সিটিনিউজ ডেস্ক:: কারখানায় নয়, থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি হলো আস্ত একটি মোটরসাইকেল! হালকা কাঠামো ও ইলেকট্রিক ইঞ্জিনের কারণে বেশ চটপটে ও পরিবেশবান্ধব যানটি। জার্মানির একটি সংস্থা এমন এক যান তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছে।
‘লাইট রাইডার’ নামের এই মোটরসাইকেলটির ওজন মাত্র ৩৫ কেজি, অথচ ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলে। পুরোটাই থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি, ইলেকট্রিক ইঞ্জিনে চলতে পারা এই মোটরসাইকেল চালক ব্যার্নহার্ড গ্রুবার হাতেনাতে পরীক্ষা করে বলেন, ‘সত্যি অসাধারণ! হালকা ওজনের কারণে দারুণ মজা লাগে চালাতে।’
এয়ারবাস-এর সহযোগী কোম্পানি এপি ওয়ার্কসের কর্মীরা এই যান তৈরি করেছেন। প্রথমে খেলাচ্ছলেই এই আইডিয়া কার্যকর করা হয়েছিল। এর উদ্ভাবক নিলস গ্রাফেন পেশায় এভিয়েশন ইঞ্জনিয়ার। তিনি বলেন, ‘বড়দিনের পার্টির সময় খেলাচ্ছলে এক সহকর্মী ও আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম, ই-বাইক নিয়ে কিছু করা যায় কিনা। সংস্থার প্রধান কথাটা লুফে নিয়ে একটা প্রকল্প শুরু করে দিলেন, তার ফল এই লাইট রাইডার।’
কম্পিউটারেই এই যান সৃষ্টি করা হয়েছে। চলার সময় মোটরবাইকের উপর কোন কোন চাপ পড়ে, তার ভিত্তিতে এক অ্যালগোরিদম লাইট রাইডারের মাপজোক স্থির করেছে। নিলস গ্রাফেন বলেন, ‘’ভেবে দেখলাম, মোটরসাইকেলের মধ্যে কোথায় কী থাকে, সেটা কত বড় হয়, হুইলবেস কেমন, অথবা মোটরসাইকেল চলার সময় কী ঘটে – এ সবের ভিত্তিতে কম্পিউটার এই জ্যামিতি সৃষ্টি করেছে। যেসব অংশের কোনো কাজ নেই, সে সব বাদ পড়েছে।’
থ্রিডি প্রিন্টারে লাইট রাইডারের হালকা কাঠামো প্রিন্ট করে এভিয়েশন প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও এর প্রয়োগের সম্ভাবনা দেখছেন এভিয়েশন ইঞ্জনিয়ার নিলস গ্রাফেন। তিনি বলেন, থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে উৎপাদন করতে পারলে অংশগুলো অনেক হালকা হতে পারে। এতে গ্রাহকদের অনেক কম অর্থ গুনতে হবে।
এই মোটরসাইকেলের ডিজাইনও বেশ সমাদর পাচ্ছে, বিশেষ করে সংস্থার পুরুষকর্মীরা খুবই উৎসাহী। হার্লি ডেভিডসন বলেন, ‘কম দূরত্বের জন্য এমন মোটরসাইকেল দারুণ হতে পারে। চট করে অফিস যেতে হলে এর জুড়ি মেলা ভার। তার ওপর এত কম শব্দ!’
থ্রিডি প্রিন্টারে তৈরি এই মোটরসাইকেলের মূল্য ৫০,০০০ ইউরো। এর মধ্যে ৩০টি অর্ডার এসে গেছে। রাজপথে নামাতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সূত্র : ডয়চে ভেলে