কালের অন্তহীন যাত্রায় শুরু হলো নতুন বছর- ২০১৮

0

আবছার উদ্দিন অলি/গোলাম সরওয়ার : মানব সভ্যতার আলোকেই একদিন মানুষ এক সেকেন্ডকে সময়ের একক হিসেবে ধরে নিয়ে তারপর মিনিট, ঘন্টা, দিন মাস বর্ষ শতাব্দী ইত্যাদির গণনা শুরু করে। সময় হল অখন্ড এক চিরন্তন গতি। সময়ের ভিতরে পৃথিবীর সকল প্রাণীর জন্ম মৃত্যু ক্রমাগত ভাবে ছুটে চলছে। সময় কারো পক্ষপাতিত্ব করে না। আমরা তাই উন্মুক্ত সময়ের মুক্ত মানুষ হয়ে কর্মফলকে বিশ্বাস করি। কথায় আছে যৎ কর্ম তৎ ফল। অতএব, এই নববর্ষটি কি রকম হওয়া উচিত এই বিষয়ে নিছক কথার ফুলঝুরি না ছড়িয়ে আমার সকল কর্মে বলনে চলনে দায়িত্ব পালনে আগামী দিনগুলোর প্রতিটি মুহুর্তকে সততার সাথে সৃজনশীল করে তুলতে চাই। তবে স্বাধীন দেশের সমষ্টিগত নাগরিকদের একজন হয়ে এই নববর্ষে সীমাহীন আনন্দ পাব যদি কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারিক কাজ দ্রুত শেষ করে ফাঁসির রায়গুলো কার্যকর হয়ে যায়।

“জয় বাংলা” শ্লোগানের মর্মবানী এই প্রজন্মের মনে প্রাণে ও মননে মিশিয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আরো আরো শাণিত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। অতপর বাদবাকি পাকিস্তানি জারজ, ঘাতক, দালাল, রাজাকারদেরকে বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নির্মূল করে প্রিয় মাতৃভূমিকে পবিত্র করা হয়। যেহেতু জনতার ক্ষমতা এখন মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দলের হাতে। আশা করি এ বিষয়ে নিরাশ হবো না। এই নববর্ষে যেন লাখো শহীদের আত্মার গুরুত্বপূর্ণ দাবি পূরণ হয়ে যায়। গেলো বছরের হিসেব খাতায়, যোগের চেয়ে বিয়োগের অংকটাই এখন বড়।

সে যাই হোক আশা করি নিরাশার দোলা চালেইতো জীবন চলে। মৃত্যুর আগ মুহুর্তে পর্যন্তইতো মানুষ আশায় বাঁচে। আমরাও মানুষ, তাই ক্ষেত্র বিশেষে অতীতের স্বীয় ব্যর্থতার গ্লানিকে পিছনে ঠেলে দিয়ে নতুন বছরের পথ পরিক্রমনে যাত্রাকালে চেনা এ পৃথিবীটার সবার জন্যে সুখ কামনায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ ছাড়া চৌচির কোন মাঠ ফসলের চৈতি ক্ষরায় কান্না কারো কোন দুঃখ ব্যাধি জ্বরায় নির্ঝর বারিধারা বিমূর্ত হাসি আশার একান্ত কাম্য।

অনোদার যুদ্ধ বারুদের মানুষ মারায় নিত্য দিবারাত সন্ত্রাস জীবন পাড়ায় শান্তির প্রচ্ছায়া চিরায়ত খুশী আমাদের প্রানান্ত চাওয়া। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় স্বাধীন স্বদেশ প্রিয় মাতৃভূমিকে গড়ে তোলার বিমূর্ত অঙ্গীকারে- যে কোন ত্যাগ স্বীকারে হাঁ বলার সৎ সাহসে উদ্দীপ্ত আমরা। দেশের মানুষ এইসব অস্থিতিশীল পরিবেশকে পেরিয়ে ভালভাবে বেঁচে থাকুক এই প্রত্যাশা করি।

নতুন কোন দূর্ঘটনায় আগুনে পুড়ে যাওয়া অসহায় মানুষদের কান্না আর দেখতে চাই না, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো নতুন করে কারো প্রাণহানি ঘটুক, আমরা দেখতে চাই না, আসুন সবাই মিলে নতুন বছরে নতুন করে সুন্দরভাবে বাঁচতে ঐক্যবদ্ধ হই। সুখে-দুঃখে একে অপরের পাশে দাঁড়াই। তবেই আমরা ফিরে পাবো সেই “স্বপ্নের বাংলাদেশ”। রাষ্ট্র কিংবা কোন দায়িত্বপূর্ণ ব্যক্তির অবহেলায় নতুন কোন দূর্ঘটনায় কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয়, কোন স্ত্রী যেন স্বামী- সন্তান হারা না হয়। এই কামনা করি। নতুন বছরের সূর্যোদয়ের সোনালী আভায় লাখো গোলাপের সুভাসে আন্দোলিত হোক ২০ কোটি বাঙ্গালী, বাস্তব হোক সেই লাখো বীর শহীদ সূর্য সন্তানদের স্বপ্ন একটি “স্বপ্নীল বাংলাদেশ”।

