হাসপাতাল থেকে শিশু অপহরণ: ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি

0

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার:: কক্সবাজার শহরের বেরকারী একটি হাসপাতাল থেকে রোগীর সঙ্গে আসা এক শিশুকে অপহরণ করেছে একদল দুর্বুত্ত। শিশুকে মুক্তিদিতে মোবাইলের মাধ্যমে দাবী করা হচ্ছে ৫ লাখ টাকা। এঘটনায় শিশুটির মাও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। শনিবার দুপুর ২টার দিকে সংগঠিত ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই শিশুকে উদ্ধার কিংবা সন্ধান মিলেনি।

জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার কুনকারপাড়া গ্রামের মোঃ ইব্রাহিমের স্ত্রী আরেফা বিবির মা ছারা খাতুন (৬৫) গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শুক্রবার রাতে এ্যাম্বুলেন্স যোগে এনে কক্সবাজার সেন্ট্রাল হাসপাতাল নামের একটি বেসরকারী হাসপাতালের ৪র্থতলায় ভর্তি করা হয়। তার অসুস্থ মায়ের সাথে ছিলেন এক ভাগ্নি ও তার শিশু সন্তান জানে আলম (১৪)। বর্তমানে ছারা খাতুন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আরেফা বিবি জানান, শনিবার বেলা ২টার দিকে তার নিকটাত্মীয় মোঃ রাসেল ও তার সাথে আরো ৪ জন ব্যক্তি তার অসুস্থ মাকে দেখতে যান হাসপাতালের ৪র্থতলায়। সেখান থেকে আসার সময় তার শিশু সন্তান জানে আলমকে কৌশলে ৪র্থতলা থেকে নিচে নিয়ে আসে এবং টেক্সি যোগে অপহরণ করে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, ওই মোঃ রাসেল সহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি ৩/৪ টি মোবাইল নাম্বার থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করেন। এমন কি ছেলেকে অমানষিক নির্যাতন চালিয়ে ছেলের কান্না মোবাইলের মাধ্যমে শুনান অপহরণকারী চক্র। মুক্তিপণের টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি স্থানও চিহ্নিত কওে দেয়। পণের টাকা না দিলে বা কোন ধরনের বিশ্বাস ভঙ্গেও কাজ করলে শিশু জানে আলমকে জবাই করে হত্যার পর লাশ পাওয়া যাবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। হুমকির কারণে তিনিও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার সেন্ট্রাল হাসপাতালটির পুরো এলাকা সিসি ক্যামরায় নিয়ন্ত্রিত। এরপরেও হাসপাতাল থেকে শিশু অপহরণের ঘটনাটি নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীও স্বজনদের।

অপহৃত শিশুর মা আরেফা বিবি জানান, কোন উপায় না দেখে বিষয়টির ব্যাপারে মোঃ রাসেলকে প্রধান করে লিখিতভাবে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় অবহিত করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঈধহৃত শিশু জানে আলমের সন্ধান মিলেনি। তাবে জীবিত রাখা হয়েছে নাকি, হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছুই জানাতে পারেনি মা আরেফা বিবি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অপহরণকারী চক্রের গডফাদার হচ্ছে উখিয়া উপজেলার সোনারপাড়া গ্রামের মোঃ বেলালের ছেলে মোঃ রাসেল। তার বাড়ি সোনারপাড়া হলেও কক্সবাজার শহরের কলাতলি এলাকায় ভাড়া বাসা নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করে বিভিন্ন ব্যবসায়ি ও শিশু অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। এধরনের ঘটনা এর আগেও অনেক ঘটেছে, তবে তার বেশির ভাগই অপ্রকাশিত রয়ে গেছে বলে জানা যায়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশন) মোঃ মাইন উদ্দিন জানান, গত শনিবারের সিসি ক্যামরা ফুটেজ সংরক্ষণ করার জন্য কক্সবাজার সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া জানান, অপহরণকারীদেও ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারগুলোর অবস্থা সনাক্তে কাজ চলছে। এছাড়াও অধহৃত শিশুকে উদ্ধার ও চক্রকে ধরতে শনিবার রাতে সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে পুলিশ অভিযান চালায়। শিশু উদ্ধারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.