অস্ত্রের রাজনীতি ছেড়ে আলোচনার টেবিলে আসুন- হানিফ
সাইফুল উদ্দীন, রাঙামাটি,সিটি নিউজ : কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ সম্প্রতি পার্বত্যাঞ্চলের আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের ওপর সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে হুঁশিয়ার দিয়ে বলেন, দেশের জঙ্গিবাদের শেকড় উৎপাটন করেছে আওয়ামীলীগ। আর পাহাড়ে যারা অস্ত্রের ভাষায় কথা বলে, তাদেরও কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, সেটা আওয়ামীলীগ ভালোই জানে। তাই অস্ত্রের রাজনীতি ছেড়ে আলোচনার টেবিলে আসুন। অস্ত্রদিয়ে কোন অধিকার আদায় করা যায় না, আলোচনার মাধ্যমে দাবি উপস্থাপন করুন। শেখ হাসিন দরজা সব সময় আলোচনার জন্য খোলা থাকে।
‘অস্ত্রের ভাষা কোন জাতির ভাষা হতে পারে না’ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, যে অস্থিতিশীল পাহাড়কে শান্ত করার জন্য শান্তি চুক্তি করা হয়েছে, সেই পাহাড়ে আবারো অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে তারা অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডই করতে পারবেন। পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবেন কিন্তু দাবি আদায় করা সম্ভব হবে না। দাবি আদায় করতে হলে আলোচনার টেবিলে আসতে হবে।
সোমবার ১৫ জানুয়ারী সকালে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির উদ্যোশে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, আওয়ামীলীগ আইনের শাসনে বিশ^াসী, গণতন্ত্রে বিশ^াসী। বেগম জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছে। এটা যদি আদালতে প্রমাণ হয় তাহলে উনি দোষী, আর প্রমাণিত না হলে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। এখানে আওয়ামীলীগের কিছুই করার নেই।
‘আইন সবার জন্যে সমান’ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, আপনি ভেবে নিয়েন না, আপনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলে আইনের বিরুদ্ধে কাজ করবেন, এতিমের টাকা মেরে খাবেন কিন্তু আইন আপনাকে কিছুই করবে না। দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য আইন সমান। আইনের উদ্ধে কেউ নয়।
মাহবুব-উল-আলম হানিফ আরো বলেন, বিএনপি মিথ্যাচার করে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাই। তাদের সেই দুর্নীতির কথা জনগণ ভুলে যাইনি। খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের দুর্নীতির কালো পাহাড়ের খবর জনগণ জানে। এছাড়া তাদের সেই হাওয়া ভবনের স্বর্গীয় রাজ্যের সংবাদ জনগণের জানা আছে।
‘বিএনপি-জামাত পাকিস্থানের নির্দেশে চলে’ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামাতের সৃষ্টি পাকিস্থান থেকে, তাদের পরিচালনাও করা হয় পাকিস্থান থেকে। পাকিস্থান থেকে তাদের অনুমতি না দেওয়ায় তারা গত জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেননি। যার খেসারত তাদের এখনো দিতে হচ্ছে।
‘অন্ধকার থেকে আলোর পথে দেশেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ’ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামাত সরকার দেশেকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিলো। সেই দেশকে গত নয় বছরে আওয়ামী লীগ সরকার মধ্য আয়ের দেশ হিসাবে পরিচিত করেছে। দেশের খাদ্য, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা সহ সার্বিক উন্নতি ঘটেছে। যে বিশ^ ব্যাংক পদ্মা সেতুর জন্য অর্থ দিতে চাই নি, তা আমরা নিজেরা নিজেদের টাকা দিয়ে করছি। তাই বিশ^ ব্যাংক নয় শুধু বিশে^র নেতারা বলছেন বাংলাদেশকে দেখে অন্য দেশ গুলো যেনো শিক্ষা নেয়।
‘স্বল্প উন্নত দেশের রোল মডেল বাংলাদেশ’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা আরো বলেন, বাংলাদেশ এখনো তলা বিহীন ঝুড়ি নয়, বরং সয়ং সম্পূন্ন একটি দেশ। এই দেশকে অন্ধকার পথে থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছে শেখ হাসিনা। এই অগ্রযাত্রা কম সহজ ছিলো না, প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া একমাত্র আওয়ামী লীগের দ্বারাই সম্ভব হয়েছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই বছরই জাতীয় নির্বাচন হবে। দেশের জনগণ সব জানেন এবং বুঝেন, বিএনপির চক্রন্তকে রুখে দিয়ে ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে দেশের জনগণ আবারো ক্ষমতায় আনবে।
জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম, উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া।
এর আগের সকালে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তলন এবং বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বর্ধিত সভার উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলার নেতবৃন্দ। পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্প অর্পণ করা হয়। এসময় আওয়ামী লীগের জেলা, উপজেলার বিভিন্ন স্থরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।