সন্ত্রাসী তালিকা করলেই রাজনৈতিক প্রভাব আসে : সিএমপি
বিশেষ প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে গত ৮ বছর ধরে সিএমপি সন্ত্রাসীদের কোন তালিকা করেনি। এই তালিকা করার ব্যাপারে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও তালিকা তৈরী করা সম্ভব হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিএমপির একজন কর্মকর্তা জানায়, সন্ত্রাসী তালিকা করতে গেলেই রাজনৈতিক প্রভাব চলে আসে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিকেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে তালিকাভূক্ত করতে হয়। ক্ষমতাসীন মন্ত্রী, এমপি ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের প্রভাব থাকে বেশী। সে কারনে সন্ত্রাসী তালিকা আর হালনাগাদ করা সম্ভব হয়না। পুলিশের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসী তালিকা করা হয়না। সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদ না থাকলেও নগরীর প্রতিটি থানায় সন্ত্রসী তালিকা রয়েছে। অপরাধ দমনে সন্দেহভাজন সব জায়গায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। সন্ত্রসীদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে।
১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ আমলে, ২০০১ সালে বিএনপির আমলে ও ২০০৫ সালে এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পলিশ (সিএমপি) চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদ করে। সিএমপির সর্বশেষ তালিকায় মোট সন্ত্রাসীদের তালিকা ছিল ৪০৬ জন। এদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত ছিল ৭৫ জন।
উল্লেখিত তালিকার মধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৫৫ জন, ডবলমুরিং থানার ৪৩ জন, বাকলিয়া থানায় ২৫ জন, পাঁচলাইশ থানায় ৪৩ জন, খুলশী থানায় ২২ জন, পাহাড়তলী থানায় ২০ জন, বন্দর থানায় ৪৪ জন, হালিশহর থানায় ২৫ জন, কর্ণফুলী থানায় ১৮ জন, চান্দগাঁও থানায় ২৫ জন, পতেঙ্গা থানায় ৩১ জন, বায়েজিদ থানায় ৫৫ জন। তালিকা ভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে ৫/৬ জনকে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। মূলত চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, খুনসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের সন্ত্রাসী তালিকায় আনা হয়। এদের মধ্য থেকে শীর্ষ, মাঝারি সন্ত্রাসী ও চুরি,ডাকাতি,ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টি ইত্যাদি অপরাধের জন্য তৃতীয় শ্রেণীর সন্ত্রসী হিসেবে চিহ্নিত কর তালিকা হাল নাগাদ করা হয়।
সর্বশেষ ২০০৮ সালে হালনাগাদকৃত সন্ত্রাসীদের তালিকা ডিজিলাইাজড করার জন্য তৎকালীন নৌ পরিবহনমন্ত্রী ডাঃ আফছারুল আমিন ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে সিএমপির ক্রিমিনাল ডাটাবেজ উদ্বোধন করেছিলেন। একজন সন্ত্রাসীর জন্য প্রায় ৫০ টি তথ্য সংবলিত সংরক্ষিত থাকার কথা ছিল। সে সময় রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে বেশীদূর এগোয়নি। সন্ত্রাসীদের আর হালনাগাতও করা হয়নি। এরপর প্রায় ৫ বছর পর ২০১৪ সালে সন্ত্রাসীদের তালিকা করার জন্য চিঠিও দেয়া হয় নগরীর প্রতিটি থানায়। সূত্র জানায়, সে সময়ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে তালিকা তৈরীর কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
একটি সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীদের তালিকা হালনাগাদ না থাকলেও নগরীর প্রতিটি থানায় সন্ত্রসী তালিকা রয়েছে। অপরাধ দমনে সন্দেহভাজন সব জায়গায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। সন্ত্রসীদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে। ঔ সূত্র আরো জানায়, সন্ত্রাসী তালিকা করতে গেলেই রাজনৈতিক প্রভাব চলে আসে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিকেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে তালিকাভূক্ত করতে হয়। ক্ষমতাসীন মন্ত্রী, এমপি ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের প্রভাব থাকে বেশী। সে কারনে সন্ত্রাসী তালিকা আর হালনাগাদ করা সম্ভব হয়না। পুলিশের সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসী তালিকা করা হয়না।