পুলিশের তল্লাশি বাণিজ্য জমজমাট

0

দিলীপ তালুকদার,সিটি নিউজ : চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কতিপয় সদস্য তল্লাশী বাণিজ্য চালাচ্ছে নগরীতে। পবিত্র রমজান মাসেও পুলিশ চাঁদাবাজীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কোতোয়ালীর একজন ফুটপাত ব্যবসায়ী নাছের উল্লাহ বললেন, এই রমজান মাসেও থেমে নেই তাগো চাঁদাবাজি। এই ছোয়াবের মাসে পুলিশ চরম ঘৃন্যতম কাজে লিপ্ত রয়েছে। ইফতার বা সেহেরীর সময় ছাড়াও যখন তখন পুলিশের অবৈধ তল্লাশি কাম্য নয়। তল্লাশীর নামে টাকা পয়সা ও দামী মোবাইল সেট হাতিয়ে নিচ্ছে।

নগরীর নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া নগর পুলিশের প্রধান কর্তব্য হলেও এখন তল্লাশী বাণিজ্যকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে গ্রহন করেছেন। তল্লাশির নামে সাধারণ পাবলিকের পকেটের টাকা, মানি ব্যাগ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে নাগরিক নিরাপত্তা বিধানে পুলিশকে স্থায়ী বা অস্থায়ী চেক পোষ্ট বসিয়ে সন্দেহ ভাজন ব্যাক্তি বা যানবাহনে তল্লাশীর যে আইনি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে সেটার পুরোটাই অপব্যাবহার করছে পুলিশ।

নগরীর যত্রতত্র চেক পোষ্ট বসিয়ে সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি করছে। অর্থ আদায় করারও অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এমনটি টাকা না দিলে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোরও হুমকি দেয়া হয়। পুলিশের তল্লাশীর খপ্পরে পড়া অনেক ভূক্তভোগীরা জানান, রাস্তায় চলাচলরত হঠাৎ করে ডাক দিয়ে কাছে এনে শরীরে তল্লাশি শুরু করে দেয় পুলিশ। অবৈধ কিছু না মিললেও টাকা পয়সা কেড়ে নেওয়া হয়। কেন টাকা নিয়ে নেওয়া হল এ প্রশ্ন করা হলে উল্টো মামলায় জড়ানো হুমকি দিয়ে চলে যেতে বলে।

পুলিশের নিয়োগ করা কতিপয় সোর্স এ কাজে সর্বাত্মক সহযোগীতা করেন বলে এক ভূক্তভোগী জানান। এসব সোর্সরা নিজেরাও অপরাধী। জানা গেছে, ফৌঁজদারি কার্যবিধির ১০৩ ও ১৬৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যাক্তির আচরণ ও গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলেই ওই ব্যক্তিকে তল্লাশী করার বিধান পুলিশের রয়েছে। তবে তল্লাশির সময় ২জন গন্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক । কিন্তু দেখা গেছে, যেখানে সেখানে পুলিশের তল্লাশির কারনে অনেকের জরুরী কোন কাজ থাকলেও রাতে বের হননা। পুলিশের প্রতি জনগনের শ্রদ্ধা ভক্তি বলা চলে শুণ্যের কোটায়।

কতিপয় পুলিশের অতিরিক্ত টাকা কামানোর ধান্ধার কারনে নগরের নাগরিকদের কাছ থেকে কোন ধরনের সহানুভূতি আদায় করতে পারছেন না পুলিশ। পুলিশের কতিপয় সদস্য বা ট্রাফিক পুলিশ তারা শুধু টাকার পেছনে দৌড়ছেন, নগরীর আইন শৃংখলা, যানজট নিরসনে কোন পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে না। নগরীর দীর্ঘ যানজট হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের অবহেলার কারনে। তাদের নিয়োগকৃত লোকদের মাধ্যমে প্রতিটি গাড়ীথেকে ১০টাকা থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত টাকা আদায় করছে। যার কারনে পেছনে পড়ে দীর্ঘ যানজট।

অন্যদিকে পুলিশী শেল্টারে নগরীতে চলছে নাম্বার বিহীন প্রাইভেট সিএনজি। প্রায় দেড় হাজার এ ধরনের প্রাইভেট সিএনজি নগরীতে চলছে। প্রতি সিএনজি থেকে মাসিক ৫হাজার টাকা টোকেন ফি নিচ্ছে পুলিশ। এ হিসেবে শুধু প্রাইভেট সিএনজিগুলো থেকে পুলিশের মাসিক আয় হচ্ছে প্রায় পৌনে কোটি টাকা। বিআরটিএর রেজিস্ট্রেশন ভূক্ত সিএনজিগুলোতে গ্রীল থাকলেও প্রাইভেট সিএনজিগুলোতে কোন গ্রীল নেই। যার কারনে এসমস্থ সিএনজির যাত্রীরা ছিনতাইয়েরও শিকার হচ্ছে। এসব প্রাইভেট সিএনজিগুলো কোন চেক পোষ্ট তল্লাশি করে না। কারণ সড়কে কর্মরত সবাই জানে এগুলো টোকেন ফি’তে চলে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.