রক্তস্নাত অভিযাত্রায় সংহত বাঙালি প্রতিষ্ঠা করল জাতিরাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ’
সিটিনিউজ ডেস্ক : প্রধান অতিথির বক্তব্যে আন্তর্জাতিক সমাজবিজ্ঞানী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, বাংলাদেশের অভ্যূদয় এক আনন্দ বেদনার কাব্য। যেখানে মিলেমিশে আছে হৃদয় মথিত শোক এবং প্রতিরোধের দৃঢ়চিত্ত উত্থান, জীবন উৎসর্গ করে জীবন জয় করার আখ্যান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার তাৎপর্য উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, পাকিস্তান একক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হলেও ভৌগলিক বাস্তবতায় তা মোটেও একক ছিল না। সাংস্কৃতিকভাবে ছিল বৈচিত্র্যময়। ফলে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবেও তার একক হওয়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রের পূর্বাংশে বাঙালির স্ব-শাসন নিরঙ্কুশ করার লক্ষে বঙ্গবন্ধু তুলে ধরেছিলেন ৬ দফা দাবিনামা। জেল, জুলুম, পীড়নের মুখেও তিনি ছিলেন আপোষহীন।
৬ দফার পক্ষে ১৯৭০ সালের অভূতপূর্ব নির্বাচনী রায় বাঙালির একতা প্রকাশ করে জাতীয় অধিকারের দাবিতে যোগায় ন্যয্যতা এবং গণতান্ত্রিক, শাসনতান্ত্রিক বৈধতা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন না করার চক্রান্তে ৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানী বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর বিনা উস্কানীতে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালায়।
এই ভয়াল কালো রাতে ভয়াবহতায়ই ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের সৃষ্টি। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর ৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালিদের হাতে আত্মসমর্পণ করে। রক্তস্নাত অভিযাত্রায় জাতিচেতনায় সংহত বাঙালি প্রতিষ্ঠা করল জাতিরাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ’। তখন থেকেই ২৬ মার্চ জাতীয় মহান স্বাধীনতা দিবস হিসেবে সমগ্র জাতি পালন করে থাকে।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে সংগঠনের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর সভাপতিত্বে যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল হক সুমনের পরিচালনায় মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সমাজবিজ্ঞানী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কলামিষ্ট অধ্যাপক ফজলুল হক। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, মহানগর যুবলীগ সদস্য অধ্যাপক কাজী মুজিবুর রহমান, নুরুল আনোয়ার, আবু বক্কর চৌধুরী, নাজমুল হাসান সাইফুল, সনত বড়ুয়া, দেলোয়ার হোসেন দেলু, হাজী মুহাম্মদ ইব্রাহিম, এস.এম ফারুক, মুজিবুর রহমান মুজিব।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর যুবলীগ সদস্য এড. আনোয়ার হোসেন আজাদ, আকবর হোসেন, সাইফুল ইসলাম, একরাম হোসেন, আনজুমান আরা আনজু, মাহবুবুল আলম আজাদ, সাখাওয়াত হোসেন স্বপন, মাসুদ রেজা, আবু সাঈদ জন, রওশন উদ্দিন, সালেহ আহমদ দীঘল, আসহাব রসুল জাহেদ, প্রবীর দাশ তপু, মঈনুল ইসলাম রাজু, শেখ নাছির আহমদ, আলমগীর আলম, আজিজ উদ্দিন চৌধুরী, সরোয়ার খান, কাজল প্রিয় বড়ুয়া, শাকিল হারুন, হোসেন সরোয়ার্দী সরোয়ার, ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে তারেক ইমতিয়াজ ইমতু, মান্না বিশ্বাস, এম.এ আজিজ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট কলামিষ্ট অধ্যাপক ফজলুল হক বলেন, বাঙালি জাতি বীরের জাতি, জাতির যে কোন সংকটময় সময়ে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংকটের মোকাবেলা করতে দেখা যায়। এদেশে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। দেশ স্বাধীনকারী প্রধান দল আওয়ামীলীগ দেশের শিল্প-বাণিজ্য, অর্থনীতি উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নতির পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। উন্নত অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে স্বমহিমায় দাঁড়িয়েছে।
আমাদের যে সব অর্জনে ঘাটতি আছে তা নিরসনে সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতা দিবসের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সুশিক্ষার মাধ্যমে জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে উন্নত দেশ গঠনের আহ্বান জানান।