সাক্ষাৎকার : সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদকে রুখতে হবে যেকোন মূল্যে

0

-আলহাজ্ব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাবেক মেয়র ও সভাপতি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগ

জুবায়ের সিদ্দিকী : এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম। আজ এক অবিচ্ছেদ্য শিরোনাম। টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া তথা সারা বাংলাদেশের জনগণ যাকে এক নামে চিনে তার নাম চট্টগ্রামের মহিউদ্দিন চৌধুরী। জাতীয় পর্যায়ে এই পরিচিতি তিনি অর্জন করেছেন। কারো অনুগ্রহ বা চাটুকারিতা দিয়ে নয় বরং তার আদর্শ, সেবা, সাংগঠনিক ক্ষমতা এবং প্রতিবাদী কর্মময় জীবনের বিনিময়ে। আজ অনেকের কাছে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রশংসনীয় এবং কারো কারো কাছে ঈর্ষনীয়ও। তবুও এক বাক্যে সবারই স্বীকারোক্তি- মহিউদ্দিন চৌধুরী মানেই একজন কর্মমুখর মানুষের প্রতিকৃতি, যিনি কাজ করেন, কাজ সৃষ্টি করেন এবং কাজ সফল করে তুলেন, যে কোন মূল্যেই।
মহিউদ্দিন চৌধুরী তার অদম্য কর্মশক্তিকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ করে রাখেননি। এই কর্মশক্তিকে সঞ্চারিত করে দিয়েছেন সর্বশ্রেণীর মানুষের মধ্যে। নিজে কর্মী হয়ে গড়ে তুলেছেন অগনন কর্মীবাহিনী। এখানেই তার বিশেষত্ব, তার স্বাতন্ত্র্য, তার কর্মকুশলতা। আর এই কাজই দিয়েছে তাকে সর্বজনপ্রিয়তা। ফলে, একজন রিক্সা শ্রমিকও খেটে খাওয়া ছাড়া যার জীবনে অন্য কোন বোধ নেই। সেও রাস্তায় রিক্সা চালাতে চালাতে আপন মনে গেয়ে উঠে, ‘‘সুখের দিন, দু:খের দিন, পাশে থাকে মহিউদ্দিন।’’
গত সপ্তাহে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় রাস্তাঘাট, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে অবদান রাখার চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি, নগরীতে ট্যাক্স না বাড়িয়েই উন্নয়ন করা সম্ভব। সিটি কর্পোরেশনকে আয়বর্ধক অনেক খাত করে এসেছি সেখান থেকে সুফল পাবে কর্পোরেশন।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, দল ক্ষমতায় থাকলে যে কোন দলের সাংগঠনিক তৎপরতা ধীরে চলে। তবে সাংগঠনিক তৎপরতা অব্যহত আছে। আমাদের নেতা ও কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছে। রাজনীতি মানুষের জন্য। মানুষের ভালবাসায় আজও পথ চলছি। কোন অন্যায়কে কখনো প্রশ্রয় দেয়নি। জনগণের জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। দেশ ও জাতির কল্যাণেই রাজনীতি হতে হবে গণমুখী।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সমাজকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশ এগিয়ে চলছে। ঐক্যবদ্ধভাবে সকলকে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদকে রুখে দিতে হবে। ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম কোন নিরহ মানুষকে হত্যা করতে বলেনি।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, জনগণের মধ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদকে নির্মূল করতে জিরো টলারেন্স নীতিতে অবিচল।
চট্টগ্রামের জনপ্রিয় নেতা ও চট্টগ্রামবাসীর অহংকার মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হলে নগর সরকারের কোন বিকল্প নেই। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে সেবা মানুষের দুয়ারে পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করতে বিএনপি-জামায়াত জোট নানা ফন্দি ফিকির ও চক্রান্ত করছে। দেশকে অশান্ত করতে দেয়া হবেনা। আপনি জানেন, জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পথসভা করেছি।
মহিউদ্দিন চৌধুরী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সেই বয়সও এখন নেই, মন্ত্রীত্বের প্রতি লোভও নেই। মানুষকে সাহায্য সহায়তা করতে পারলেই আমার শান্তি। মানুষের হৃদয়ে স্থান পেয়েছি সেভাবেই যেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আল্লাহ রাখেন সে দোয়া করবেন। পদ-পদবী না থাকলেও মানুষের সমস্যা সমাধানে সরকারকে অবহিত করি। সরকারও আমলে নেন।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ একক কোন দেশের সমস্যা নয়, এটি এখন বিশ্বব্যাপী সমস্যা। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে বাংলাদেশ সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোটের সরকার ক্ষমতায় থাকতে বাংলা ভাই রাজশাহীতে পুলিশ পাহারায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মিছিল করেছে।
বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে দেশের মানুষ এ ধরণের পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করেছে। বিএনপি সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। এরাই আজ জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করছে।
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগুচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাবে। এই অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার যে কোন চক্রান্ত জনগণ প্রতিহত করবে।
বিশিষ্ট সংগঠক ও সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমার কোন চাওয়া পাওয়া নেই। জনগণের পাশে আজীবন ছিলাম এখনও আছি। দেশ ও জাতির স্বার্থে যে কোন ত্যাগ স্বীকারে সব সময় আমি প্রস্তুত। রাজপথের থেকে উঠে এসেছিলাম আজও রাজপথে আছি। রাজপথ ছাড়িনি। জনগণের ভালবাসায় আমি সিক্ত হয়ে জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করি। কোন ভোগ-বিলাসের জন্য নয়। আমি ত্যাগে বিশ্বাসী।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.