বিএনপি একজন ফেরারি আসামীকে চেয়ারপারসন করে দৈন্যদশাই প্রকাশ করলঃ প্রধানমন্ত্রী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃঃ  আওয়ামীলীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,বিএনপি একজন ফেরারি আসামীকে চেয়ারপারসন করে দলের দৈন্যদশাই প্রকাশ করল। তিনি বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন যাকে করা হল, সে ফেরারি আসামি, সে দেশেও নেই।

এখানে আমার প্রশ্ন, বিএনপিতে কি একটাও নেতা নাই যাকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন করা যেত? প্রধানমন্ত্রী আবারও প্রশ্ন করেন, বিএনপির কি নেতৃত্বের এতই দৈন্যদশা?

আজ সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি ) গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর ইতালি সফর প্রসঙ্গে জানাতে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির একটি গঠনতন্ত্র আছে। আমি জানি না আপনাদের কাছে সেটা আছে কি না। উপস্থিত সাংবাদিক উদ্দেশে প্রশ্ন করেন প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির গঠনতন্ত্র কি আছে সবার কাছে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওটার (বিএনপির গঠনতন্ত্র) কিন্তু আসলে খোঁজও পাওয়া যায় না। আপনারা যদি তাঁদের গঠনতন্ত্রটা পড়েন আর পজিশনের লোক গুণে দেখেন দেখবেন গঠনতন্ত্র মানা হয় না। ওটার ধারও কেউ ধারে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন,একটা সুবিধা তাঁদের (বিএনপি) গঠনতন্ত্রে আছে যিনি চেয়ারপারসন, তাঁর হাতে সব ক্ষমতা। যে ক্ষমতা আমারও নেই। অর্থাৎ আমাদের গঠনতন্ত্রে নেই। আমাদের গঠনতন্ত্রে ক্ষমতা প্রেসিডিয়াম ও কার্যকরী কমিটির হাতে। চূড়ান্ত ক্ষমতা নিবে আমাদের কাউন্সিল।

শেখ হাসিনা বলেন, কথা নেই বার্তা নেই হঠাৎ সংশোধন করে দিল। দুর্নীতি, ফৌজদারি কার্যবিধি বা মামলায় আসামি হলে দলে থাকতে পারবে না। সেটা তারা সংশোধন করে নিল।

সরকার প্রধান আরো বলেন, এটা স্বাভাবিক একনম্বর ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন । কিন্তু এখানে দেখা গেল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন যাকে করা হলো, সে ফেরারি আসামি, সে দেশেও নেই।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর রাজনীতি করবে না তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে এই মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেল। এরপর মামলায় শাস্তি হলো। মামলাগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা।

আমেরিকার এফবিআইয়ের (কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা) তদন্তে ধরা পড়েছে তার দুর্নীতি। তারা স্বাক্ষী দিয়েছে। এরপর সাজাপ্রাপ্ত। তাকেই করা হলো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন। বিএনপিতে এখন যে নেতারা আছে, যারা কর্মঠ সেখান থেকে কি একটা লোক খুঁজে পাওয়া গেল না যাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা যেত?

প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়েছিলেন জিল্লুর রহমান (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি)। তিনি বলেন, আমার বোনকেও করিনি, ছেলেকেও করিনি। প্রবাসী কাউকে করিনি। দেশের ভেতর থেকেই করেছি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় তাঁর।

কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন করা হয়। একই মামলায় ১০ বছরের সাজা হয়েছে তারেক রহমানের। তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ প্রশ্নপত্র ফাঁস নতুন বিষয় নয়, যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। কখনও প্রচার হয়, কখনও প্রচার হয় না। এটা নিয়ে খোঁচাখুঁচি করার কিছুই নেই।

তিনি বলেন, মন্ত্রী আর সচিব গিয়েতো প্রশ্ন ফাঁস করেননি, তাদের কেন সরে যেতে হবে, যারা করেছে তাদের ধরিয়ে দিন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আপনাদের তো সেখানে অনেক সোর্স আছে।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাড়াও বিভিন্ন মিডিয়ার সিনিয়র সাংবাদিক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে তিনি ইতালি সফরকে সফল উল্লেখ করে এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এর মধ্যে ইফাদের সঙ্গে দেশের উত্তর-পূর্বের ৬ জেলার ২৫ উপজেলার গ্রামীণ পিছিয়ে পড়া মানুষের অবকাঠামো ও বাজার উন্নয়নে ৯২ মিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি সই করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.