প্রযুক্তিপণ্য দেশেই তৈরি হোক: প্রধানমন্ত্রী

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: সবাণিজ্যে বসত লক্ষ্মী-এই প্রবাদ স্মরণ করিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে নতুন নতুন দেশে নতুন নতুন পণ্য নিয়ে হাজির হতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, তিনি চান তথ্যযুক্তি পণ্য যেন বাংলাদেশেই উৎপাদিত হয়।

নতুন বছরের প্রথম দিন ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন। একই অনুষ্ঠানে ওষুধ শিল্প এবং ওষুধের কাঁচামালকে প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার হিসেবেও ঘোষণা করেন তিনি।

শেরেবাংলানগরে বাণিজ্যমেলার পাশেই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকাল ১০টায় এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। আর এরপর প্রধানমন্ত্রী বরাবরের মতো মেলা ঘুরে দেখেন এবং তিনি মেলা প্রাঙ্গণ ছেড়ে যাওয়ার পর তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

এবারের বাণিজ্য মেলায় ৫৮৯টি বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন ও স্টল করা হয়েছে। এতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিদেশি নানা প্রতিষ্ঠানও অংশ নিয়েছে।

প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে এই মেলা। দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে এই ধরনের আয়োজনকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বর্তমান সরকারের আমলে রপ্তানি আয় ১৪ বিলিয়ন থেকে ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নয়ত হয়েছে জানিয়ে এই আয় বাড়াতে পণ্যের বহুমুখীকরণ, বিদেশে নতুন বাজার খোঁজার তাগাদা দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পণ্যের মান রক্ষা, যুগোপযোগী করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যের সঙ্গে যারা জড়িত, আমাদের নতুন নতুন পণ্য যেমন উৎপাদন করতে হবে এবং আমাদের পণ্যের বাজারটা বাড়াতে হবে। কী কী পণ্য আমরা রপ্তানি করতে পারি, বিশ্বের কোন দেশে কোন পণ্যের বাজার আছে, চাহিদা কোথায় কী, সেটাও আমাদের বের করতে হবে। সেগুলো খুঁজে বের করে নতুন নতুন পণ্য পণ্য উৎপাদন করতে হবে।’

এ ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তিপণ্যের বিষয়টি ‍তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘বর্তমানে আইসিটির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ আট কোটি মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। মোবাইলের কথা তো… ১৬ কোটি মানুষের দেশে যদি ১৩ কোটি সিম ব্যবহার করা হয়…কেউ একটা না, দুইটা-তিনটা মোবাইল ব্যবহার করে। এসব পণ্য তো আমরা নিজেদের দেশে তৈরি করতে পারি।’

‘এখানে কিছু কিছু অ্যাসেম্বলড হচ্ছে, কিন্তু এটাকে আমরা আরও বেশি গুরুত্ব দিতে পারি। আইসিটি সেক্টরটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আমাদের রপ্তানিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সেই সঙ্গে অন্যান্য পণ্যেও দৃষ্টি দিতে হবে।’

বাণিজ্য বাড়াতে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও যোগাযোগ, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বৃদ্ধি, ১২টি দেশে নতুন দূতাবাস খুলে দিয়ছি এবং ১৭টা মিশন খোলার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ব্যবসা বাণিজ্যের এবং বিনিয়োগের দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে।

‘শুধু এক দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না, আমাদেরকে নতুন নতুন দেশ, নতুন নতুন জায়গা, নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। সেসব দেশে নতুন কী কী পণ্য রপ্তানি করা যায়, সেটাও খুঁজে বের করতে হবে। তাহলেই আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে।’

উন্নয়নের জন্য শিল্পায়নের দিকে যেতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষিকেও কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। এদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের নীতিমালা নিতে হবে।

বাংলাদেশে শিল্পায়নের জন্য ১০০টি বিশেষ অঞ্চল করার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, কৃষির সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক উৎপাদিত পণ্য আমরা প্রক্রিয়াজাত করে নিজেদের দেশে ব্যবহার করার পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করতে পারি-এটাই আমরা চাই।

ব্যবসায়ীদের নিজেদের স্বার্থেই সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তাহলেই তারা পণ্য কিনতে পারবে। সরকারের অর্থনৈতিক নীতিমালায় গ্রামকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এই সমুদ্র সম্পদকে কাজে লাগানোর তাগিদও দেন শেখ হাসিনা। বলেন, সমুদ্র সম্পদ আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে বিরাট অবদান রাখতে পারে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.