পুরোনকে বিদায় দিয়ে নতুন কে বরন করে নেয়াই মানুষের সহজাত ধর্ম। আবহমান কাল ধরে মানুষ পুরাতন কে শুকনো ঝরা পাতার মত ত্যাগ করে নতুন কুঁড়ির উদগমন হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করে। ইংরেজী নতুন বছর ২০১৮ কে জানাই সাদর সম্ভাষণ। এক বুক অনাবিল আনন্দ সিঞ্চনে স্বাগত জানাই নতুন বছরের নবীন প্রভাতের নবীন সূর্যকে। অতীত সবসময়ই ইতিহাস। এ বছরের ভুলগুলো শুধরে সমস্ত ইতিহাস থেকে ভাল শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে সুন্দর ভবিষ্যত নির্মাণের লক্ষে এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে। ২০১৮ সালে যেন সব অসহনীয় বৈরী পরিবেশ কে পেছনে ফেলে কাঙ্খিত, মনোরম, ভালবাসায় এক গুচ্ছ প্রত্যাশা ও আশ্বাস কে খুঁজে পায় অনায়াসে। ইংরেজি নতুন বৎসর শুরুর দিন থেকে আশার আলোতে প্রত্যাশার পদধ্বনি বেজে উঠুক। স্বাগত নতুন বছর ২০১৮ সাল।

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা দেশ ও জাতিকে করে তোলে অনগ্রসর, দেশের মানুষকে ফেলে দেয় দুঃখ কষ্টের মাঝে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নতুন লিজেন্ড এর উদয় হোক। গতানুগতিক ধারার বাইরে নতুন সুর কম্পোজ ও গান হোক এটাই প্রত্যাশা। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয় ও আয়ু বৃদ্ধি পাক। চিকিৎসা ক্ষেত্রে আরো উন্নত প্রযুক্তি আসুক। যোগাযোগ যাতায়াত ও শিক্ষার ক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধন অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক। রাজনীতিক সমঝোতা সহানুভূতি সহনশীলতার ক্ষেত্রে সবাইকে তাক লাগানোর মতো পরিবর্তন আসুক।

রাজনীতিবিদরা এমন কাজ করুক যাতে সাধারণ মানুষের কাছে যেন তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়। হতাশার পরিবর্তে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের মনে আনন্দের বন্যা বয়ে যাক। নব বর্ষের আগমনে পৌষের হিমেল হাওয়া শীতের সকালে বিছানা ছেড়ে উঠতে যেন মন চায়না।

মনে সংশয় জাগে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সামাজিক নিরাপত্তা বিস্মিত হবে। নতুন বৎসর নব উদ্যমে নতুন প্রত্যাশা নিয়ে প্রত্যেকের আঙ্গিনায় শুভ সন্ধিক্ষন নিয়ে বারবার ফিরে আসুক এটা চাই। চাইলেও যে সে রকম হবে তা কিন্তু ঠিক নয়। কারণ সমাজে যে ধরনের বিভাদুন রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিভাদুল চিন্তা চেতনায় যেভাবে বিভাদুন যে অনিয়ম এবং সংঘাতের মহড়া প্রতিনিয়ত চলছে তাতে প্রত্যাশা শুধু হৃদয়ের গভীরে নিমজ্জিত থাকবে তার বাস্তবায়নের জন্য সুন্দর স্বপ্নীল সুনিপুন সাবলীল বস্তুনিষ্ঠ জীবন ব্যবস্থা বহাল থাকতে হবে। নয়তো সবি সীমাহীন দূরত্বে কল্পনার সূতোয় বাধা থাকবে। স্বাগত ২০১৮।

কালের অন্তহীন যাত্রায় শুরু হলো আরেকটি নতুন বছরের। এর সাথে মহাকালের গর্ভে হারিয়ে গেল ২০১৭। ৩১ডিসেম্বর রাত ১২ টা ১মিনিটে বাংলাদেশেসহ বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ বরণ করে নিয়েছে নতুন বছরকে। ১ জানুয়ারী ভোরে সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হলো নতুন দিনের। এভাবে নতুন আরও একটি বছরে পদার্পণ করলো মানব সভ্যতা। দিনটিতে সারাবিশ্বে উদযাপিত হচ্ছে নববর্ষ। দৈনন্দিন জীবনযাপন ও প্রয়োজনের নিরিখে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এদেশের মানুষও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন থেকে দূরে থাকতে পারে না। তাই বাংলাদেশে পালিত হয়েছে ইংরেজি নববর্ষ।

সকল মলিনতা মুছে গিয়ে শুভ হোক সকলের জন্যে ইংরেজি নববর্ষ ২০১৮ এর আগমন। একটি সমস্যা কবলিত বছর আমরা পার হয়ে এসেছি। অতীতের সফলতা-ব্যর্থতাকে বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য এখন আমাদের সামনে তাকানোর দিন, দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে যাবার দিন।

আমরা চাই, ফেলে আসা দিন গুলোর অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের আগামী দিনের পথ-চলাকে সুগম করবে। এই দিন হোক সফলতার দিন, স্বস্তির দিন, হোক পথের বাধাকে সকলের সহযোগে ও একতাবদ্ধ প্রচেষ্টায় অতিক্রম করতে পারার কাল। বিশ্বের অগ্রাযাত্রার সাথে পা মিলিয়ে বাঙ্গালি জাতি ও বাংলাদেশ আপন শক্তিতে সমৃদ্ধ আত্মপরিচয়ের পতাকা বহন করতে সক্ষম হোক।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.