বাশঁখালির সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা : প্রশাসন বেকায়দায়

0

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী: বাঁশখালি থানা পুলিশের নিয়মিত অভিযান একের পব এক ইয়াবা পাচারকারি আটক হওয়ার পরও বেকায়দায় পড়েছে বাঁশখালী থানা প্রশাসন ।নানা ভাবে নানা পথে ইয়াবা আসায় বেকায়দায় পড়েছে পুলিশ ।

বিগত কয় মাসে বাঁশখালী থানা পুলিশের অভিযানে শতাধিক ব্যক্তি আটক এবং অর্ধলক্ষাধিক ইয়াবা আটক হয়েছে ।এক সময় ইয়াবা পাচারকারিগন পেকুয়া বাঁশখালি সড়ক হয়ে আসলে ও বর্তমানে তারা নানা পথে আসায় তাদের হদিস পেতে বেকায়দায় পড়তে হয় পুলিশকে ? একটি সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালী-পেকুয়া সড়কে প্রতিনিয়ত ইয়াবা ও মাদক দ্রব্য রোধে পুলিশের চৌকির মাধ্যমে চেক পোষ্ট করায় ছনুয়ার বিকল্প সড়ক হয়ে বর্তমানে বাঁশখালীর বিভিন্ন পয়েন্টে কক্সবাজার এবং টেকনাফ থেকে ইয়াবা ঢুকছে বলে একটি সূত্রে জানা যায়। বিগত কয়দিনে পুলিশ সাধনপুর থেকে ,শেখেরখিল থেকে,কালিপুর থেকে ইবায়্ সহ লোক আটক করার ফলে সাধারন জনগনের ধারনা ইয়াবা এখন বাশঁখালির সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে ।

বাঁশখালী থানাধীন বাঁশখালী-পেকুয়া আঞ্চলিক সড়কের প্রেমবাজার নামক স্থানের অভিযান চালিয়ে পরিচালনা চাঁদপুর জেলার কালীপুর এলাকার লোকমান হোসেনের পুত্র নুরুল হক এবং কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার জালিয়াপাড়া এলাকার মৃত আবুল ফয়েজের পুত্র মোঃ জমির হোসেন প্রঃ সেলিম নামে দুইজন পৃথক অভিযানে গ্রেফতার করে এবং তাদের কাছে ৫শ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। একই ভাবে গোপালগঞ্জ এলাকার কাসিয়ানী থানার চরবাগ পাড়া এলাকার মৃত বাবু শেখের পুত্র আল আমিনকে দেড় হাজার পিচ ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। অপরদিকে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার মোঃ আলীর পুত্র মোঃ শফিক উল্লাহ, লক্ষীপুর জেলার রায়পুর থানার পূর্ব সাকরদি রামগঞ্জ এলাকার ওয়াহিদুল্লাহ সেলিমের পুত্র রাহাত ও মাদক পাচারকারী ট্রাক ড্রাইভার নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মাইজপাড়া সিরাইল এলাকার আবদুল খালেকের পুত্র রবিউল ইসলামকে আটক করে এবং তাদের কাছ থেকে ৩ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে পৃথক অভিযান পরিচালনাকালে কালীপুর ইউপির গুনাগরী বাজার এলাকা হতে আনোয়ারা থানার রায়পুর ইউনিয়নের দোভাষী বাজার এলাকার মৃত গোলাম নবীর পুত্র মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রঃ রফিক এবং বাঁশখালীর সরলের মিনজিরীতলা আইম্ম্যার পাড়া এলাকার মনছুর আলীর পুত্র আবুল কালামকে আটক করে তাদের কাছ থেকে দেড় হাজার পিচ ইয়াবা উদ্ধার করে।
থানা পুলিশের নিয়মিত অভিযানের অংশ বিশেষ পেকুয়া-বাঁশখালী আঞ্চলিক সড়কের নাপোড়া দক্ষিণ পার্শ্ব এলাকায় তল্লাশী চৌকি বসায় পুলিশ। এ সময় ঢাকার উদ্দেশ্যে পেটের ভিতর করে ইয়াবা পাচারকালে আটক করে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার ‎হ্নীলা ইউনিয়নের বটতলী নয়া পাড়া এলাকার সৈয়দ আলমের পুত্র মোঃ শাহ জালাল। পরবর্তীতে তার পায়ু পথে দিয়ে ১ হাজার ২০ পিচ ইয়াবা বের করা হয়।

