নেপালে বিমান দুর্ঘটনা: যথাযথ সরঞ্জামের অভাবেই প্রাণহানি?

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: ইউএস বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নেপালের বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে সে দেশেরই সংবাদমাধ্যম হিমালয়ান টাইমস। উদ্ধার অভিযানে থাকা উদ্ধারকর্মী, ময়না তদন্তে নিয়োজিত ডাক্তার, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ এবং বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রকে উদ্ধৃত করে তারা প্রশ্ন তুলেছে সেদিনের জরুরি ব্যবস্থাপনা নিয়ে। শনিবারের ওই প্রতিবেদনে নেপালের ইংরেজি দৈনিকটি দাবি করেছে, উদ্ধারকর্মীরা যথাযথ সরঞ্জাম পেলে অনেকের জীবন বাঁচানো যেত।
উদ্ধার অভিযানের সঙ্গে জড়িত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অগ্নিনির্বাপক কর্মী বলেছেন, যে ২২ জনকে সেদিন জীবিত উদ্ধার করা হয়, তাদের বেশির ভাগকেই উদ্ধার করা হয় এমন জায়গা থেকে যেখানে আগুনই ধরেনি। তারা উড়োজাহাজটি ও তার আশপাশের জ্বলন্ত আগুনের কাছে যেতেই পারেননি। কারণ আগুনের কাছে যাওয়ার মতো তাদের উপযুক্ত সরঞ্জাম ছিল না। অথচ এই ধরনের পরিস্থিতিতে ওইসব সরঞ্জাম থাকা বাধ্যতামূলক। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের নিয়মনুযায়ী ঘটনার তিন মিনিটের মধ্যে ওইসব সরঞ্জাম সরবরাহ করা বাধ্যতামূলক। ওই উদ্ধারকর্মী বলেন, ‘অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি অগ্নিনির্বাপক স্যুট না থাকায় আমাদের আধা ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।’

ময়নাতদন্তে নিয়োজিত ত্রিভুবন ইউনির্ভাসিটি টিচিং হাসপাতালের চিকিৎসকদের উদ্ধৃত করে হিমালয়ান টাইমস বলছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় যে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই বিষাক্ত ধোঁয়ায় শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। কারণ বিধ্বস্তের পর বেশ চাপের মধ্যেও তারা অনেক সময় বেঁচে ছিলেন। অন্য এক উদ্ধারকারী হিমালয়ান টাইমসকে বলেন, ‘আমরা তাদেরকেই বাঁচাতে পেরেছি যারা ভাগ্যক্রমে আগুন থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।’

সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব নেপালের (সিএএএন) কর্মকর্তারা বিষয়টি স্বীকারও করেছেন যে, উদ্ধারকারীদের জন্য শুধু অগ্নিনির্বাপক স্যুট ইস্যু করা হয়েছে, যা ত্রিভুবন বিমানবন্দরের ওইদিনের ঘটনার জন্য যথেষ্ট ছিল না। সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মূলত যেখানে আগুন ছিল, সেখানে যাওয়ার মতো পোশাক ও সরঞ্জাম থাকলে তারা (উদ্ধারকারী) আরো মানুষকে জীবিত উদ্ধার করতে পারতো।’

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, উড়োজাহাজটি সোমবার ২টা ১৮ মিনিটে পৌঁছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে বিস্ফোরণ ঘটে। বেলা ৩টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে এবং ৫টা ৪৫ মিনিটি নাগাদ সব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ২৯ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিক শাহরিন আহমেদ বলেছেন, তিনি দেখেছেন- অন্যান্য যাত্রীরা পুড়ছে, চিৎকার করছে এবং মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.