প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক বেঞ্চে ৭ শিক্ষার্থী!
ছাদেকুর রহমান সবুজ, বোয়ালখালী : চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ১৯৩২ সালে ৪০শতক জায়গার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় পশ্চিম গোমদ-ী বশরত নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে শিক্ষার আলো বিতরণ করে আসছে এ এলাকায়। চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় এটিই একমাত্র প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত সম্প্রসারিত বিদ্যালয়।
২০১৩ সালে ৫ম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উন্নত করা হয় এ বিদ্যালয়টিকে। ফলে জেএসসি ও পিএসসিতে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। চলতি বছরে খোলা হয় বিদ্যালয়ে সততা স্টোর। রয়েছে সুবিস্তৃত মাঠ। এ মাঠে প্রতিদিন এ্যাসেম্বলি হয় সারিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের নিয়ে। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, জাতীয় দিবস সমূহে নানান অনুষ্ঠান, মা ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়ের এ মাঠে।
বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা শফিকুন্নেছা বলেন, বিদ্যালয়ে ৯টি শ্রেণি যুক্ত করা হলেও বাড়ানো হয়নি শ্রেণি কক্ষ। প্রতিটি শ্রেণিতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। গাদাগাদি করেই চলে পাঠদান। বর্তমানে প্রায় ১১শত শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠ গ্রহণ করছে। দুইটি ভবনের ৭টি কক্ষ। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো.ইব্রাহীম বিদ্যালয় পাশ্ববর্তী সাইক্লোন সেন্টারের নিচতলায় অস্থায়ীভাবে টিন ও বাঁশের বেড়া দিয়ে আরো তিনটি কক্ষ তৈরি করে দিয়েছেন।
এরমধ্যে একটি কক্ষে বিদ্যালয়ে নিযুক্ত ১৫জন শিক্ষক ও ১জন কর্মচারী, প্রয়োজনী শিক্ষা উপকরণ, আলমিরাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম নিয়ে জটলা পাকিয়ে বসেন। নড়চড়ের উপায় যেন নেই এ কক্ষে। দুইটি কক্ষ জরাজীর্ণ। বাকি কক্ষগুলোতে থাকা প্রতি বেঞ্চে ৭-৮জন শিক্ষার্থীদের বসতে হয় গাদাগাদি করে।
বেঞ্চ সংকট, শ্রেণি কক্ষ সংকটসহ নানা প্রতিকূলতার মাঝেও শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকদের আন্তরিক প্রচেষ্ঠায় বরাবরের মতোই ভালো ফলাফল করছে শিক্ষার্থীরা। এ বিদ্যালয়ে বিশেষ প্রশিক্ষিত ও উচ্চতর ডিগ্রিধারী শিক্ষকরা পাঠদান করে আসছেন। পরিচালিত হয় মাল্টিমিডিয়া ক্লাস।
প্রধান শিক্ষক লিটন দাশগুপ্ত বলেন, শ্রেণি কক্ষ, বেঞ্চ সংকটসহ নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে চলছে শ্রেণিকার্যক্রম। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর বিপরীতে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ, বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরী, ইবাদতখানা, মিলনায়তন, প্রাক-প্রাথমিকের জন্য বিশেষায়িত কক্ষসহ আরো শিক্ষক-কর্মচারীর প্রয়োজন রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসব পরীক্ষায় অংশ নেয়া শির্ক্ষাথীদের প্রস্তুত করতে ও অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খেতে হয়। এ্যাসম্বেলির সময় মাঠে সংকুলান হয় না শিক্ষার্থীদের আর ছোট ছোট কক্ষে কি অবর্ণনীয় কষ্ট করতে হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহীম জানান, বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরসহ ভবনের খুবই প্রয়োজন। যদি এসব সংকট নিরসন করা যায়। তবে এ বিদ্যালয় একটি মডেল বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এ এলাকার শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগ লাগবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।