যার আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ ৬ হাজার টাকা হইবে। এ সময় পুলিশের জিজ্ঞাসাকালে আটক ওই যুবক জানায় ইয়াবা ট্যাবলেট গুলো তার একই উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়া এলাকার জলিল সওদাগরের ছেলে মোঃ মিছবাহ (২৮) এর নির্দেশে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সে। ইয়াবা ট্যাবলেট গুলো ঢাকায় পৌছে দিতে পারলে তাকে ১০ হাজার টাকা দিবে বলে কথাও দেয় মিছবাহ।

বাঁশখালী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোঃ আজিম নামে এক যুবককে আটক করেছে। সে ভিলেজার পাড়া এলাকার আশরাফ আলীর পুত্র। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ জলদী ভিলেজার পাড়া এলাকায় গোপনে ইয়াবা বিক্রি কার্যক্রম চলছে এ খবরের প্রেক্ষিতে বাঁশখালী থানা পুলিশের এসআই সুজন সিকদার ও এএসআই আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল গতকাল রাতে সেখানে যায়। সেখানে গিয়ে আশরাফ আলীর পুত্র মোঃ আজিম (২৮) ১শ পিচ ইয়াবাসহ আটক করে।

বাঁশখালী থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ শরিফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে এসআই মোঃ আক্তারুজ্জামানসহ একদল পুলিশ শেখেরখীল ফাড়ীর মুখ ষ্টীল ব্রীজের উত্তর পার্শ্বে বেড়ীবাধঁ নুরুল ইসলামের বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর হতে মৃত মাহমুদ হোসেনের পুত্র মোঃ গিয়াস উদ্দিন প্রঃ মনু মাঝি (৫২ আটক করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনাকালে শেখেরখীল ফাড়ীর মুখ ষ্টীল ব্রীজের উত্তর পার্শ্বে বেড়ীবাধঁ নুরুল ইসলামের বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী এলাকার মৃত মাহমুদ হোসেনের পুত্র মোঃ গিয়াস উদ্দিন প্রঃ মনু মাঝি (৫২) নামে ওই ব্যক্তিকে ৫শ পিচ ইয়াবা ও ২০ কাটুন “মারবেল” নামক বিদেশী সিগারেটসহ আটক করা হয়।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বাঁশখালী থানা পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে দেড় হাজার পিচ ইয়াবাসহ ১ যুবককে আটক করেছে। থানা পুলিশের নিয়মিত অভিযানে মোঃ আবদুল জব্বার (৩০) নামে ১৫শ পিচ ইয়াবা সহ হাতে নাতে আটক করে। আটককৃত যুবক কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানার ইনানী গ্রামের মনখালী ৯নং ওয়ার্ড এলাকার ইসহাক আহমদের পুত্র। ইয়াবাসহ যুবক আটকের বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করে থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, ধারাবাহিক অভিযানে দেড় পিচ ইয়াবাসহ আটক ওই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু পূর্বক তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মাদক, সন্ত্রাস ও দাগী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, আমি বাঁশখালী থানায় যোগদান করেছি প্রায় ১০ মাস। এ ১০ মাসে প্রায় ৬৬টি মাদকের মামলা হয়েছে। তাতে সিএনজি এবং ট্রাকও জব্দ করা হয়েছে প্রায় ১০০ মাদকের আসামী আটক করা হয়েছে, উদ্ধার করা হয়েছে অর্ধলক্ষাধিক ইয়াবা, গাজা এবং মদ। প্রতিনিয়িত থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবা এবং মাদক উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা নানান কৌশল অবলম্বন করে ইয়াবা পাচার করায় অনেক সময় তাদের ধরতে বেগ পেতে হয়। তারপরেও পুলিশী অভিযান অব্যাহত থাকবে তাদের ব্যাপারে কোন ধরনের ছাড় দেয়া হবে না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.