বিএনপি তথাকথিত জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে: কাদের
সিটিনিউজ ডেস্ক :: রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপি তথাকথিত জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে।
আজ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে ‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস-২০১৭’ উপলক্ষে ‘যানজট ও দূষণমুক্ত নগরায়ণের প্রয়োজন : গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রী প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার মানিক মিয়া এভিনিউ ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত রাখার ঘোষণা দেন। রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে সো কলড জাতীয় ঐক্য ডেকে লিপ-সার্ভিস (বক্তব্যসর্বস্ব) দিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। শুধু সরকারের সমালোচনা করলেই কি জাতীয় ঐক্য হয়ে যায়? জাতীয় ঐক্য কি তাদের মুখে নাকি মনে, আমি জানতে চাই।’
‘আমি তো ওখান থেকে এলাম পাঁচ দিন পর। এদের (বিএনপি নেতাদের) কি এ ধৈর্য আছে? তাদের কি এই মানসিকতা আছে বা চেতনা আছে? তারা যা করছে তা হলো দায়সারা। জাস্ট লোকদেখানো একটা প্রতারণা।
তাদের মুখের কথা আর মনের কথা এক নয়। এটা এত দিনে প্রমাণ হয়ে গেছে। যেখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, স্যানিটেশন দেওয়া হচ্ছে, মেডিকেশন দেওয়া হচ্ছে, খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে—বাস্তবে ওই উখিয়া, টেকনাফ গিয়ে পরিস্থিতি দেখে বিএনপি কথা বলছে না। সুতরাং আমি বলব, তারা লিপ-সার্ভিস দিচ্ছে।’
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘সারা দুনিয়া বাংলাদেশ এবং শেখ হাসিনার মানবিক ও সাহসিক ভূমিকাকে প্রশংসা করছে। বিশ্বের জনগণ বর্তমান সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ঠিক তখন বিএনপি ঢাকায় বসে বসে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে লিপ-সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে।
প্রথম প্রথম বলছিল যে তাদের ত্রাণ দিতে দেওয়া হচ্ছে না। আমি যেদিন যাই, একই প্লেনে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সাহেব ছিলেন। আমি বললাম, আমি এখানে আছি, আপনাদের কে বাধা দেয় জানাবেন। আমি আমার নাম্বার দিয়েছি। আমার সঙ্গে জাহাঙ্গীর কবির নানক ছিল। তার নাম্বার তাঁরা নিয়ে গেছেন।
পরের দিন কয়েকবার তাঁদের আমি জিজ্ঞেস করেছি, কোনো সমস্যা হচ্ছে কি-না। তাঁরা একটা ক্যাম্প করেছেন। আমি সেটার সামনে দিয়ে গিয়েছি। তাঁরা বলেছেন যে কেউ তাদের বাধা দিচ্ছে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘আসলে চার/পাঁচ লাখ লোক, তাদের ভেতরে ১০/২০ ট্রাক নিয়ে যাবে, তা তো লুট হয়েছে যাবে, যদি নিয়ম না মানেন। আপনার নিজেরও নিরাপত্তা থাকবে না। কী যে অবস্থা, তা ভাবতেও পারবেন না। ঢাকায় বসে প্রেস রিলিজ দেওয়া যায়, মায়াকান্না দেখানো যায়।’
সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বিএনপি মনের দিক থেকেও দরিদ্র। তাদের মনমানসিকতা এত দরিদ্র যে সরকার যে মেট্রিকুলাসলি অর্গানাইজ করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করে, বিশ্ব দরবারে জনমত গড়ে তুলে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং জাতিসংঘে। তিনি যে বক্তব্য রাখলেন, তাতে আমরা আশা করছি, বিশ্বের বড় দেশগুলো মিয়ানমারের এই অমানবিক টর্চারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে। আমি মনে করি, বিএনপি বক্তৃতাসর্বস্ব কথা বাদ দিয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেবে। যে নেতিবাচক পথ বেছে নিয়েছে, তা থেকে ফিরে আসবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এন ছিদ্দিক, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ মুখার্জি, নিরাপদ সড়ক চাই সংগঠনের ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, নিরাপদ সড়ক চাই, পরিবেশ আন্দোলনসহ ৪৬টি সংগঠন।
শুরুতেই জাতীয় সংগীতের পর নানা রঙের বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের। আয়োজনে পরিবেশবাদী সংগঠনের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।