বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে বন্যহাতির তাণ্ডব

0

বশির আলমামুন,চকরিয়া::বন্যহাতির তান্ডব দিনদিন বেড়েই চলছে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্র্কের সীমান্ত এলাকায়। গত ১৫দিন ধরে বন্যহাতির তান্ডবে ভেঙ্গে গেছে পার্কের বিভিন্ন স্থানে বাউন্ডারি দেওয়াল ও কাটাতার। দ্রুত সময়ে হাতির পাল তাড়ানো না গেলে পর্যটকরা পার্কের প্রতি বিমুখ হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। তাছাড়া অব্যাহত তান্ডবে পার্কের নিরাপত্তা বেষ্টনিও হুমকির মধ্যে পড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানান, গত ৭ মার্চ থেকে নিকটবর্তী পাহাড় থেকে ১৫-১৬টির একটি বন্যহাতির পাল সীমানার বাউন্ডারি দেওয়াল ও কাটাতার ভেঙ্গে খাদের‌্য সন্ধানে প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। সেখানে হাতির পালটি প্রবেশ করে চালাচ্ছে তান্ডব। দ্রুত সময়ে হাতির পালটি না তাড়ানো গেলে ঝুকির মধ্যে পড়বে পার্কের প্রাণীগুলো। সবচেয়ে হুমকির মধ্যে রয়েছে ওই স্থানে থাকা ওয়াল্ডবিস্টের বেষ্টনি, হারিণের বেষ্টনি ও সিংহের বেষ্টনি। পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্ঘুম ভাবে হাতির পাল তাড়ানোর জন্য বিভিন্নভাবে আওয়াজ ও লাইট জালিয়ে চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে। এরপরও হাতির পালটি তাড়ানো যাচ্ছে না। রাতভর হাতির দল পার্কের বাইরে ফসলের পাশাপাশি ঘর-বাড়ির ক্ষতি সাধন করছে। হাতির পালটি মাঝে মধ্যে চলে গেলেও সন্ধ্যা হলে আবার চলে আসে। পার্কের মধ্যে জঙ্গল থাকায় খাদ্যের সন্ধানে চলে আসছে হাতির পালটি। এ অবস্থায় চরম আতঙ্কে মধ্যে রাত পার করছে স্থানীয় এলাকাবাসী ও সাফারি পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। রাতভর আগুন জ্বালিয়ে ও ঢাকঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর কাজ করছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসীরা। এদিকে হাতির তান্ডবের খবরে দশানার্থীরাও কমে গেছে। বিশেষ করে নিরাপত্তার অভাবে দশার্থীরাও পার্কে আসতে চাচ্ছে না। অনেকে আতঙ্কের মধ্যে প্রবেশ করছে পার্কে।

এব্যাপারে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা একে এম মোর্শেদ বলেন, গত ১৫দিন ধরে ১০-১২টা মিলে একটি হাতির পাল সাফারি পার্কের পূর্বে সীমান্তে অবস্থান করছেন। সেখানে হাতির পালটি সামান্য বাউন্ডারী দেওয়াল ও কাটাতার ভেঙ্গে ফেলেছে।

তিনি আরও বলেন, মূলত পাহাড় জঙ্গলে প্রাকৃতিকভাবে হাতির খাদ্য থাকার কথা। কিন্তু মানুষের নির্বিচারে বন জঙ্গল নিধন এবং বন্য প্রাণীদের খাদ্য ও আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে সেখানে প্রাণীদের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই খাদ্য ও নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে বন ছেড়ে লোকালয়ে বা পার্কের জঙ্গলে ছুটে আসছে বন্যপ্রাণী গুলো। তবে পার্কের কর্মচারীরা যথা সময়ে তাড়ানোর কারণে চলে গেছে বলে তিনি জানান।

এদিকে স্থানীয়রা জানান, সাফারি পার্কের সীমানা দেওয়াল ও নালা নির্মাণের কাজ পান উজ্জল নামে এক ঠিকাদার। সম্প্রতি ওই ঠিকাদার যেনতেনভাবে দেওয়াল ও নালা নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। নালা নির্মাণের সময় মাটি গুলো না সরানোর কারণে পূনরায় ভরাট হয়ে যায়। ওই স্থান দিয়ে হাতির পালটি সহজেই এসে দেওয়াল বা কাটাতার ভাঙ্গছে। নালা থেকে মাটি সরানোর জন্য ঠিকাদার উজ্জলকে বারবার বলা হলেও তিনি কর্ণপাত করছে না বলে জানান পার্ক কর্তৃপক্ষ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.