সিটিনিউজ ডেস্ক:: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নির্মিত কোনো ভাস্কর্য অপসারণের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘সারাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নির্মিত ভাস্কর্য ও আগামীতে যেগুলো নির্মিত হবে সেগুলো অপসারণ করার প্রশ্নই উঠে না। সরকার এক্ষেত্রে অনড় ও অটল অবস্থানে রয়েছে।’
শনিবার সকালে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের যানজট নিরসন ও রাস্তা সম্প্রসারণ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
গত ডিসেম্বরে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে ন্যায়বিচারের প্রতীক গ্রিক দেবী থেমিসের মূর্তির আদলে স্থাপন করা হয়েছিল একটি ভাস্কর্য। এটি স্থাপনের পর থেকেই তা অপসারণের দাবিতে হেফাজতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সংগঠন আন্দোলনে নামে।
গত ১০ এপ্রিল গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কওমি মাদ্রাসার আলেম-ওলামাদের বৈঠকেও ভাস্কর্য সরানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন না এই ভাস্কর্য সেখানে থাকা উচিত। পরবর্তীতে বিচারপতিদের বাসভবন উদ্বোধন উপলক্ষে কাকরাইল গিয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এর দেড় মাসের মাথায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হয়।
ভাস্কর্য সরানোর কয়েক ঘণ্টা পর রাজধানীতে একটি শোকরানা মিছিল বের করে হেফাজতে ইসলাম। মিছিল শেষে দেশে স্থাপিত সব ভাস্কর্যকে ‘মুর্তি’ আখ্যা দিয়ে সেগুলোতে অপসারণের দাবি জানায় ধর্মভিত্তিক সংগঠনটির নেতারা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও চেতনা নিয়ে বাংলাদেশে যেসব ভাস্কর্য স্থাপিত হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্যের কোনো সম্পর্ক নেই। এসব ভাস্কর্য আছে এবং ভবিষ্যতেও সরকারি অনুদানে নির্মিত হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘যার অসীম সাহসের কারণে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে, তার অবস্থান নিয়ে কথা বলা যৌক্তিক নয়। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে আত্মসমর্পণ করেন না।’
মন্ত্রী রোজার ঈদকে সামনে রেখে জনভোগান্তি কমাতে মহাসড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা অপসারণ ও পার্কিং করা ট্রাকসহ যানবাহন সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) ছরোয়ার হোসেন, সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের ও কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল আলম প্রমুখ।