মিরসরাইয়ে পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কৃষিজমি ও পুকুরের মাছ

0

মিরসরাই প্রতিনিধি,সিটিনিউজ : মিরসরাইয়ে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নিমজ্জিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিতে তলিয়ে গেছে
কৃষিজমি প্রায় ৭০০ হেক্টর আমন বীজতলা। পানির স্রোতে ভেসে গেছে কয়েকশ পুকুরের মাছ। ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশকিছু গ্রামীণ সড়ক। গত বুধবার, বৃহস্পতিবারের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে উপজেলার করেরহাট, জোরারগঞ্জ, ধুম, ওচমানপুর, হিঙ্গুলী, ইছাখালী, কাটাছরা, খৈইয়াছড়া, মিঠানালা, দুর্গাপুর, ওয়াহেদপুর, হাইতকান্দি, মিরসরাই পৌরসভা, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই সদর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

শনিবার (২২ জুলাই) পানিবন্দি ওইসব এলাকা থেকে পানি সরে যায়নি। উপজেলার প্রায় অর্ধশত খাল ও ছড়া সংস্কার না করার ফলে দুয়েকদিনের ভারী বর্ষণে ডুবে যায় উপজেলার অধিকাংশ এলাকা। পানিবন্দি এলাকায় কৃষকরা আসন্ন আমন মৌসুমের জন্য বীজতলা তৈরি করলেও ঢলের পানিতে সেসব পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আউশ ধানের। পাহাড়ি এলাকাসহ নিম্নাঞ্চলের কয়েকশ’ পুকুরের মাছ ঢলের পানিতে ভেসে গেছে। নিজামপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজসহ উপজেলার কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ডুকে পড়ায় পাঠ কার্য্যক্রম বন্ধ ছিল।

খৈইয়াছড়া ইউনিয়নের মসজিদিয়া এলাকার কৃষক কাজল বলেন, চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে হাইব্রিড আউশ ধানের চাষ করেছেন। কিন্তু এ পর্যন্ত তিনবার ঢলের পানিতে ধানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন আর ওই আউশ ধান ঘরে তোলার কোনো আশা নেই। তিনি বলেন, প্রায় চার একর জমির আমন চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করেছেন। এখন সেগুলোও পানির নিচে। ঢলের পানির সঙ্গে পলি মাটি নেমে আসায় আমন বীজতলার চারাগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তিনি আশঙ্কা করেন।

মিরসরাই পৌরসভার গোভনীয়া গ্রামের কৃষক আশরাফ বলেন, আমন বীজতলার জন্য বাজারে বীজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক কৃষক চড়া দামে বীজ কিনে বীজতলা তৈরি করেছেন। এখন ঢলের পানিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেলে কৃষকের সব শেষ হয়ে যাবে। বাজারের নতুন কোনো বীজও নেই যে আবার বীজ কিনে বীজতলা তৈরি করবেন।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২০ হাজার ২০০ হেক্টর আমন আবাদের জন্য প্রায় ১২০০ হেক্টর আমন বীজতলা তৈরি করেছেন কৃষকরা। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্রায় ৭০০ হেক্টর বীজতলা ডুবে আছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মদ বলেন, এবার প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করে কৃষক চাষাবাদ করে যাচ্ছেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুল হক বলেন, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে পাহাড়ি ও নিম্নাঞ্চলের কয়েকশ পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। তবে মৎস্যচাষিরা কী পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়বেন, তা এখনও জানা যায়নি। তিনি বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে দেখছেন বলে জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.