চন্দনাইশে আওয়ালীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ২৩ জন

0

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশঃ চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া) সংসদীয় আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যসহ ২৩ জন প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে নবীন ও তারুণ্যের আধিক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ আসনে মূলত নৌকা এবং ছাতা প্রতীকের প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৪ আসনে, ৩ দিনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরীসহ ২৩ জন। তৎমধ্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, ৪ আইনজীবী ও ২ জন মহিলা প্রার্থীও রয়েছেন।

প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী ইতিমধ্যে ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পূর্বে ২ দফা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলেও অন্যান্য প্রার্থীরা সকলে নবীন।

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আফসার উদ্দিন আহমেদের ছেলে ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আসিফ, চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি যথাক্রমে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, এমএ সাঈদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য আবু আহমদ জুনু, সহকারী এটর্নী জেনারেল এড. মাসুদ আলম চৌধুরী, এড. নজরুল ইসলাম, এড. গোলাম মোস্তফা, সাবেক উপ-সচিব রীতা সেন, সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আকতার চৌধুরী, জেলা পরিষদ মহিলা সদস্য শাহিদা আকতার জাহান, রিহ্যাব চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট আবদুল কৈয়ুম চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, মাহবুবুর রহমান শিবলী, একেএম নাজিম উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম চৌধুরী, আফতাব মাহমুদ, মো. কায়কোবাদ ওসমানী, মামুন উল হক চৌধুরী, ড. নাছির উদ্দিন দলীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন এবং অনেকে ইতিমধ্যে ফরম জমাও করেছেন বলে জানা যায়।

স্থানীয় রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের মতে স্বাধীনতার পর থেকে যতবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, এত প্রার্থীর আধিক্য ইতিপূর্বে চোখে পড়েনি। ১৯৭৬ সালে চন্দনাইশ থানা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এ আসনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন জাগদলের প্রয়াত ব্যারিস্টার মাহবুবুল কবির চৌধুরী। পরবর্তীতে তিনি রাষ্ট্রদূত নিয়োজিত হলে উপ-নির্বাচনে ১৯৭৯ সালে প্রথমবারের মত এলডিপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে কর্ণেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি পর পর ৬ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও জাতীয় পার্টির শাসনামলে ইঞ্জিনিয়ার আফসার উদ্দিন আহমেদ ২ দফায় ৯ বছর সংসদ সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে বিএনপি বিহীন নির্বাচনে প্রথমবারের মত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪১ বছর পর আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করেন আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী।

কিন্তু দলীয় সম্প্রীতির ঘাটতি থাকার কারণে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থীর আধিক্য দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কর্ণেল অলি এককভাবে নতুন দল এলডিপি থেকে ‘ছাতা’ প্রতীক নিয়ে এ আসনে জয়লাভ করেছিলেন। মহাজোট প্রার্থী নির্বাচনে তারুণ্যকে গুরুত্ব দেয়ার কথা ঘোষণা করায় এ আসনে তরুণ প্রার্থীর আধিক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে।

কিন্তু বিজ্ঞ রাজনৈতিক মহল বিষয়টিকে ভিন্নভাবে বিবেচনা করে বলেছেন, একটি আসনে এত প্রার্থী, আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব পড়বে কিনা বিষয়টি নীতি নির্ধারকদের নজরে আনা দরকার। প্রকৃত পক্ষে চট্টগ্রাম-১৪ আসনে নির্বাচনী লড়াই হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সাথে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী ছাতা প্রতীকের কর্ণেল অলি’র।

কর্ণেল অলি প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে ১৯৭৮ সালে রাজনীতিতে যোগদান করেছিলেন। তিনি বর্তমানে ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিপূর্বে এ আসনে ৬ বার বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এক্ষেত্রে, তাঁর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, প্রজ্ঞা, গ্রহণযোগ্যতা, জনপ্রিয়তার সাথে মোকাবেলা করে বিজয়ী হয়ে আসা অন্যান্য দলের প্রার্থীদের জন্য অগ্নি পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে বলে বিজ্ঞ রাজনৈতিক মহল মনে করেন। ফলে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরকে বিষয়টি মাথায় রেখে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.