ঈদ বাজারঃ চন্দনাইশে জমে উঠেছে শপিং সেন্টারগুলো

0

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশঃ ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই মার্কেটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। ঈদের মার্কেটগুলোতে দিনরাত সমানতালে বিক্রি হচ্ছে দেশী বিদেশী শাড়ি ও অন্যান্য কাপড়। প্রতিটি মার্কেটে ক্রেতার ঢল।

পছন্দের কাপড়টি কেনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে শপিং সেন্টারগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ। ঈদ বাজারে পুরুষের চেয়ে নারীদের পদচারণা বেশি। জমে উঠেছে ঈদ বাজার। বাচ্চা থেকে সব বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে চন্দনাইশের শপিং সেন্টারগুলো। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। বিশেষ করে সরকারী ছুটির দিনে এ চাপ আরো বৃদ্ধি পায়।

জ্যৈষ্ঠ মাসের খরা রোদে, মেঘলা আকাশে কখনো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, কখনো রোদ, আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। এমন আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে চন্দনাইশের বিভিন্ন সেন্টারগুলোতে ঈদের কেনাকাটায় হুমড়ি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। অভিভাবক থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী এমনকি শিশুরাও পা রাখছে মার্কেটে।

এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে খুঁজছেন পছন্দের পোশাক। ফ্যাশন সচেতন তরুণীদের পোশাকের জায়গাটি বরাবরের মতোই দখলে রেখেছে ভারতীয় ব্র্যান্ড। এবারে তরুণীদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় ব্রান্ডের থ্রি পিস। সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে মিলবে এসব থ্রি পিস।

ছেলেদের শর্ট শার্ট, দেশি বিদেশি বিভিন্ন শার্টের মধ্যে ডিএন্ডজি, আরমানি, কিউজি, কোলকটন, ব্রান্ড, প্রিমিয়াম, প্লাস, নেক্সট, ওয়ানম্যান, দা ওয়ান কালেকশন। প্যান্টের মধ্যে চায়না ও থাইল্যান্ডের সেমি ন্যারো জিন্স, গ্যাবার্ডিং দেশি বিদেশি বিভিন্ন ব্রান্ডের পোশাক। ডিজাইনের পাশাপাশি ফ্যাশন হাউজগুলো পোশাকে ব্যবহার করেছে উজ্জ্বল রং ও উজ্জ্বল রংয়ের সুতা।

সময়ের ব্যবধানে নারীদের সালোয়ার কামিজেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। সালোয়ার-কামিজের প্রচলন পাকিস্তানে শুরু হলেও এখন তা বাঙ্গালীদের দখলে। বর্তমানে বাঙ্গালী তরুণীদের প্রধান পোশাক সালোয়ার-কামিজ। আশির দশক থেকে মা খালারাও এ পোশাক পরতে শুরু করেন। পিছিয়ে নেই শিশুরাও। তারাও পরতে দারুণ আগ্রহী।

সালোয়ার-কামিজের পাশাপাশি জিন্স, ফতোয়া, কোর্তা, টপস। আর এসব পোশাকের চাহিদা মেটাতে এগিয়ে এসেছে দেশীয় বুটিক হাউজের বেশ কিছু ব্রান্ড। নারীদের পোশাকের চাহিদা মেটাতে ভারত, পাকিস্তান থেকে আসছে এসব পোশাক। ঈদে সালোয়ার-কামিজে নতুন নতুন ডিজাইয়ের দিকে নজর থাকে নারীদের।

সেই সাথে ভারতীয় হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকাদের পরিধেয় পোশাক ও মুম্বাই সিনেমার নায়িকাদের পোশাকের ট্রেন্ড বর্তমান যুগে ব্যাপক। এবারে গরমের কারণে দেশী সুতির থ্রি-পিসগুলি বিক্রির শীর্ষে রয়েছে। সমানতালে বিক্রি হচ্ছে ইন্ডিয়ান গাউন, কাজ করা লং ফ্রক, টু-পার্ট, ফোর-পার্ট, কুর্তি, জিপসি, শারারা, গারারা, ফোর-পিস, অরগ্যান্ডিও।

গত বছরের মতো এ বছর অরগ্যান্ডি, বাহুবালি, বাজিরাও মাস্তানির পোশাকগুলো বিক্রি হচ্ছে। বরাবরের মতোই চন্দনাইশের মার্কেটগুলোতে মহিলাদের প্রথম পছন্দের শাড়ি ভারতের চেন্নাই, কলকাতা, ব্যাঙ্গালোর, দিল্লি, জয়পুর থেকে বিভিন্ন রঙ ও ডিজাইনের শাড়ি এসেছে। কিশোরীদের পছন্দের পোশাক হিসেবে রয়েছে থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, স্কার্ট-টপস, প্লাজো।

পুরুষদের পছন্দের তালিকায় পাঞ্জাবিও রয়েছে সবার উপরে। এসব বিষয় মাথায় রেখে বুটিক হাউজগুলো সেন্টারগুলোন মুল আকর্ষন লং কামিজ, গোল ফ্রক টাইপের থ্রি-পিস তৈরী করেছেন বেশি। সময়ের ব্যবধানে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনে আবির্ভূত হয়ে সেদিনের সালোয়ার কামিজ অবধি নামে রয়ে গেল এবং তার খ্যাতি বিশ্বজোড়া। সচেতন মেয়েরা এখন ঈদে একাধিক পোশাক কিনছে।

তারা সময় ও পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাক নির্বাচন করছে। খান প্লাজার ক্রেতা সাবিনা ইয়াছমিন, সামিহা জানালেন এবার বিভিন্ন ডিজাইয়ের ড্রেসের চাহিদা অনুযায়ী দাম বেশি নিচ্ছে বিক্রেতারা। শিশু ক্রেতা সাবিহা ও নওশিন বললেন, তাদের সন্তুষ্টি অর্জনে অভিভাবকরা পোশাক কিনে দেয়ায় হাসিমুখে তারা বাড়ি ফিরছে।

উপজেলার দোহাজারীতে হাজারী শপিং, হাজারী টাওয়ার, খান প্লাজা, শাহসুফি সুপার মার্কেট, সালাম প্লাজা, সিটি সেন্টার, গাছবাড়ীয়াতে গণি সুপার মার্কেট, সিদ্দিক বাছুরা শপিং কমপ্লেক্স, চৌধুরী সুপার মার্কেট, বাগিচাহাটে বিলকিস সুপার মার্কেট, বৈলতলীতে ইউনুস মার্কেট, সিরাজ মার্কেট, রওশনহাট এলাকাসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে উপচে পড়া ক্রেতাদের ভিড়।

হাজারী টাওয়ারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজী মোহাম্মদ হাসান জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো থাকায় ক্রেতারা নিরাপদে কেনাকাটা করতে পারছেন। শেষের দিকে এসে মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের প্রচুর ভিড়। দোকানীরাও ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন।

দোকানে অতিরিক্ত কর্মচারীও রাখা হয়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ এবারের চন্দনাইশের মার্কেটগুলোতে কাপড়ের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে ক্রয়ের ভাউচার চাইলে তারা ব্যস্ততা দেখিয়ে ভাউচার দেখান না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম বদরুদ্দোজা বলেছেন, বাজার মনিটরিং এর ব্যাপারে দোহাজারী এলাকায় একটি এবং চন্দনাইশসহ বিভিন্ন এলাকায় অপর আরেকটি কমিটি করা হলেও তারা তেমন কোন কাজ করেননি। তাই তিনি আজ থেকে রাত্রিবেলা মার্কেট মনিটরিংয়ে বের হবেন বলে জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.