বিশ্ব ইজতেমায় লাখো মুসল্লীর ঢল
সিটি নিউজবিডিঃ বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত। আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে তাবলিগ জামাতের ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপ শেষ হবে। এ মোনাজাতে দেশি-বিদেশি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ মুসল্লি অংশ গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আজ রোববার সকাল ১১টা থেকে শুরু করে ১২ টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত হওয়ার কথা রয়েছে। এবার আখেরি মোনাজাত ও হেদায়েতি বয়ান দুটোই হবে বাংলায়। টঙ্গীর তাবলিগের মুরব্বী গিয়াসউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এবার বিশ্ব ইজতেমায় আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বাংলাদেশের কাকরাইল মসজিদের মাওলানা হাফেজ মোহাম্মদ জোবায়ের। আখেরি মোনাজাতের আগে হেদায়তি বয়ানও বাংলায় করবেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন।
ইজতেমার ময়দানের বাইরে অবস্থানকারী মুসল্লি ও এলাকাবাসীকে মোনাজাতে শরিক হতে গাজীপুর ও ঢাকা জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে শতাধিক মাইকের সংযোগ দেয়া হয়েছে। গাজীপুর জেলা তথ্য কর্মকর্তা এসএম রাহাত হাসনাত বলেন, ‘ভিড়ের কারণে যারা মূল ময়দানে যেতে পারবেন না, আখেরি মোনাজাতে তাদের শরিক হতে টঙ্গীর মধুমিতা রোড, টঙ্গী বিসিক এলাকা, নোয়াগাঁও এবং চেরাগআলীর বিভিন্ন শাখা সড়কে মোনাজাতের মাইকের সঙ্গে আরও ৮০টি মাইকের সংযোগ দেয়া হবে।
বিশ ইজতেমার প্রথম পর্ব গত শুক্রবার বাদ ফজর জর্দানের মাওলানা শায়েখ ওমর খতিবের
আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। তাবলিগ জামাত বরাবরের মতো এবারো টঙ্গীর তুরাগতীরে ইজতেমার আয়োজন করেন।
আখেরি মোনাজাতে অংশ গ্রহণের লক্ষ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে পুরো ইজতেমা ময়দান। আখেরি মোনাজাতে কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি অংশ নেয়াও কথা রয়েছে।
এছাড়া মোনাজাতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জাহিদ হাসান রাসেল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীরসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন অনেকে কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন।
আখেরি মোনাজাত হবে বাংলায়
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে আমেরিকা, সৌদি আরব, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, লেবানন, ফিলিপাইন, আফগানিস্তান, থাইল্যান্ড, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের ৮৫টি দেশের প্রায় সাড়ে ৪হাজার বিদেশি মুসল্লি অংশ নিয়েছেন।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ জানান, দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের নিরাপত্তায় প্রতিটি খিত্তায় সাদা পোশাকে ৬জন করে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া রাস্তাঘাট, ব্যস্ততম এলাকাসহ পুরো ইজতেমা ময়দান আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে পুরো ইজতেমা ময়দানকে ৮ স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ ইজতেমা মাঠে মোতায়েন রয়েছে। যা গেলো বারের চেয়ে ১৫শ’ বেশি।
বিশেষ বাস ও ট্রেন সার্ভিস: জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. রাহাত হাসনাত জানান, আখেরি মোনাজাতের দিন মুসল্লিদের সুবিধার্থে ১৯টি বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এছাড়া সব আন্তঃনগর ট্রেন টঙ্গীতে যাত্রাবিরতি করবে। বিআরটিসি দুই শতাধিক স্পেশাল বাস সার্ভিস চালু করেছে। আখেরি মোনাজাতের দিন ছাড়াও ইজতেমা চলাকালীন টঙ্গী স্টেশনে দ্রুতযানসহ প্রতিটি ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে।
আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় ধাপের তিন দিনব্যাপী ইজতেমা শুরু হবে। একইভাবে ২১ জানুয়ারি দুপুরে সকল মানুষের সুখ, শান্তি, কল্যাণ, অগ্রগতি, ভ্রাতিত্ববোধ ও মঙ্গল কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।