ফের বন্যার কবলে উত্তরাঞ্চল

0

সিটিনিউজ ডেস্ক::গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রথম দফা বন্যায় প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছিল। নদী ভাঙনের শিকার হয়েছিল সাড়ে ৪ হাজার পরিবার। সেই রেষ কাটতে না কাটতে ফের প্লাবিত হতে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গের নিম্নাঞ্চলের জেলাগুলো।

শনিবার সকাল থেকে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারীতে ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি আর উজানের ঢলে শুক্রবার সকাল থেকে পানি বাড়তে থাকে। এতে তিস্তার আশপাশের এলাকা ও নীলফামারী, লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

তিস্তার পাশাপাশি বুড়ি তিস্তা, কুমলাই, দেওনাই, চুড়ালকাটা ও নাউতরা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর দুই পাশে বসবাসরত শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এদিকে টানা তিনদিন ধরে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তাসহ প্রধান-প্রধান নদ-নদীর পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ফলে দ্বীপচর ও নদ-নদী তীরবর্তী এলাকা দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে পড়েছে। ইতোমধ্যে চর, দ্বীপচর ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অনন্ত ৫০ হাজার মানুষ। শনিবার দুপুরে ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীতে ব্রিজ পযেন্টে ৯৩ সে.মিটার, ব্রহ্মপুত্র নদে চিলমারী পয়েন্টে ৬০ সে.মিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬৬ সে.মিটার. এবং তিস্তায় ২৪ সে.মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, রাজারহাট, নাগেশ্বরী, ভূরুঙ্গামারী, উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুরের চরাঞ্চলের বেশ কিছু ঘরবাড়িতে দ্বিতীয় দফা পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

অপরদিকে পঞ্চগড়ের ৫ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার পানিবন্দি অসংখ্য পরিবার পাশের স্কুল কলেজসহ প্রতিবেশী এবং আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।

দুর্গতদের সহায়তায় এখন পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি কোনো সংস্থা না এগিয়ে আসলেও প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ জনপ্রতিনিধিরা শনিবার সকাল থেকে দুর্গত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিকেল ৫টায় জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে জরুরি বৈঠক ডেকেছে জেলা প্রশাসক।

তিন দিনের টানা বর্ষণে বিশেষ করে পৌরসভা এলাকার নিমনগর, ডিষ্টিলারিজ খালপাড়া, পুরানা ক্যাম্প, জালাসীপাড়া, রামের ডাংগা, পৌর খালপাড়া, মিঠাপুকুর, রাজনগর খালপাড়াসহ বিভিন্ন মহল্লার তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে এসব মহল্লার বিভিন্ন রাস্তা।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। বিশেষ করে মহানন্দার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর দুই পাশের অধিকাংশ গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, তিন দিন ধরে ভারি বর্ষণে বিশেষ করে দেবীগঞ্জের ১০ ইউনিয়নসহ সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ব্যপারে এলাকার সুধিজনদের নিয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গত বিভিন্ন এলাকায় শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.