পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং চলে গেলেন
সিটি নিউজ ডেস্কঃঃ বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং চলে গেলেন। ৭৬ বছর বয়সে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়স্থ বাসভবনে তিনি মারা যান। ব্রিটিশ এই বিজ্ঞানী কৃষ্ণগহ্বর এবং আপেক্ষিকতা তত্ত্ব নিয়ে তাঁর কাজের জন্য বিশ্ববিখ্যাত ছিলেন।
স্টিফেন হকিং-এর তিন সন্তান লুসি, রবার্ট ও টিম বলেন ‘আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমাদের প্রিয় বাবা আজ মারা গেছেন। তিনি একজন বড় বিজ্ঞানীই ছিলেন না তিনি ছিলেন একজন অসাধারণ মানুষ, যাঁর কাজ বহু বছর বেঁচে থাকবে।’ পরিবারের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে আজ বুধবার সকালে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
২১ বছর বয়স থেকেই দূরারোগ্য মটর নিউরন রোগে ভুগছেন হকিং। কিন্তু শারীরিক অক্ষমতা তাঁকে বিখ্যাত হওয়া থেকে রুখতে পারেনি। হকিংয়ের বাবা ফ্র্যাঙ্ক হকিং ছিলেন জীববিজ্ঞানের গবেষক। আর মা ইসাবেল হকিং ছিলেন একজন রাজনৈতিক কর্মী। বাবা চেয়েছিলেন হকিং বড় হয়ে চিকিৎসক হোক। কিন্তু ছেলেবেলা থেকেই হকিংয়ের আগ্রহ বিজ্ঞানে আর গণিতে।
মহাবিশ্ব সৃষ্টির রহস্য ‘বিগ ব্যাং থিওরি’র প্রবক্তা স্টিফেন হকিং। হকিং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসিয়ান অধ্যাপক পদ থেকে ২০০৯ সালে অবসর নেন। তিনি ক্যামব্রিজের গনভিলি ও কেয়াস কলেজের ফেলো হিসেবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। রয়্যাল সোসাইটি অব আর্টসের সম্মানীয় ফেলো এবং পন্টিফিকাল একাডেমি অব সায়েন্সের আজীবন সদস্য তিনি।
১৯৮৮ সালে ‘এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ বইয়ের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত হয়ে ওঠেন হকিং। বইটিতে তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য নিয়ে তত্ত্ব দেন। আন্তর্জাতিকভাবে বেস্ট সেলার হিসেবে বইটির এক কোটি কপি বিক্রি হয়। মহাবিশ্ব নিয়ে প্রকাশিত তাঁর সর্বশেষ বই ‘দ্য গ্র্যান্ড ডিজাইন।’
১৯৭৪ সালে বিকিরণতত্ত্ব দেন হকিংস, যা ‘হকিংস রেডিয়েশন’ নামে পরিচিত।
১৯৬৩ সালে স্টিফেন হকিংস মোটর নিউরনে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর চিকিৎসক বলেছিলেন, আর মাত্র দুই বছর বাঁচবেন তিনি। কিন্তু সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে ৭৬ পূর্ণ করেছিলেন এই বিজ্ঞানী।
আইনস্টাইনের পর হকিংকে সবচেয়ে প্রভাবশালী পদার্থবিদ হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রিন্স অব অস্ট্রিয়ান্স পুরস্কার, জুলিয়াস এডগার লিলিয়েনফেল্ড পুরস্কার, উলফ পুরস্কার, কোপলি পদক, এডিংটন পদক, হিউ পদক, আলবার্ট আইনস্টাইন পদকসহ এক ডজনেরও বেশি সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করেন তিনি।