নূর আহমেদ’র মত পরিশুদ্ধ শ্রমিক রাজনীতিক বড় প্রয়োজনঃ মেয়র

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ  চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. জ. ম. নাছির উদ্দিন বলেন, শ্রমিক রাজনীতির নির্লোভ ব্যাক্তিত্ব প্রয়াত নূর আহমেদ পতেঙ্গা, হালিশহর, স্টিল মিল, কুমিরা, বাবরকুন্ড ও সীতাকুন্ড এলাকায় দুঃসময়ের শ্রমজীবী জনতার বিজয় পতাকা উড়িয়ে ছিলেন। তিনি আমৃত্যু নীতিচ্যুত হননি। আজকে শ্রমিক রাজনীতিতে নেতৃত্ব সবসময় ক্ষমতাসীন সরকারের আনুকল্য চায়। এই অরাজনৈতিক চর্চা থেকে তিনি বিরত থেকে ছিলেন।

সোমবার বিকেলে নগর ভবনস্থ কে.বি. আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর আহমেদ স্মৃতি সংসদ আয়োজিত সাবেক জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দু’বারের নির্বাচিত সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জননেতা নূর আহমেদ’র ২৭ তম মৃত্যু বাষির্কী উপলক্ষে স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

তিনি আরো বলেন, সত্যিকার অর্থে বাস্তবতা হলো শ্রমিক রাজনীতির সবসময় ক্ষমতাসীন দলের পক্ষাশ্রয়ী, অথচ দেখা গেছে এই শ্রমিক রাজনীতির অংশ হিসেবে সিবিএ বা নন-সিবিএতে আমাদের পক্ষে যারা আছেন কিন্তু স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক পরিচয় ভিন্ন দলের। এমনকি তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শক্তির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, তাদেরকেও আমরা চিনি।

এটাও আরেকটি কঠিন বাস্তবতা হলো দলের দুঃসময়ের এরা আমাদের সাথে থাকবে না। এরা সুসময়ের সুবিধাভোগী। তারপরেও বলব শ্রমজীবী জনতার পরিশ্রম ও ন্যায্য পাওনার ক্ষেত্রে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে মূল শক্তি আওয়ামী লীগ। কোনো অপশক্তির কাছে আপোষ করবে না। তিনি প্রয়াত শ্রমিক লীগ নেতা নূর আহমেদ’র প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, এই মানুষটি বঙ্গবন্ধুর কাছের লোক ছিলেন। কঠিন দুঃসময়েও রাজনৈতিক পরিচয় বদল করেননি।

তিনি স্বৈরশাসক জিয়াউর রহামন ও এরশারেদ দলের যোগদানের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শীক চেতনাকে অন্তরে ধারণ করেছিলেন। তাই তাঁর কাছে আমাদের শিক্ষনীয় অনেক কিছু আছে। এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারলে শ্রমিক রাজনীতি পরিশুদ্ধ হবে। তারাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শ্রমজীবী জনতার মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। বিশেষ অতিথির ভাষণে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, শ্রমিক লীগ বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির মঞ্চ। এই মঞ্চের একজন নিবেদিত সৈনিক হিসেবে প্রয়াত শ্রমিক নেতা নুর আহমেদ আমৃত্যু নিবেদিত ছিলেন।

এখন যারা শ্রমিক লীগের সাথে সম্পৃক্ত তাদেরকে নুর আহমেদ ভাইয়ের পথ অনুসরণ করতে হবে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য শেখ মাহমুদ ইসহাক বলেন, আজ বলতে দ্বিধা নেই নুর আহমেদ’র মত ত্যাগী শ্রমিক নেতার অভাব এখনো পূরণ হয়নি। তার অর্থবিত্তের অভাব ছিল না। এই অর্থবিত্ত তিনি শ্রমিক জনতার স্বার্থে বিলিয়ে দিয়ে গেছেন। এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করলে অবশ্যই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশে শ্রমিক জনতার বিজয় সুনিশ্চিত হবে।

