আবার আসিব ফিরে এই সংসদে

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে-এই বাংলায়। আবার আসিব ফিরে এই সংসদে, এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার… জীবনানন্দ দাশের কবিতার আলোকে এমন উক্তির মধ্য দিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় আসার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, সব বড় বড় মেগা প্রকল্প সমাপ্ত করার জন্য আরো একটু সময় প্রয়োজন, সে জন্য জণগণকে আবারো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে বলে জানান তিনি। এর চেয়ে আরো ২১০০ সাল পর্যন্ত ডেল্টা প্লান গ্রহণ করার কথা জানান তিনি। কোন জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য তিনি একটা লক্ষ্য স্থির করার কথা বলেন। জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করা, উন্নত জীবন করে দেবার জন্য তিনি এসব পরিকল্পনার কথা বলেন। বিশ্বের সব উন্নত দেশের মতো দেশের জনগণকে উন্নত দেশ দিতে হবে।

সোমবার (২৯ অক্টোবর) দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শেষ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয় এটা আমাদের পররাষ্ট্র নীতিমালা নিয়ে এগিয়ে চলেছি। আমরা বিশাল সমুদ্র সম্পদ জয় করেছি। আমরা ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে হাত দিয়েছি। এটি আবরো ক্ষমতায় আসতে পারলে বাস্তবায়নে সক্ষম হবো।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরে ৩৬ হাজার স্কুলকে জাতির পিতা সরকারি করেন। আমরা ক্ষমতায় এসে ২৬ হাজার ১৯৩ টি প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ করেছি। এরশাদ, জিয়া কেউ কিন্তু তা করে নাই। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আগামীতে ক্ষমতায় আসতে পারলে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব। গ্রামে এখন বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সার্ভিস পাচ্ছে। গ্রামে এখন রাস্তাঘাট সব হয়েছে। গ্রামের মানুষ যাতে শহরের সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করা হয়েছে। উন্নয়নের ছোঁয়া সর্বত্র লেগেছে। তাই আবার নৌকা মার্কাং ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছিল আমরা তাদের মর্যাদা রক্ষা করেছি। আমরা দেশের ৩৪ শতাংশ তরুণ প্রজম্মের কথা চিন্তা করে কাজ করেছি। তাদের জন্য আমরা একটা সুন্দর দেশ রেখে যেতে চাই। যাতে তাদের জীবন মান উন্নত হয় সেজন্য আমাদের কর্মকাণ্ড। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সমর্থ হয়েছি। প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা অনলাইনে লেনদেন হয়। ই-কমার্সে লেনদেন হয় বছরে ৪ হাজার কোটি টাকা। দেশে এক লাখ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার বসানো হয়েছে। দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ আমরা ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে উচ্চ ক্ষমাত সম্পন্ন ইন্টারনেট ব্যবস্তা চালু করা হবে। হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। হাজারের ও বেশী ই-সেবা চালু করা হয়েছে। সাইবার ক্রাইম থেকে রক্ষার জন্য আমরা ডিজিটাল আইন পাশ করেছি। এতে যারা শুধু ক্রাইম করবে তারাই সমস্যায় পড়বে।

তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছি। ২০২৪ সাল পর্যন্ত এটা ধারাবাহিকতা টিকিয়ে রাখতে হবে। এর জন্য সব চেয়ে আগে প্রয়োজন সরকারের ধারাবাহিকতা। পদ্মা সেতুসহ অনেক প্রকল্প আমরা শুরু করেছি। তা সম্পন্ন করতে হবে। যদি আবার জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনে তা হলে আমরা দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সমর্থ হবো। আমাদের ১০০টা অর্থনীতিক অঞ্চল আমরা গড়ে দিচ্ছি। এটি সম্পন্ন হলে কর্মসংস্থানের অভাব হবে না। কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে যুব সমাজ উপকৃত হচ্ছে।

প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ হয়েছি। এর সুফল গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। তাদের পরিবর্তন হচ্ছে। তারা এখন উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখছে। কওমি মাদ্রাসার সম মর্যাদার ডিগ্রির সুযোগ করে দিয়েছি। যা ছিল অবহেলিত।

তিনি বলেন, এর আগে বহুবার সংসদে ছিলাম। বহু কটুক্তি সহ্য করতে হয়েছে। টেলিভিশনের ক্যামেরাও রেহাই পাইনি। ১০ম জাতীয় সংসদে কিন্তু কাউকে বর্বরতা অসভ্যতা শুনতে হয়নি। এ সংসদ মানুষের মনে যে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি করছিল তা পাল্টে দিয়েছে। এ সংসদে ৪১০ দিনে ১৯৩ টি বিল পাশ হয়েছে। ২৩তম অধিবেশনে ১৯ টি বিল পাশ করে একটা রেকর্ড তৈরি হয়েছে। এ সংসদের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত হয়েছে, শক্তিশালী হয়েছে। গণতন্ত্রের মধ্যে আস্থাও বেড়েছে। এ সময় তিনি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা’ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ.. এ আমার অঙ্গীকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বেঁচে থাকাটা একটা এক্সিডেন্ট। গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলায় আমাকে মারার চেষ্টা করা হয়েছে। যে দেশে আমার মা-বাবা ভাইদের হত্যা করা হয়েছে। যেকোন দিন আমিও মারা যেতে পারি এটা নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি। দেশবাসীকে আবারো আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বাংলাদেশ কে অদম্য গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাবার আহ্বান জানান তিনি।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সকলের জন্য বেতন ভাতা বাড়ানোর কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.