দাপুটে জয় টাইগারদের

0

খেলাধুলা,সিটিনিউজ :: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান-উইকেট সাকিব আল হাসানের। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিলেন এ অলরাউন্ডারই। বল হাতে প্রথম ওভারের ঝড়সহ তিন উইকেট, ব্যাটে ৩৭ রান। সঙ্গে তামিম ইকবালের ঠাণ্ডা মাথার অপরাজিত ৮৪। ব্যাটে-বলে দাপটের দিনে ৮ উইকেটের জয় পেল বাংলাদেশ।

একই সঙ্গে নতুন বছরটাও জয় দিয়ে সূচনা টাইগারদের। প্রায় দেড় বছর পর ঘরের মাঠে ওয়ানডে খেলতে নেমে বাংলাদেশ পেল দাপুটে জয়।

সোমবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় পরে বোলিং করতে না চাওয়ার ইচ্ছেটা পূরণ হয়েছে মাশরাফীর। টস জিতে আগে বোলিং নিতে ভুল করেননি টাইগার অধিনায়ক। বোলাররা দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান। জিম্বাবুয়ে ৪৯তম ওভারেই অলআউট, ১৭০ রানে। সেখানেই মূলত ম্যাচটা শেষ হয়ে যায়। বাকি কাজটা সারতে ২ উইকেট আর ২৮.৩ ওভারের বেশি খরচ করতে হয়নি লাল-সবুজদের।

এতে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা জয়ের ধারা অব্যাহত থাকল বাংলাদেশের। দলটির বিপক্ষে টানা ১২ ম্যাচে অপরাজিত স্বাগতিকরা। ২০১১ সালে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি হারতে হয়েছিল। পরে এখানে এসে এখনও জয় দেখেনি জিম্বাবুয়ে।

দুইশর নিচের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো শুরুই করেছিলেন তামিম ও বিজয়। ২ বছর ১০ মাস পর ওয়ানডে দলে ফেরা এনামুল হক বিজয় সোজা ব্যাটে চার মেরে খাতা খোলেন। তার ঝড় তোলার আভাস অবশ্য ১৯ রানেই থেমে যায়। ১৪ বলের ইনিংসটিতে ছিল দর্শনীয় ৪টি চারের মার। অফস্পিনার সিকান্দা রাজার প্রথম ওভারের শেষ বলে স্লগসুইপ করতে যেয়ে মিডউইকেটে সীমানা ঘেঁষে দাঁড়ানো আরভিনের তালুতে জমা পড়েন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান।

পরে তামিমের সঙ্গে জুটিতে জমে যান সাকিব। দুজনে শেষ করেই আসতে পারতেন। সেটা হয়নি দলীয় শতক পেরোনোর পর সাকিব রাজার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হলে। এলবিডব্লিউর আবেদন ফিল্ড আম্পায়ার নাকচ করে দিলেও রিভিউ নিয়ে সফল হন রাজা। সাকিব-তামিমের জুটি থামে ৭৮ রানে। আর সাকিব ৫ চারে ৩৭ রানে।

তামিম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন। নিজের ৩৯তম ফিফটি পূর্ণ করে। ৮ চার ও এক ছক্কায় ৯৩ বলে সাজিয়েছেন তার ৮৪ রানের ইনিংসটি। আরেক অপরাজিত মুশফিকুর রহিম তখন ২৩ রানে।

এর আগে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় নতুন বল হাতে পেয়ে সাকিব প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন সলোমন মায়ার, ক্রেইগ আরভিনকে। দুই ব্যাটসম্যানই ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। প্রথম ওভারেই দুই উইকেট তুলে সাকিব যে ধাক্কাটা দিলেন, সেটি আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের চাপে গুটিয়ে যায় দুইশর আগেই।

অভিজ্ঞ হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে (১৫) ফেরান মাশরাফী। উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসে জমা পড়েছেন তিনি। ৩০ রানে তিন উইকেট হারিয়ে শুরুতেই কোণঠাসা অতিথিরা ব্রেন্ডন টেলর ও সিকান্দার রাজার জুটিতে লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা চালায়। মোস্তাফিজুর রহমানের মায়াবী কাটার সেটি সফল হতে দেয়নি।

দলীয় ৫১ রানের মাথায় দারুণ এক কাটারে টেলরকে বোকা বানান ফিজ। ইনকাট হয়ে আসা বলটি ব্যাটের কাছে আসতেই বেরিয়ে যেতে থাকে বাইরের দিকে। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে মুশফিকের গ্লাভসে। তিন বছর পর জিম্বাবুয়ের হয়ে ওয়ানডে খেলতে নামা টেলর ফেরেন ২৪ করে।

নতুন বছরের প্রথম ম্যাচে নিজের চেনা অস্ত্র কাটার ভালভাবেই ছুড়েছেন মোস্তাফিজ। তার কাটারে বারবার বিপর্যস্ত হতে হয়েছে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের।

শুরুতে কাটারের মুখে ধুঁকলেও আবার রাজার ব্যাটেই এসেছে সফরকারী ইনিংসের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৫২ রান। ৯৯ বলের সংগ্রামী ইনিংসে ছিল দুটি চার ও দুটি ছয়ের মার।

প্রথম স্পেলে ৮ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নেয়া সাকিব ডেথ ওভারে পান জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমারের উইকেট। ৪৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলার এ বাঁহাতি স্পিনার।

মাশরাফী ৯ ওভারে ২৯ রানে নিয়েছেন একটি উইকেট। ১০ ওভারের কোটা শেষ করে ২৯ রানে একটি উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম।

প্রথম স্পেলে চার ওভার বল করে উইকেটহীন ছিলেন রুবেল হোসেন। ইনিংসের শেষ দিকে নিজের পঞ্চম ওভার করতে এসে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। লেজ ছেঁটে দেন এ পেসার, ঝুলিতে ২৪ রানে দুই উইকেট।

শেষ উইকেটি মোস্তাফিজের। বোল্ড করেন জার্ভিসকে। ১০ ওভারে এক মেডেনে ২৯ রানে ২ উইকেট ফিজের। যাতে আগাগোড়াই মিশে থাকল চেনারূপে ফেরার আভাস।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.