হলুদের গুণাগুণ
স্বাস্থ্য,সিটিনিউজ :: প্রত্যেক ঘরে দেখা পাওয়া যায় হলুদের। প্রতিদিনের রান্নায়ও তো ব্যবহার করেন হলুদ। সবজিতে বা মাছে হলুদ না দিলে রং হয় না ঠিকই, কিন্তু, হলুদের আরও গুণাগুণ আছে। সেটা জানেন?
হলুদ যদি আপনার প্রতিদিনের ডায়েট চার্টে রাখেন, তাহলে কী কী উপকার পাবেন, জানেন? হলুদের এমন অনেক গুণ রয়েছে, যা অনেকেরই অজানা।
২০০৮ সালে ‘ড্রাগস ইন আর অ্যান্ড ডি’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে সারকিউমিন।
১৯৯৯ সালে প্রকাশিত ‘ফাইটোথেরাপি রিসার্চ’ প্রবন্ধে বলা হয়েছে, হলুদের পলিফেলন নামের অন্য আরেক উপাদান চোখের অসুখ ‘ক্রনিক অ্যান্টিরিয়ার ইউভেইটিস’ সারাতে কর্টিকো-স্টেরয়েডের কাজ করে। এই রোগের প্রকোপে চোখে প্রচণ্ড জ্বালা ও প্রদাহ হয়।
২০০৩ সালের এক মেডিক্যাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যানসারজনিত প্রদাহের চিকিৎসাতেও এই স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়। ২০১১ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মানসিক অবসাদ রোধও ব্যবহার হয় সারকিউমিন।
এ ছাড়া এই উপাদানে রয়েছে অ্যাসপিরিনের গুণ। এর প্রয়োগে ভ্যাসকুলার থ্রম্বোসিস আক্রান্ত রোগীর রক্তের ঘনত্বের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
এ ছাড়া, ক্যানসার নিরাময়ে প্রচলিত কেমোথেরাপি চিকিৎসায় ব্যবহৃত অক্স্যালিপ্ল্যাটিন-এর সঙ্গেও সারকিউমিনের তুলনা করা চলে।
চিকিৎসকদের দাবি, কলোরেক্টাল ক্যানসারের চিকিৎসায় সারকিউমিন প্রয়োগে সুফল মিলেছে। ২০০৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসাতেও সারকিউমিন প্রয়োগ কার্যকরী।
যকৃতে গ্লুকোজের উৎপাদন ঠেকাতে হলুদের এই উপাদান থেকে তৈরি ওষুধ প্রচলিত ডায়াবেটিস রোধকারী মেটমোফিনের চেয়ে অনেক গুণ কার্যকরী।
বয়স ধরে রাখতেও সাহায্য করে হলুদ। বাজার চলতি যে সমস্ত অ্যান্টি এজিং ক্রিম আপনি ব্যবহার করেন, সেই ক্রিমগুলির তুলনায় হলুদ কিন্তু অনেকটাই এগিয়ে।
গাঁটের ব্যথা থেকে রক্ষা করতে পারে হলুদ। অর্থাৎ, প্রতিদিন নিয়ম করে যদি হলুদ খেতে পারেন, তাহলে বিভিন্ন ধরণের ব্যথা থেকে মিলবে মুক্তি। অর্থাত, গাঁটের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে হলুদের সাহায্য নিতেই পারেন আপনি।
মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সাহায্য করে হলুদ। মস্তিষ্কের যে কোনও ধরণের রোগ থেকেও মুক্তি দিতে পারে হলুদ।
খাবারে হলুদ ব্যবহার করলে হজম শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও পেতে পারেন উপকার। অর্থাৎ, যে কোনও ধরণের খাবারের পর হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে হলুদ। গ্যাস, অম্বল এবং অ্যাসিডিটি থেকেও মুক্তি দেয় হলুদ। খাবারে বিষক্রিয়ার প্রাথমিক চিকিৎসাও হলুদ দিয়ে করতে পারেন।
হৃদ রোগের হাত থেকে রক্ষা করতেও হলুদের জুড়ি নেই। তাই হৃদ রোগের সম্ভাবনা থেকে যদি মুক্তি চান, অবশ্যই ডায়েট চার্টে রাখুন হলুদ।
এসবের পাশাপাশি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে, যে কোনও ধরণের ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে রক্ষা পেতে, অ্যালার্জির হাত থেকে রেহাই পেতে এবং যে কোনও ধরণের ত্বকের সমস্যা সমাধানে হলুদের জুড়ি মেলা ভার।