পাঠকের ফেইসবুক:আমার অনেক আদরের ছোট ভাইটি( রানা) অনার্স ফাইনাল ইয়ারে যখন পড়ে, মটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে মাথায় রক্তক্ষরনহয়। মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছিল। কোন হাসপাতালেই সীট নাই।ঘুরতে,ঘুরতে ঢাকা মেডিকেলে। রাত তখন ২ টা, ইন্টার্নি ডাক্তার রা সিনিয়র ডাক্তারদের সাথে ফোনে পরামর্শ করে,আমার ভাইএর ব্রেন অপারেশন করলো। ডাক্তার বল্লেন সেন্স আসতে ২৪ ঘন্টা লাগবে। ২৪ ঘন্টা,এরপর ৪৮ ঘন্টা, ৭২ ঘন্টাওপার হলো সেন্স আসার কোন খবর নাই।।১১ দিন পর তার সেন্স আসলো কিনতু কাউকে চিনে না। কথাবার্তা উল্টাপাল্টা। আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলাম বেচে তো আছে। এর ৫ বছর পর আবারও ব্রেনে রক্তক্ষরন হয়। দ্বিতীয় বার আবারও অপারেশন হয় উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে। ডাক্তার বল্লেন আল্লাহ,আল্লাহ করেন। একমাত্র আল্লাহ ভরসা। অপারেশন হলো ৩ দিন পর সেন্স আসলো। বাচার কথা নয়, আল্লাহর কি ইচ্ছা কেন বাচালেন আল্লাহ ই জানেন। এর পর আর তার স্বাভাবিক জীবন নেই। কিছুদিন পরপর মারাত্মক রকমের খিচুনি হয়। ২ বার স্ট্রোক করেছে।আর একবার মেনেন্জাইটিস। প্রতিবারই হাসপাতালে ভর্তি করাহয় আর কমপক্ষে ৩/৪ লাখ টাকা বিল হয়। ডাকতারের পরামর্শ মত তার ব্রেনে যাতে চাপ না পরে সেভাবেই তার সংগে সকলেই আচরন করে। কোন রকমে বেচে আছে।ব্রেনে এত আঘাতের কারনে সব সময়ই অস্হিরতা ছিল।এক জায়গায় বেশীক্ষনথাকতে পরতো না। অনেক চেষ্টা করেছি আটকে রাখতে। কিন্তু আটকে রাখলেই দেখা গেছে কিছু সময় পর তার মারাত্মক খিচুনি হয়ে গেছে। আমাদের অনেক যত্নে কোন রকমে বেচে আছে। ডাকতারের পরামর্শ মত না চল্লে দেখা যেতো হয়তোবদ্ধ পাগল হয়ে রাস্তায় কাগজ কুড়াতো। আমার এই ভাইটি খুব মেধাবী ছাত্রছিল। এসএসসি,এইচ,এসসি তে প্রথম বিভাগে এবং অনার্স দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। ছোট বেলা থেকেই ছিল খুব চুপচাপ স্বভাবের।অল্প বয়স থেকেই ছিল খুব ব্যাক্তিত্ব সম্পন্ন। ব্রেন অপারেশনের পর পুরো ওলট,পালট হয়ে অন্য রকম একটি মানুষ হয়ে যায়। শিশুদের মত আচরন হয়ে যায়। শিশুদের মত কান্নাকাটি করে আম্মাকে না দেখলে।
আমার এই অস্বাভাবিক, অসুস্হ ভাইটিকে গতকাল নেত্রকোনার পুলিশ বাসার সামনে থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।। গ্রেফতারের পর তার অপারেশনের কাগজপত্র দেখানো হয়।থানায় জানানো হয়,পুলিশের অস্বাভাবিক আচরনে,এই পরিবেশে যে কোন সময় তার ক্ষিচুনি হয়ে ব্রেনে রক্তক্ষরন হতে পারে।। তার পরও তাকে তো ছাড়েই নি উল্টো ৫২ গ্রাম হেরোইন লুংগির কোচর থেকে উদ্ধার দেখিয়ে মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে মামলা করেছে।
আমার অস্বাভাবিক অসুস্হ ছোটভাইটি হয়তো জেলখানায় বীনা চিকিৎসায় মারা যাবে।
এই ভাবেই ঃঃ ***তারা যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে***