।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.