নতুন খাবার সাউথ ইন্ডিয়ান‘রাজ কাচুরী’আফগান রেস্তোঁরায়

0

চট্টগ্রাম,সিটি নিউজ : ভোজন রসিকদের জন্য নতুন খাবারের পরিচিতি করাতে  চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো আফগান রেস্টুরেন্ট নিয়ে এসেছে ‘রাজ কাচুরী’ নামের সাউথ ইন্ডিয়ান খাবার। ভারতের পাশাপাশি ঢাকাতেও এই খাবারের জনপ্রিয়তা বেশ তুঙ্গে। দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের আফগান রেস্টুরেন্ট তাঁদের খাবারের মেন্যুতে এনেছে বেশকিছু পরিবর্তন। ‘রাজ কাচুরী’র মতো জনপ্রিয় আরও ১৯ পদের খাবার যুক্ত করা হয়েছে আফগানের নতুন মেন্যুতে।

আজ বুধবার ৩ অক্টোবর দুপুরে চট্টগ্রামের দুই নং গেইট এলাকার আফগান রেস্তোঁরায় ‘নতুন খাবারের পরিচিতি’ বিষয়ক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সনম্মেলনে জানানো হয়, ভারতীয় খাবার তৈরীতে পারদর্শী বিশেষ বাবুর্চি দিয়ে তৈরী করা হবে ‘রাজ কাচুরী’। স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু এই খাবারের পদটি খেতে গুণতে হবে ২২০ টাকা। তবে পুরো অক্টোবর মাসজুড়ে খাবারের এই পদটির জন্য দেওয়া হয়েছে ২০ শতাংশ ছাড়। সেক্ষেত্রে ১৭৬ টাকায় পাওয়া যাবে খাবারের এই পদটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন রেস্তোঁরার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আফগানের স্বত্ত্বাধিকারী সাফওয়ানুল করিম। আরো উপস্থিত ছিলেন ফারুক হোসেন,হাসান তারেক বাবুলসহ প্রমুখ।

সাফওয়ানুল করিম আফগান রেস্তোঁরা সম্পর্কে সাংবাদিকদের লিখিত বক্তব্যে জানান,আপনাদের ভালোবাসায় আফগান রেস্তোঁরা আজ দুই বছর পূর্তির দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে। ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর যাত্রা শুরু হয়েছিল আফগান রেস্তোঁরার। পথ চলার দুই বছরের শেষ প্রান্তে দাড়িয়ে সহজেই বলতে পারি, আপনাদের ভালোবাসায় আমরা মুগ্ধ।

আমরা জন্মলগ্ন থেকেই সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের জন্য বদ্ধ পরিকর ছিলাম এবং এখনো তা আছি। আমাদের আফগানী পোলাও, আফগান ফ্যামিলি প্ল্যাটারসহ বেশকিছু খাবার গেল দুই বছরে চট্টগ্রামবাসীদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। ভোজনরসিকরা শুধু নয়, পুরো চট্টগ্রামবাসীর জন্যই আফগান হয়ে উঠেছে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবারের জন্য একটি আস্থার জায়গা।
আমরা দাবি করতে পারি আমরা এগিয়ে চলেছি সকলের ভালোবাসায়। নতুবা দুই বছর ধরে সুনামের সাথে এভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা আমাদের পক্ষে কখনোই সম্ভব হতো না। আমাদের এখানে তরুণ-তরুণীরা যেমন আসে তেমনি পরিবার নিয়ে ছুটে আসেন বয়োজ্যেষ্ঠরাও। পারিবারিক ও বন্ধুত্বের আড্ডায় নিয়মিত মুখর থাকে আফগান রেস্তোঁরা।

তিনি জানান, মানুষ পরিবর্তন পছন্দ করে। আর খাবারের ক্ষেত্রে পরিবর্তন অবশ্যই প্রয়োজনীয়। সেই লক্ষ্যে আমাদের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে নতুন সাজে সাজিয়েছি আমাদেও খাবারের মেন্যু। পরিবর্তন এসেছে মেন্যুতে।

