সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি প্রতিনিধি:: রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৬৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে পরিষদের সম্মেলন কক্ষে চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বাজেট ঘোষণা করেন।
সংস্থাপন ব্যয় ও উন্নয়ন ব্যয় মিলে মোট ১৫টি খাতে ৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় সাত কোটি টাকা বেশি।
তবে গত ১২ ও ১৩ জুন রাঙামাটিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হলেও দুর্যোগ মোকাবেলায় এবারও বাজেটে তেমন কোনও বরাদ্দ রাখেনি জেলা পরিষদ।
দুর্যোগ মোকাবেলায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন খাতে এক কোটি ৬৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
গত বছর এই খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছিল এক কোটি টাকা তবে বছর শেষে খরচ করা হয়েছিল ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন প্রকল্প ব্যয় ৫৫ কোটি ৫৫ লাখ এবং সংস্থাপন ব্যয় ১১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এর মধ্যে নিজস্ব আয় তিন কোটি এবং সরকারের থোক বরাদ্দ ৬৪ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে শিক্ষা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ৯ কোটি ৪৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা।
এছাড়া যোগাযোগ খাতেও একই টাকা খরচের প্রস্তাব করা হয়েছে।
ধর্ম খাতে আট কোটি ৮৮ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা; সমাজ কল্যাণ, আর্থ সামাজিক ও নারী উন্নয়ন খাতে ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা,
পূর্ত খাতে ৬ কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য, পরিবারকল্যাণ ও সুপেয় পানি খাতে ছয় কোটি ৬৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা;
কৃষি ও মৎস্য দুই কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা; জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ খাতে এক কোটি টাকা ৫০ লাখ টাকা;
ক্রীড়া ও সংস্কৃতি খাতে ৫৫ লক্ষ ৫৫ হাজার; পর্যটন খাতে এক কোটি ১১ লক্ষ ১০হাজার টাকা;
ত্রাণ ও পুনর্বাসন খাতে এক কোটি ৬৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা; ভূমি ও হাটবাজার ৫৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা,
শিশু উন্নয়নে খাতে ৫৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ও বিবিধ খাতে ৫৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা খরচ ধরা হয়েছে।
আবার গত অর্থ বছরে ব্যয় পর্যালোচনা করে দেখা যায়,
৬০ কোটি টাকার বাজেটে মোট ব্যয় দেখানো হয়েছে ৫৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
সে হিসেবে গত বাজেটের ৯১ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
গত বাজেটে সর্বোচ্চ শিক্ষা খাতে প্রায় আট কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাজেট বরাদ্দ রাখা হলেও বছর শেষে খরচ হয়েছে প্রায় ছয় কোটি টাকা।
একই বরাদ্দ রাখা হয়েছিলো যোগাযোগ খাতে। বছর শেষে এই খাতে প্রায় দশ কোটি খরচ দেখানো হয়েছে।
অন্যদিকে গত বছরের সবচে কম ব্যয় করা হয়েছে ১১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা। এই খাতে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও খরচ হয়েছে মাত্র ১১ লক্ষ টাকা।
গত বছর সর্বোচ্চ বাজেট ব্যয় হয়েছে যোগাযোগ খাতে, এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাজেট ব্যয় হয়েছে ধর্ম খাতে।
এই খাতে ব্যয় হয়েছে ৮ কোটি ১৪ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা, এরপর তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় হয়েছে পূর্ত খাতে। এই খাতে ছয় কোটি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়।
পূর্ত খাতে বরাদ্দ ছিলো ছয় কোটি ১৩ লাখ টাকা। এরপর সর্বোচ্চ খাত বরাদ্দ পাওয়া শিক্ষা খাতে ব্যয় হয়েছে ছয় কোটি টাকা।
বাজেট ঘোষণাকালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন,
সরকারি টাকা বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে জেলা পরিষদ উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
বাজেটে যে সব সংশোধনী, পরিবর্তন, পরিবর্ধনের কথা বলা হয়েছে সেগুলো সংশোধন ও পরিমার্জন করা হবে।
বাজেট ঘোষণাকালে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক হোসেন, সদস্য হাজি মুছা মাতব্বর, সাধন বিকাশ চাকমা, স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, অমিত চাকমা রাজু, রেমলিয়ানা পাংখোয়া, জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, ত্রিদীব দাশ, সবির কুমার চাকমা, সান্তনা চাকমা, মনোয়ারা জাহান, পরিষদের কর্মকর্তারাবৃন্দ।