চন্দনাইশে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন উদ্বোধন করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0

নিজস্ব প্রতিবেদক, চন্দনাইশ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মডেলের ছোয়া চন্দনাইশেও হয়েছে সংসদ সদস্য নজরুল ইসলামের মাধ্যমে। উন্নয়নের মহাসড়কে এ জনপদ যেন পিছিয়ে বা মুখ তুবড়ে না পড়ে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির আলোকে দেশের প্রতিটি উপজেলায় ১টি করে ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপনের অংশ হিসেবে এ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এ ষ্টেশনের লোকেরা যে কোন সড়ক, নৌ-লঞ্চ দুর্ঘটনা হলে এগিয়ে যাবে। দুর্ঘটনায় কবলিত লোকজনকে এম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানোসহ সব রকম সহযোগিতা দিয়ে থাকেন তারা।

বিগত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রীর কোন দুর্নীতি ছিল না এবং দুর্নীতি স্পর্শ করতে পারে নাই। তাই দেশ এগিয়ে গিয়ে উন্নয়নশীল দেশে উপনিত হয়েছে। দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে বাংলাদেশকে একসময় যারা তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছে, তারাই আজকে বাংলাদেশকে ইমার্জিন টাইগার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এক সময় এদেশ দুর্নীতিগ্রস্থ ছিল, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ান ছিল। সে দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকটি কাজ হিসাব-নিকাশ করে চলেন। তিনি একেক করে বঙ্গবন্ধুর সকল স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলেছেন। আমরা অনেক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, অগ্নিসন্ত্রাস এগুলো ছিল ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি তা দমন করেছেন জনগণকে সাথে নিয়ে। আমাদের দেশের কুলঙ্গারেরা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে মিশে একের পর এক নীল-নকশা তৈরি করে দেশ ধ্বংস করার চেষ্টা করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশকে ভালবাসে বলেই, দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

জঙ্গীবাদে যারা জড়িয়ে পড়েছিল তাদেরকে পরিবারের লোকজন গ্রহণ করেনি। এমনকি মারা যাওয়ার পর লাশও গ্রহণ করেনি। মা ছেলেকে ধড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি ৩ বার ক্ষমতায় এসে বড় বড় সমস্যা সমাধান করেছেন। পারাক্কার পানির হিসাব, সমুদ্র সীমানা, উপজাতিদের সাথে শান্তি চুক্তিসহ পরিকল্পিত ভাবে সবকিছু আদায় করে নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নারীদেরকে কর্মে পিড়িয়ে এনে সামনে নিয়ে এসেছেন এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। কারণ দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। আজকে নারীরা গার্মেন্টস, স্বাস্থ্য, শিক্ষায় অর্ধেকাংশ দখল করে নিয়েছে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বের নন্দিত নেত্রী স্বীকৃতি পেয়েছেন। তিনি কাওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সনদ দিয়ে স্বীকৃতি দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর পর শেখ হাসিনার সাথে আর কোন নেতার তুলনা হয়না। তিনি সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের কথা তুলে ধরে বলেন, ছাত্রদের ৯ দফা দাবী যুক্তিসঙ্গত ছিল, তাই মেনে নিয়েছেন। আমরাও সবাই নিরাপদ সড়ক চাই। যানমালের নিরাপত্তা চাই। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঘটনা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। ফেইসবুকের গুজবে কান দেয়ার অনুরোধ জানান। স্থানীয় সংসদ সদস্যের দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি জনবল, গাড়ি, এম্বুলেন্স, মোটর সাইকেলসহ সবকিছু পর্যায়ক্রমে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোন না শব্দ নেই। তাই সব বাস্তবায়ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আজ রবিবার ১২ আগস্ট বিকালে দেশের ৩৪৫ তম চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উল্লেখিত কথা গুলো বলেন। ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক উন্নয়ন ও প্রশাসন এস.এম জুলফিকার রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র মাহবুবুল আলম খোকা, আলোচনায় অংশ নেন দক্ষিণ জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম বদরুদ্দোজা, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি এম.এ মাহবুব চৌধুরী, জেলা আনসার এডজুন্টেট আশীষ কুমার ভট্টচার্য্য, আ’লীগ নেতা আবুল বশর ভূইয়া, এড.আসহাব উদ্দিন, কেন্দ্রিয় যুবলীগ নেতা মীর মো. মহিউদ্দিন।

চন্দনাইশ ফায়ার ষ্টেশনটি দীর্ঘ ৬ বছর পর সম্পন্ন হয়। উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের আড়াই লক্ষাধিক জনগণের জন্য সরকার গত ২০১১ সালের ২৩ মে চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল। বর্তমান মহাজোট সরকার সাধারণ জনগণের জান-মাল নিরাপত্তার লক্ষ্যে সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা, উপজেলা সদরে ৩৭৫টি ফায়ার ষ্টেশন স্থাপন শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় চন্দনাইশে এ ফায়ার ষ্টেশনটি নির্মাণ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ২০১১ সালে। চন্দনাইশের আড়ালিয়া মৌজার পূর্ব জোয়ারা গ্রাম সংলগ্ন শহীদ মুরিদুল আলম (গাছবাড়ীয়া-বরকল) সড়কের পাশে ৩৩ শতক জমির উপর ফায়ার সার্ভিস নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ শেষে ভিত্তির প্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ ফায়ার ষ্টেশনে ২০ ফুট দৈর্ঘ্য সম্মুখ গেইটসহ ২টি গেইট, চারিদিকে বাউন্ডারী, ব্যারাক, তিনতল বিশিষ্ট ভবন, ১ হাজার বর্গফুটের পাম্প হাউজ, ৯৮০ বর্গফুটের ষ্টেশন মাষ্টারের বাসভবন, গণশৌচাগার নির্মাণ করা হয়। সেখানে পেট্রোল ষ্টোর, চিকেন কাম ডাইনিং আন্ডার গ্রাউন্ডে ৫০০ স্কয়ার ফুটের সীমানা প্রাচীর, গভীর নলকূপ বসানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। উদ্বোধনের পর ফায়ার ষ্টেশন পরিচালনার জন্য ১৬ জন ফায়ারম্যান, ৫ জন পরিচালক, ২ জন ফিডার, ১ জন স্পেশাল অফিসার, ১ জন স্টাফ অফিসার, ২টি গাড়ীর জন্য ২ জন ড্রাইভারসহ ব্যাপক জনবল রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.