চট্টগ্রামের উন্নয়নের কণ্ঠস্বর ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী: ইকবাল সোবহান

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন,চট্টগ্রামের উন্নয়নে কণ্ঠস্বর ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ‘মহিউদ্দিন ভাই’ ও চট্টগ্রাম অবিচ্ছেদ্য ইতিহাস ।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে চট্টল বীর খ্যাত সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মরণসভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।

স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, চট্টল বীর মহিউদ্দিন ছিলেন চট্টলা-বন্ধু, চট্টগ্রামের বন্ধু। তিনি ছিলেন উন্নয়নের কাণ্ডারী । লালদীঘি মাঠে তার জানাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতি, অশ্রু বিসর্জন তাই প্রমাণ করেন। তিনি যেভাবে মানুষকে ভালোবেসেছেন মানুষও তার জানাজায় উপস্থিত থেকে তা জানান দিয়েছেন।

মহিউদ্দিন সৎ ও অসাম্প্রদায়িক মানুষ ছিলেন উল্লেখ করে বলেন, হজের সময় আরাফাতের মাঠে তিনি শরবত পান করাতেন। হজ কাফেলার পাশাপাশি হিন্দু-বৌদ্ধদের জন্য তীর্থযাত্রার ব্যবস্থা করেছিলেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অবদান অনস্বীকার্য। আমি নিজে অনুরোধ করেছিলাম। বিএনপি সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের মেয়র হয়ে তিনি এ কাজটি করেছিলেন। এ প্রেসক্লাব হতো না যদি তিনি সহযোগিতা না করতেন।

ইকবাল সোবহান বলেন, ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি যেমন দেশের তীর্থ কেন্দ্র তেমনি চশমা হিল ছিল চট্টগ্রামের মানুষের আস্থার ঠিকানা। চমমা হিল ছিল চট্টগ্রামবাসীর লঙ্গরখানা। চট্টগ্রামের অকৃত্রিম বন্ধু মহিউদ্দিন ছিলেন চট্টলা-বন্ধু।

মহিউদ্দিনকে সাহসী ও উদ্যোগী মেয়র আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বেতন-ভাতা দিতে না পারা একটি করপোরেশনকে দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচিয়েছিল। কিন্তু নগরবাসীর ওপর ট্যাক্স বাড়াননি। নির্বাচনে তার বিজয় নিশ্চিত করতে কারচুপি নীলনকশা ঠেকাতে লাখো মানুষ রাত জেগে পাহারা দিয়েছিলেন। অনেকেই মেয়র হবেন কিন্তু মেয়র হানিফ ও মেয়র মহিউদ্দিন হতে পারবেন না।

সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক পুলক সরকারের একমাত্র সন্তান পারমিতা সরকারের লেখাপড়ার দায়িত্ব দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক নিয়েছেন বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা।

পুরো চট্টগ্রাম মহিউদ্দিনের স্মৃতি ধরে রেখেছে জানিয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মহিউদ্দিনের চশমা হিলে বহুবার গিয়েছেন। মৃত্যুর পর সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন মহিউদ্দিন ভাইয়ের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। তার স্মৃতি জাগরূক রাখতে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নেবেন।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) এ সভার আয়োজন করে। গত ১৫ ডিসেম্বর মহিউদ্দিন চৌধুরী চিরবিদায় নেন।

সভায় ‘সাংবাদিক-বান্ধব’ মহিউদ্দিন চৌধুরীর বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা করেন বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, মহাসচিব ওমর ফারুক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শাবান মাহমুদ, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক।

বিএফইউজের সহসভাপতি শহীদ উল আলমের সভাপতিত্বে সভায় মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরিবারের পক্ষে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

সিইউজে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার, সিইউজে সিনিয়র সহসভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী প্রমুখ।

বক্তব্য দেন সিনিয়র সাংবাদিক মোয়াজ্জেমুল হক, এম নাসিরুল হক, সমীর বড়ুয়া, মোস্তাক আহমেদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, সিইউজের যুগ্ম সম্পাদক স্বরূপ ভট্টাচার্য, ফারমিক গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. আহমেদ রবিন প্রমুখ। সভায় মহিউদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে লেখা কবিতা পড়েন নাজিমুদ্দিন শ্যামল।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.