নতুন অনেক খাবারের পদ যেমন যোগ হয়েছে তেমনি বাদ পড়েছে পুরনো মেন্যুও অনেক আইটেম। নতুন মেন্যু অনুযায়ী এখন থেকে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের খাবার মিলছে আফগান রেস্তোঁরায়।
হালের জনপ্রিয় কাচ্চি বিরিয়ানি থেকে শুরু করে তার্কি বিরিয়ানি, আফগান বিরিয়ানি, পাকিস্তানি পেশ্ওয়ারী বিরিয়ানি ও ইরানী দম বিরিয়ানি নতুন করে যুক্ত হয়েছে আফগান রেস্টেুরেন্টের মেন্যুতে। সঙ্গে পুরনো মেন্যুর হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি তো আছেই।

পোলাওয়ের মতো এসব বিরিয়ানিও ভোজনরসিকদের কাছে জনপ্রিয়তা পাবে বলে আশা রাখছি। জনপ্রতি ইরানী দম বিরানী খেতে গুণতে হবে ২৫০টাকা। দুইজনের জন্য এই পদের দাম পড়বে ৫৫০টাকা।

সাফওয়ানুল করিম বলেন, পাকিস্তানি পেশোয়ারি বিরিয়ানি আমাদের নতুন সংযোজন হওয়া খাবারগুলোর মধ্যে একটি। স্বাদে অনন্য এই বিরিয়ানি জনপ্রতি ২৭০ টাকায় ও দুই জনের জন্য ৫৩০ টাকায় পাওয়া যাবে। আফগানি পোল্ওায়ের জনপ্রিয়তা মাথায় রেখে নতুনভাবে আনা হয়েছে আফগানি বিরিয়ানির পদ। জনপ্রতি ২৫০ টাকা ও দুইজনের জন্য ৪৯০ টাকা খরচ করে খাওয়া যাবে এই বিরিয়ানি।

টার্কি বড় আকারের গৃহপালিত পাখি। এদের উৎপত্তি উত্তর আমেরিকায়। ১৭০০ সালে যুক্তরাজ্যে ক্রস ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে টার্কি মুরগির জাত উৎপাদন করা হয়। বর্তমানে ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশে টার্কি মুরগি পালন করা হয়। তবে সবচেয়ে বেশি টার্কি পালন করা হয় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্যে। পশ্চিমা দেশগুলোতে টার্কি অধিক জনপ্রিয়। ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশের খাদ্যতালিকায় অন্যতম উপাদান টার্কি।

ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে ওঠার ছয় মাসের মধ্যে টার্কি ডিম দেয়। ছয় মাসের মেয়ে টার্কির ওজন হয় পাঁচ থেকে ছয় কেজি। আর পুরুষগুলো প্রায় আট কেজি। আমেরিকায় টার্কির রোস্ট অভিজাত খাবার। অনেকটা খাসির মাংসের মতোই এ মুরগির মাংসের স্বাদ। রান্নাও করা হয় কাচ্চির মতো দমে। টার্কি দিয়ে তৈরী করা যায় সুস্বাদু রোস্ট ও কাবাব। টার্কির মাংস অন্যান্য পাখির মাংস থেকে কম চর্বিযুক্ত, তাই অন্যান্য পাখির চেয়ে টার্কির মাংস অধিক পুষ্টিকর। এ মাংসে প্রোটিনের পরিমাণও অনেক বেশী। সুস্বাদু এই মুরগির রোগ বালাইও তেমন হয় না। সব মিলিয়ে টার্কির মাংস দিন দিন আমাদের দেশেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

নতুন এই মেন্যুতে যুক্ত হয়েছে টার্কি দিয়ে তৈরী হরেক রকম প্ল্যাটার। এর মধ্যে জনপ্রতি মাত্র ২৯০ টাকা খরচ করে উপভোগ করতে পারবে টার্কি বিরিয়ানির স্বাদ। এছাড়াও বিশেষ টার্কি বিরিয়ানি মিলবে ৬৯০ টাকায়। যেটি দুইজন অনায়াসেই খেতে পারবে। এছাড়াও হালের জনপ্রিয় কাচ্চি বিরিয়ানি মিলবে জনপ্রতি ২৭০ ও দুইজনের জন্য ৬৬০ টাকায়।

