বস্তিবাসীদের জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট করবে সরকার: গণপূর্তমন্ত্রী

0
সিটিনিউজ ডেস্ক:: গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বস্তিবাসীদের আবাসন সমস্যা নিরসনের জন্য সরকার ভাড়া ভিত্তিক ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে সাড়ে ৫শ’ ফ্ল্যাট নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে।
বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং করপোরেশনের উদ্যোগে ও রিহ্যাবের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার থেকে প্রথমবারের মতো তিন দিনের গৃহায়ন অর্থায়ন মেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
হোটেল সোনারগাঁও-এর বেলকনি হলে এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ‘গৃহায়ন অর্থায়ন মেলা-২০১৭’। হোটেল সোনারগাঁও বলরুমে এ মেলা আজ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মো. ইউনূসুর রহমান, হাউস বিল্ডিং করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ আমিন উদ্দিন আহমেদ, রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল, রিহ্যাবের সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভুঁইয়া, প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাউস বিল্ডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেবাশীষ চক্রবর্তী।
মন্ত্রী বলেন, বস্তিবাসীরা অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করেন। তাই তাদের আবাসনের জন্য আমরা ৬৫০ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাট নির্মাণ করবো। সেখানে টয়লেটসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। চার থেকে পাঁচ জন ভালোভাবে বসবাস করতে পাবেন। ভাড়া আনুমানিক প্রায় আট হাজার টাকার মধ্যে থাকবে। বস্তিবাসীরা দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিকভাবে ভাড়া পরিশোধের সুবিধা পাবেন।
তিনি আরো বলেন, সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করতে হলে শুধু নগরে বসবাসকারীদের জন্যই নয়, গোটা দেশের জন্য একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়াধীন নগর উন্নয়ন অধিদফতর দেশের ১৪টি উপজেলার বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। পায়রা সমুদ্র বন্দর ও কুয়াকাটাসহ দক্ষিণাঞ্চলের আরো সাতটি উপজেলার পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজও শুরু করা হয়েছে। সারা দেশের পরিকল্পনা ব্যতিত কৃষি জমি সুরক্ষা করা সম্ভব নয়।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার গৃহায়নকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল একটি দেশে সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করা কঠিন কাজ। আমাদের দেশের শতকরা ৭২ ভাগ লোক গ্রামে বসবাস করে এবং দেশের মোট গৃহের ৮১ ভাগ গ্রামে অবস্থিত। এই ৮১ ভাগ গৃহের মধ্যে ৮০ ভাগই নিম্নমানের কাঠামো। জনসংখ্যা বৃদ্ধিও কারণে যেখানে-সেখানে বাড়িঘর নির্মাণ করায় প্রতিদিন প্রায় ২৩৫ হেক্টর কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় স্বল্প মূল্যে ইতোমধ্যে আট হাজার অ্যাপার্টমেন্ট হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বিভিন্ন জায়গায় ১৫ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট পাইপ লাইনে রয়েছে।
তিনি বলেন, গৃহায়ন বান্ধব আমাদের সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং করপোরেশন গৃহঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঋণের সুদের হার হ্রাস, বহুমুখী ঋণ প্রোডাক্ট প্রবর্তনের মাধ্যমে অধিক সংখ্যক সেবা গ্রহীতার জন্য এ প্রতিষ্ঠানে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এমনকি সম্প্রতি আর্থিক বিভাগের সহযোগিতায় দেশের সব কয়টি জেলায় অফিস স্থাপনের উদ্যোগ চূড়ান্ত হয়েছে। এর ফলে দেশের সব শ্রেণির মানুষের জন্য গৃহ ঋণের দ্বার উন্মোচিত হবে। মেলায় ৩১টি ডেভলপার প্রতিষ্ঠান, ৭টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সর্বমোট ৪৭টি প্রতিষ্ঠান অংশহগ্রহণ করছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাসস
এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.