নিজস্ব প্রতিবেদক::আগামী ৭ দিনের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সংগঠন ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ, চট্টগ্রামের কার্যালয়টি উচ্ছেদ করার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ।
সিলেটে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় আজ বেলা ১২ টা আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে এ আল্টিমেটাম জানানো হয়েছে।
কলেজ ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে প্রতিবাদ মিছিলটি চকবাজার প্যারেড কর্ণারে অবস্থিত ইসলামী সমাজ কল্যান কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে মিছিলটি প্যারেড মাঠ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের সামনে এসে শেষ হয়।
এসময় সমাবেশে একাত্মতা ঘোষনা করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সদস্য রুমেল বড়–য়া রাহুল, নগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, গোলাম সামদানী জনি, নগর ছাত্রলীগের উপ প্রচার সম্পাদক আব্দুল হালিম মিতু, সদস্য নাজমুল হাসান সহ নগর ছাত্রলীগ নেতা ফরমান জনি প্রমুখ।
বক্তারা এসময় সিলেটে শিবিরের হামলার ঘটনার সমুচিত জবাব দেওয়ার পাশাপাশি চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের আশপাশে শিবিরের সকল অবৈধ প্রতিষ্ঠান ও ব্যাচলর বাসাবাড়ি উচ্ছেদের জোর দাবী জানান।
বক্তারা এ সময় আরো বলেন, কলেজ দুটি শিবির মুক্ত হলেও কলেজের ৪ পাশে জামায়াতের নানা সাংগঠনিক কার্যালয় এখনো উচ্ছেদ করা হয়নি। সরকারী জমিতে ইসলামী সমাজ কল্যান পরিষদ, চট্টগ্রামের কার্যালয়টি জামাত শিবিরের ক্যাডারদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। জেলা প্রশাসনের লিজ দেওয়া জমিতে অবস্থিত কার্যালয়টি ১৪১৯ বাংলা সন পর্যন্ত মেয়াদ ছিল।
বিগত এক বছর জেলা প্রশাসনের কাছে বারবার অনুরোধ করার পরও এই জামায়াতী কার্যালয় উচ্ছেদ করা হয়নি, সরকারী জমিও উদ্ধার করা হয়নি। যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মাহফিলের আয়োজক ছিল এই সংগঠনটি, যা বর্তমানে জামায়াতের মতাদর্শ প্রচারের লক্ষ্যে চট্টগ্রামে ১৭ টি স্কুল, মাদ্রাসা, মক্তব, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রের নাম দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশে সরকারের স্বীকৃতি যেমন নেই তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামের আড়ালে নিজেদের ভ্রান্ত মতবাদ ও স্বাধীনতা বিরোধী মতবাদ প্রচার ও প্রসারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও এই কার্যালয় থেকে নগরীর প্রতিটি এলাকায় এলাকায় ইসলামী সমাজ কল্যানের নামের আড়ালে সাধারন মানুষকে বোকা বানিয়ে যাকাত, ফিতরা, কোরবানীর চামড়া সংগ্রহ অভিযান সহ দান, ছদকার টাকা সংগ্রহ করে আসলেও যার পুরো অংশটা জামায়াতে ইসলামীর অপরাজনীতি ও দেশ ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এসময় বক্তারা বলেন, অতীতে এ কার্যালয় থেকে জামায়াতের সন্ত্রাসী, ক্যাডারদের অস্ত্রসহ আটক করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বর্তমানে কলেজ দুটিতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আশ্র্রয় প্রশ্রয় ও অর্থ বিনিয়োগ করে ছাত্রলীগকে দ্বিধাবিভক্ত করার কৌশল নিয়ে কাজ করছে সংগঠনটি। তাই আমরা বিবেধ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আজকের এই সমাবেশ থেকে ঘোষণা দিয়ে বলতে চাই, শিবিরের নেতারা নানাভাবে যে হুমকি দিচ্ছেন তা কঠোর ভাবে প্রতিহত করা হবে। আমাদের মধ্যে বিরোধের অবসান করে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।
এসময় জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা আগামী ৭ দিনের মধ্যে সরকারের মূল্যবান জমি দখলমুক্ত করতে অবৈধ এই জামাতী সংগঠনের কার্যালয়টি সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ করার জোর দাবী জানান। অন্যথায় জামায়াতে ইসলামের ষড়যন্ত্র রুখতে এবং কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জামায়াতে ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলনকে সক্রিয় করে ছাত্রলীগ এই কার্যালয়টি উপড়ে ফেলার হুঁশিয়ারি দেয়।
সমাবেশ থেকে কলেজ দুটির ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রতি কর্ণপাত না করাতে দুই কলেজের প্রিন্সিপালকে দায়ী করা হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল করিম, ওবায়দুল হক, মোক্তার হোসেন রাজু, মোস্তফা কামাল, মনিরুল ইসলাম, জাবেদুল ইসলাম জিতু, তারিক হোসেন, ইউসুফ কবির, রায়হান আহমেদ নিবিড়, কমর উদ্দিন, মহিউদ্দিন, কামরুল হাসান মাসুম, সোহেল রানা প্রমুখ।