বইমেলা জ্ঞানের বিকাশের জন্য

0

নিজস্ব প্রতিনিধি,সিটিনিউজ :  আন্জুমানে খোদ্দামুল মুসলেমীন ট্রাস্টি বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মুসর্লিম ইনস্টিটিউট হল চত্বরে ৮ দিন ব্যাপি বইমেলা ও চিত্র প্রদর্শনীর সমাপনী দিবস ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ও বই মেলা আয়োজন কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আবু তালেব বেলালের সভাপতিত্বে অনুর্ষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বইমেলা আয়োজন কমিটি সদস্য সচিব স উ ম আবদুস সামাদ।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ (আহসান সাইয়্যেদ)। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজনীতিবিদ পীরে তরিকত আল্লামা সৈয়দ মোজাফ্ফর আহমদ মোজাদ্দেদী, রাজনীতিবিদ কাজী মুহাম্মদ সোলায়মান চৌধুরী। প্রধান আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার অধ্যক্ষ মুফতি আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ অছিউর রহমান। বিশেষ আলোচক ছিলেন, সংগঠক এম এ মাবুদ, পীরজাদা মাওলানা মুহাম্মদ গোলামুর রহমান আশরফ শাহ্, শিল্পপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ নঈম উল ইসলাম, মাওলানা মুহাম্মদ আশরফ হোসেন, মুহাম্মদ হাবিবুল মোস্তফা ছিদ্দিকী, জিএম শাহাদত হোসাইন মানিক।

সভায় বক্তারা বলেন, বইমেলা জ্ঞানের বিকাশের জন্য। বই একুশ শতকের সম্পদ। জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে পরিচিত হওয়ার মাধ্যম। খলিফা মামুনুর রশিদের সময়ের বায়তুল হিকমা সারা বিশ্বের সেরা লাইব্রেরি ছিল। তাই বিশ্বে মুসলমানদের মাঝে লেখক-গবেষক, কবি-সাহিত্যিক ছিল বেশি। বর্তমানে আমার বই পড়া ছেড়ে দেওয়ায় ঐতিহ্য হারিয়েছি।

বর্তমানে আমেরিকায় ১৫ লক্ষ বিজ্ঞানী, কানাডায় ৭ লক্ষ বিজ্ঞানী রয়েছে। অথচ, ৫৭ টি মুসলিম দেশে মিলে আড়াই লক্ষ বিজ্ঞানী। বক্তারা আরো বলেন, জীবনকে উপভোগ করতে হবে। একটি কবিতা পড়ে, একটি গল্প পড়ে, একটি সাহিত্য পড়ে জীবনকে উপভোগ করা যায়। বাঁচতে হলে হৃদয়ের কথা বার বার শুনতে হয়। অন্ধকারকে তাড়াতে হলে আলোকে আনতে হয়। আসলে অন্ধকার বলে কিছুই নাই। আলোর অনুপস্থিত। আমাদের জীবনে ৩টি বিষয় প্রয়োজন, তা হলো বই বই বই। জ্ঞানীদের সাথে বসতে হলে বইয়ের সাথে বসতে হবে।

তবেই কবি, সাহিত্যিক, জ্ঞানী-গুণীর সাথে পরিচয় হবে। জ্ঞানীদের জন্য বাংলাদেশ ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেই জ্ঞান আমরা চাই না, চাই সে জ্ঞান, যে জ্ঞান আমাদের মানুষে রূপান্তর করবে। মানব জাতির গাইডলাইন মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে মালিকে হাকিকি স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, “পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন”।

হাবিবে কিবরিয়া নবী মুহাম্মদ (দ.) ইরশাদ করেন, প্রত্যেক নর-নারীর জন্য জ্ঞান অর্জন করা ফরজ। কুরআন ও হাদিসের ভাষ্যমতে কোন তর্কহীনভাবে মেনে নিতে হবে ব্যক্তিজীবনে জ্ঞানার্জন ফরজে আইন। জ্ঞানের মূল উৎস পবিত্র কুরআন। যেখানে সৃষ্টির সূচনা থেকে সর্বশেষ সর্ব বিষয়ে আলোচিত হয়েছে। ব্যক্তি জীবনে, পারিবারিক জীবনে, সামাজিকভাবে সর্বক্ষেত্রে একজন মানুষ সফল হবে তবে সে যদি পড়ে ও পড়ে এবং পড়ে। বই পড়া উপযুক্ত স্থান লাইব্রেরী। বেশ কয়েকটি জোটবদ্ধ লাইব্রেরির আভিধানিক রূপ বইমেলা।

বইমেলা মানে জ্ঞানবুদ্ধির মেলা। বইমেলা মানে প্রাণের সাথে প্রাণের মিলনমেলা। স্বাধীনতা পরবর্তী দেশে যত বইমেলা হয়েছে সব মেলাই হয়তো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত অথবা নামে মাত্র ইসলামী মূল্যবোধ সম্বলিত। কিন্তু একই প্লাটফর্মে দুটি সমন্বয় কেউই করেনি। এমতাবস্থায় ইসলামী মূল্যবোধ ও বাঙালী জাতির নিজস্ব সাংস্কৃতিক চেতনাকে একিভূত করণের মাধ্যমে একটি কার্যকরী সাংস্কৃতিক চেতনা গড়ে তোলা সময়ের দাবী হয়ে উঠেছে। সচেতন মহলের এ দাবী পূরণের লক্ষ্যে গত বছর থেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) ও মহান স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে যে ৮ দিন ব্যাপী বইমেলার আয়োজন তা সত্যি প্রশংসনীয়।

মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম ও মুহাম্মদ মাছুমুর রশিদের যৌথ সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন, এম এন ইসলাম জিহাদী, মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী, মুহাম্মদ শফিউল আলম শফি, মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন ছিদ্দিকী, মুহাম্মদ এনামুল হক, মুহাম্মদ নুরুল্লাহ রায়হান খান, শাহজাদা মুহাম্মদ নিজামুল করিম সুজন, সৈয়দ মুহাম্মদ খোবাইব, মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন খান, রিয়াজ হোসাইন, হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ, এম সাইফুল ইসলাম নেজামী, মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম হিরু, মুহাম্মদ ফোরকান কাদেরী, মুহাম্মদ ইদ্রিচ, মুহাম্মদ রেজাউল করিম ইয়াছিন, মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, আমিনুল ইসলাম রুবেল, মুহাম্মদ নুর রায়হান চৌধুরী, মুহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, মুহাম্মদ ফরহাদ, মুহাম্মদ সাঈদ প্রমুখ। ইসলামী সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রজভীয়া নুরীয়া ইসলামি সাংস্কৃতিক ফোরামের মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন কাদেরী, সালামত রেজা কাদেরী, এয়ার মোহাম্মদ, খোরশেদুল আলম, রাকিবুল হাসান, ফোরকান রেজা।

মেলায় সমাপনী বক্তব্যে মেলা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব স উ ম আবদুস সামাদ বলেন, প্রথম বছরে সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতি সত্ত্বেও সকলের সার্বিক সহযোগিতায় সর্বস্তরের সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছি। গতবারের সফলতা ও এবারের কার্যক্রমেও আপনাদের সাথে পাবো এ বিশ্বাস নিয়ে বইমেলার এ বিশাল কর্মযজ্ঞে নেমে পড়েছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ সকলের সহযোগিতা পেয়েছি। এ সৃজনশীল কর্ম প্রচেষ্টায় যাঁরা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.