মিরসরাইয়ে চালক ও পুলিশ সংঘর্ষে আহত ৪০

0

সিটিনিউজ ,মিরসরাই প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ে সিএনজি অটোরিক্সা চালকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে।

পুলিশের টোকেন বাণিজ্য এবং উপজেলার ১২ নম্বর খৈইয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালকে অপমানের প্রতিবাদের অটোরিক্সা চালকরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে।

অবরোধ সরিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ চালকদের উপর লাঠিচার্জ করলে শনিবার (১৫ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫ টায় উপজেলার বড়তাকিয়া বাজার এলাকায় ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এসময় পুলিশ ৩ রাউন্ড গুলি চালায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন ঘটনাস্থলে গিয়ে চালক ও চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালের সাথে কথা বলে সন্ধ্যা ৭ টায় মহাসড়ক থেকে অবরোধ সরিয়ে দেয়। মহাসড়কের পশ্চিম পাশ বিকাল সাড়ে ৫ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। তবে মহাসড়কের পূর্ব পার্শ্বের লেন দিয়ে যানবাহন চলাচল সচল ছিল।

পুলিশের লাঠিচার্জ ও চালকদের ইটপাটকেলে আহতরা হলেন সমকাল মিরসরাই প্রতিনিধি বিপুল দাশ, মিরসরাই থানার এএসআই জহির, কন্সষ্টেবল মেহেরাব, চালক ও পথচারীদের মধ্যে রয়েছে আবু সাঈদ, বেলাল, সৈকত, পাভেল, ফজলুল, তাজুল, মুনসুর, গিয়াস উদ্দিন, দেলোয়ার, সবুজ, নুর উদ্দিন, আরাফাত, মাহবুবুল হক, আজাদ, সাকিব, করিম, নুরন নবী, আশরাফ, সাইফুলসহ কমপক্ষে ৪০ জন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শরীফ উদ্দিন জানান, শনিবার (১৫ জুলাই) বড়তাকিয়া বাজার থেকে বিকাল সাড়ে ৩ টায় একটি অটোরিকক্সা নিয়ে খৈইয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল একটি জানাযায় যাচ্ছিলেন। এসময় চৌধুরীহাট হাইওয়ে পুলিশের এএসআই জাকির ওই অটোরিক্সাটি আটক করে। জাহেদ ইকবাল নিজের পরিচয় দিয়ে অটোরিক্সাটি ছাড়ার অনুরোধ করলে ওই পুলিশ চেয়ারম্যানকে গালিগালাজ করে অটোরিক্সা জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকী দেয়। এখবর বড়তাকিয়া বাজারের অটোরিক্সা স্ট্যান্ডে পৌঁছলে চালকরা শতশত অটোরিকসা রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবাল পুলিশের চাঁদাবাজি ও তাকে অপমানের প্রতিবাদে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত অবরোধ ঘোষনা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবরোধের খবর পেয়ে বিকাল ৫ টায় মিরসরাই থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ১০ মিনিটের মধ্যে অবরোধ তুলে নিতে সময় দেন। কিন্তু তার আগে পুলিশ চালকদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করলে চালকদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় পুলিশের উপর বড় বড় ইটের টুকরো ছুঁড়ে মারতে থাকে স্থানীয় লোকজন। একপর্যায়ে ইটের আঘাত থেকে রক্ষা পেতে ৪ জন পুলিশ ও সাংবাদিক বিপুল দাশ বাজারের একটি দোকানে আশ্রয় নিলে বৃষ্টির মতো সেখানে ইটের টুকরো ছুঁড়ে মারা হয়। এসময় চালকদের উপর পুলিশ ৩ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। কিন্তু পুলিশের গুলি শেষে হয়ে গেলে চালক ও স্থানীয়রা দোকানে ঢুকে পুলিশের উপর হামলা চালায়।

এদিকে সংঘর্ষ ও অবরোধের খবর পেয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন ঘটনাস্থলে গিয়ে চেয়ারম্যান জাহেদ ইকবালের সহযোগিতা নিয়ে চালকদের শান্ত করে। পরে চেয়ারম্যান ও অবরোধকারীদের সাথে বৈঠক করে তাদের দাবি আদায়ের আশ্বাস দিলে সন্ধ্যা ৭ টায় অবরোধ তুলে নেয়া হয়।

খৈইয়াছড়া ইউনিয়নের চেয়াম্যান জাহেদ ইকবাল জানান, এখন থেকে কোন অটোরিক্সা চালক পুলিশের কোন টোকেন নিবে না। মহাসড়কে চালকদের হয়রানি বন্ধ করা, টোকেন বানিজ্য বন্ধ করা, হাইওয়ে পুলিশের এএসআই জাকিরকে প্রত্যাহারসহ তাদের দাবি পূরণের জন্য আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে দাবি আদায় না হলে আবার সড়ক অবরোধসহ কর্মসূচী দেয়া হবে।

জোরারগঞ্জ চৌধুরীহাট হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ এসআই শফিকুল ইসলাম পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেন।মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আহমেদ সুমন জানান, চালকদের সাথে কথা বলে অবরোধ সরিয়ে দেয়া হয়েছে। পরে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলাপ আলোচনা করে বিষয়টির সমাধান করে দেয়া হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.