তাই আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য শ্রমজীবী জনতাকে তাঁদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। স্মরণানুষ্ঠানে প্রয়াত শ্রমিক নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নুর আহমেদের সুযোগ্য সন্তান সাবেক ছাত্রনেতা এম.এ. মান্নান শিমুল বলেন, আমার বাবাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। তিনি শ্রমজীবী জনতার ভালোবাসা পেয়েছিলেন। ছোটবেলা থেকে দেখেছি ঘর বাড়ি ফেলে শ্রমিক জনতার কল্যাণে ছুটে গিয়েছিলেন। তাই তাঁকে কাছের সান্নিধ্যে না পেলেও তিনি যে জনতরঙ্গে নিবেদিত এটাই আমাকে শ্রমজীবী জনতার সেবায় আকর্ষিত করেছে।

তাই আমি ধন্য। সভাপতির ভাষণে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নূর আহমেদ একজন নিবেদিত প্রাণ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব। তিনি আমার বাবা জহুর আহমেদ চৌধুরীর সাথে শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকায় রাজনীতি করেছেন। তার কাছ থেকে আমি শ্রমজীবী জনতার মুক্তির বার্তা খুঁজে পাই।

স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন প্রয়াত শ্রমিকনেতা নুর আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারি হিসেবে শ্রমজীবি মানুষের অর্থনৈতিক লড়ায়ে নিবেদিত ছিলেন। চট্টগ্রামের সকল শিল্পাঞ্চলে তাঁর বিচরণ ছিল মুক্ত বিহঙ্গের মত। এ মানুষটি এতই মহাপ্রান যিনি মৃত্যুর পরও মহিয়ান।

তিনি সুদুরের অতীত নয়। স্মরনে বরনে বর্তমান। জাতীয় শ্রমিক লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য কামাল উদ্দিন চৌধুরী সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রয়াত শ্রমিক নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর আহমেদের স্মরণানুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মরহুমের সুযোগ্য কন্যা লতিফা সিদ্দিকা ডিগ্রী কলেজের ইংরেজী বিভাগের প্রফেসর পারভিন আকতার, উপস্থিত ছিলেন মরহুমের সহধর্মিনী শামসুন নাহার।

আরো বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হাজী বেলাল আহমদ, জাফর আলম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান ফেরদৌস, মহানগর যুবলীগের সদস্য সুমন দেবনাথ, ওয়াহিদুল আলম সুমন, মীর আবদুর রহমান মামুন, আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী, হাবিব উল্লাহ ভাষ্কর, রেলওয়ে শ্রমিকলীগ নেতা মো.লিটন,নিউ মার্কেট শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. আলমগীর, টেরীবাজার হকার সমিতির সাধারন সম্পাদক লোকমান হাকিম, মেট্টো হকার্স শ্রমিক নেতা দুলাল, কোতোয়ালী জাতীয় শ্রমিকলীগ নেতা মো. জসিম উদ্দিন পেশাজীবি নেতা এস এম সিরাজুল ইসলাম,সাবেক ছাত্রনেতা নুর-ই ইসলাম সোহেল, হাসান ফারুক, এস এম ওহিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা বিজন কান্তি নাথ, রুবেল আহমেদ বাবু, আবু সুফিয়ান, এম জাহেদ পলাশ। আরো উপস্থিত ছিলেন শেখ জসিম উদ্দিন গাজী, শাহানারা বেগম পারুল, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, মো. বাবুল হক বাবর, মো. ফারুক চৌধুরী, মাহির আহমেদ লাবির, মোবাশ্বের আহমেদ লাবিব আবদুল্লাহ প্রমূখ। স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রয়াত নুর আহমেদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন সেগুন বাগান তালিমুল উলুম কমপ্লেক্স এর চেয়ারম্যান হাফেজ মাওলানা তৈয়ব শাহ (বড় হুজুর)।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.