দুদিনের মুষলধারে বৃষ্টিতে চকরিয়ার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত

0

বশির আল মামুন, চকরিয়া: টানা দুদিনের মুষলধারে বৃষ্টিতে চকরিয়া উপজেলার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় অনেক এলাকায় ঘর-বাড়িতে জোয়ারের পানি ও মাতামুহুরী নদীর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি ঢুকে পড়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গতকাল সারাদিন মুষলধারে বৃষ্টি ও বাতাসের তিব্রতায় শতশত গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। কয়েকটি স্থানে সড়কের উপর ডালপালা ভেঙ্গে পড়ায় সহজেই যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে অন্তত ১০টি ইউনিয়নে বৃষ্টির পানি ও ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এরমেধ্যে বদরখালী, কোনাখালী, পশ্চিম বড়ভেওলা, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, চিরিঙ্গা, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, কাকারা ও সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের প্রায় এলাকা ঢলের পানিতে ঢুবে রয়েছে। প্রায় ৫শতাধিক ঘর-বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
আজ সোমবার সারাদিন মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত দুদিনে এসব এলাকার শ্রমজীবি মানুষগুলো কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ঠিকমতো যাতায়ত করতে পারছে না। পানি বৃদ্ধি পেয়ে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। অতি বর্ষণের ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক আভ্যন্তরিণ সড়ক ভেঙ্গে গেছে।

অনেক স্থানে পাহাড়ের মাটি ধসে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে বেতুয়াবাজার সড়ক, বহদ্দারকাটা সড়ক, মানিকপুর সড়ক, হারবাং, বরতইলীতে পাহাড় ধসে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার বিকাল নাগাদ দেখা গেছে মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। নদীর দু’পাড়ে বসবাসরত মানুষকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।

চকরিয়া পৌরশহরে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় অতিবর্ষণের পানি সহজেই নিষ্কাশন হতে না পেরে পৌরসভার হালকাকারা, কাজীর পাড়া, চরপাড়া, বিমানবন্দরপাড়া, ফুলতলী, করাইয়াঘোনা, নামার চিরিঙ্গা, খোয়াজনগর এলাকায় জলবদ্ধতা হয়ে মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এদিকে মোরার ক্ষত কেটে উঠতে না উঠতে আবারও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ঠ নিম্মচাপে গতকাল সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তিব্র বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়েছে চকরিয়া উপজেলার উপর দিয়ে।

বাতাসের তিব্রতায় ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় শতশত গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। ঘেরাবেড়া বাতাসের বেগে উঠে গেছে। সড়কের উপর গাছ পড়ে থাকায় অধিকাংশ এলাকায় দুদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। পৌরসভার ফুলতলীতে বিশাল আকৃতির গাছ বাতাসের তোড়ে পড়ে রয়েছে। তবে স্থানীয় মানুষের সযোগিতায় কেটে সরানো হয়েছে। ওই গাছের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ ছিলো। পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিমুল হক জানান, গত দুদিনে ভারিবর্ষণে তার ইউনিয়নে ব্যাপক এলাকা বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। দক্ষিণ সুরাজপুর এলাকায় দুই শত ঘর-বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে নতুন নতুন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করবে বলে তিনি জানান।

চকরিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাহেদুল ইসলাম জানান, অতিবর্ষণের কারণে মাতামুহুরী নদী দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বরইতলীর গোবিন্দপুর, কাকারার শাহওমরাদ এলাকায় বানের পানি ঢুকে পড়েছে। কাকারা সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেনি। এসমস্ত এলাকার তাৎক্ষণিক দূর্যোগ এড়াতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো খোলা রাখতে বলা হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.