চট্টগ্রামে ইয়াবা পরিবহনে ট্রাক, চালকসহ ৫ জন গ্রেপ্তার
সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার ওয়াজেদিয়া এলাকায় একটি ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে ৬৩ হাজার ইয়াবা ও নগদ ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ট্রাকের চালকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো– ট্রাকের মালিক মো. মিজানুর রহমান (৩৬), মো.জসিম উদ্দিন (২৮), ট্রাকের চালক কাজী আবুল বাশার (২৫), আবদুল্লাহ আল মামুন (৪০) এবং আবু তাহের (৩৮)। এরা সবাই কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
ইয়াবা ও নগদ টাকাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার দুপুরে নগর পুলিশের সদর দপ্তরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আমেনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, মাদক প্রতিরোধে পুলিশের তৎপরতায় কৌশল পরিবর্তন করছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এরই অংশ হিসেবে কেবল মাদক পরিবহনের জন্যই তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ ট্রাক। ট্রাকের মালিকরাই মাদক পরিবহন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (১৯ মার্চ) রাতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। উদ্ধারকৃত ইয়াবা বান্দরবান থেকে কুমিল্লা জেলার নিমসরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি বলেন, এর আগেও অনেক ইয়াবার চালান উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সোমবার যে ট্রাক থেকে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ ট্রাকটি কেবল মাদক পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সোমবার রাতে বায়েজিদ থানার ওয়াজেদিয়া এলাকায় অক্সিজেনগামী ট্রাকটি আটক করা হয়। এসময় ট্রাকের মালিক, চালকসহ তিন জনকে আটক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, ট্রাকের পেছনে নিচের অংশে বিশেষভাবে তৈরি একটি বাক্সে ৬৩ হাজার ইয়াবা রয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্য মতে তল্লাশি চালিয়ে এসব ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে আটক তিন জনের দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে নগরীর কোতোয়ালী থানার জেলা পরিষদ ভবনের সামনে থেকে অপর দুই সহযোগী মো.আবদুল্লাহ আল মামুন (৪০) ও আবু তাহেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দেহ তল্লাশি করে ১০ লাখ টাকা পাওয়া যায়। আমেনা বেগম জানান, এই ১০ লাখ টাকা ইয়াবার আংশিক মূল্য। মামুন ও তাহের ট্রাকটি চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লার নিমসরে নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল।
এ প্রসঙ্গে নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো: হুমায়ূন কবীর জানান, একটি খালি মিনি ট্রাকে করে ইয়াবা নিয়ে কয়েকজন কুমিল্লায় পাচারের জন্য চন্দ্রঘোনা লিচু বাগান ফেরী পার হচ্ছে এমন তথ্য পাই। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় আমরা অনন্যা আবাসিক থেকে অক্সিজেনমুখী সড়কের ওয়াজেদিয়া এলাকায় অবস্থান নিই।
থামার সংকেত দিলেও মিনি ট্রাকটি চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে রাবেয়া শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে ট্রাকে থাকা তিন জনকে আটক করি। জিজ্ঞাসাবাদে ইয়াবা পরিবহনের কথা স্বীকার করলে ট্রাকের পেছনের অংশের নিচের দিকে বিশেষভাবে তৈরি চেম্বারে ইয়াবার সন্ধান পায় পুলিশ। ওই চেম্বারের ভেতর থাকা একটি প্যাকেটে ৬৩ হাজার ইয়াবা ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিনজন জানায়, কুমিল্লার নিমসার বাজারে ইয়াবাগুলো নিরাপদে পৌঁছে দিতে আবদুল্লাহ আল মামুন ও আবু তাহের চট্টগ্রাম নগরীতে অবস্থান করছে। এই তথ্য পেয়ে সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় নগর পুলিশের সদর দপ্তরের (সিএমপি) অদূরে লালদীঘি জেলা পরিষদ ভবনের সামনে থেকে মামুন ও আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি বলেন, কুমিল্লা জেলার বড়ুরা থানার মহেশপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের (৩২) কাছে সরবরাহের জন্যই তারা ইয়াবাগুলো নিয়ে যাচ্ছিল। দেলোয়ারের কথামতই বান্দরবান পুলিশ লাইন সংলগ্ন প্রধান সড়কে এক উপজাতি মহিলা ট্রাকে থাকা তিন জনের কাছে ইয়াবাগুলো সরবরাহ করে।