নতুনভাবে শুধু বিরিয়ানি নয়। আমাদের নতুন যুক্ত হওয়া খাবারের পদের মধ্যে রয়েছে সাউথ ইন্ডিয়ান ও ইতালিয়ান বিভিন্ন খাবারের পদ। আমাদের পথচলার নতুন বছরের আগমনী বার্তাকে ছড়িয়ে দিতে আমরা চট্টগ্রামে প্রথম এনেছি সাউথ ইন্ডিয়ান খাবার ‘রাজ কাচুরী’। এ খাবারটি ভারতে বেশ জনপ্রিয়। ঢাকায়ও ভোজনরসিকদের মধ্যে এই খাবারের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম এই খাবারের পদটি পরিবেশন করতে যাচ্ছি আমরা। ভারতীয় খাবার তৈরীতে পারদর্শী বিশেষ বাবুর্চি দিয়ে তৈরী করা হবে ‘রাজ কাচুরী’। স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু এই খাবারের পদটি আপনারা খেতে পারবেন মাত্র ২২০ টাকা খরচ করে। যেহেতু প্রথমবারের মতো আমরা চট্টগ্রামে এই খাবারের পদটি পরিচিত করতে যাচ্ছি তাই শিক্ষার্থী ও ভোজনরসিকদের কথা চিন্তা করে শুধুমাত্র খাবারের এই পদটির জন্য দেওয়া হয়েছে ২০ শতাংশ ছাড়। ২০০টাকায় পুরো অক্টোবরজুড়ে পাওয়া যাবে এই ‘রাজ কাচুরী’।

শুধু রাজ কাচুরী নয়, আমাদের নতুন মেন্যুতে যুক্ত হয়েছে পাপড়ি চাট। এই খাবারের পদটি ভারত ও বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়। মাত্র ১৫০ টাকা খরচ করে পাওয়া যাবে সত্যিকারের ভারতীয় পাপড়ি চাটের স্বাদ।

এসবের পাশাপাশি ভারতীয় খাবার তৈরীতে পারদর্শী বিশেষ বাবুর্চি দিয়ে তৈরী করা হবে মাসালা চিকেন দোসা, মাসালা চিকেন বাটার দোসা, মাসালা চিজ দোসা ও প্লেইন দোসা। এসব দোসা পাওয়া যাবে ২০০ থেকে ২৬০ টাকার মধ্যে।

সত্যিকারের দোসার স্বাদ পেতে হলে ভোজনরসিকদের ফুটে আসতে হবে আফগান রেস্তোঁরায় এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের। আফগানের নতুন মেন্যুতে যুক্ত হয়েছে ফুচকা প্ল্যাটার, চিকেন ফুচকা প্ল্যাটার, দই ফুচকা ও দই বড়ার মতো নতুন খাবারের পদ। এছাড়াও ডেজার্ট, জুস, বিভিন্ন রকমের সালাদ, রাইস মিল, অ্যাপিটাইজার, কাবাব, আফগানী প্ল্যাটার, সী ফুডসহ প্রায় ৩০০ পদের খাবার রয়েছে আমাদের নতুন মেন্যুতে।

শুধু রেস্টেুরেন্টে এসে আড্ডা দিতে দিতে খ্ওায়া নয়। জন্মদিন, বিয়ে কিংবা যে কোন অনুষ্ঠানে খাবারের জন্য ক্যাটারিং সার্ভিসের ব্যবস্থাও শুরু করেছি আমরা।

আমরা বিশ্বাস করি খাবারের মধ্য দিয়ে আনন্দ পাওয়া যায়। আমরা সুস্বাদু খাবার আপনাদের মাঝে পরিবেশন করে আনন্দ ও তৃপ্তি লাভ করি। তাই জন্মলগ্ন থেকেই আমাদের স্লোগান ‘ফুড এন্ড ফান’। আমরা সবসময় চেষ্টা করি আমাদের গ্রাহকদের সন্তুষ্টির। আমরা আফগান পরিবার আমাদের গ্রাহকদেরও পরিবারের অংশ ভাবি। তাই খাবার তৈরী থেকে শুরু করে পরিবেশন পর্যণÍ প্রতিটি ধাপেই হাইজেনিক মেনটেইন করি আমরা। হয়তো সেকারণেই দুই বছর পূর্তিও দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে সকলের ভালোবাসায় সিক্ত আমরা। আমরা কৃতজ্ঞ সকলের প্রতি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.