ভাইরাসে আক্রান্ত আলুক্ষেত,কৃষকদের ক্ষতির আশংকা

0

মো.দেলোয়ার হোসেন,চন্দনাইশ :: চন্দনাইশের ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে কয়েক সহস্রাধিক কৃষকের আলুক্ষেত পাতা মোড়ানো (মোজাইক) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে কৃষকেরা জানান। ফলে আলু চাষিরা ক্ষতির কবলে পড়বে বলে আশংকা বিরাজ করছে।

জানা যায়, প্রতি মৌসুমের ন্যায় চলতি মৌসুমেও চন্দনাইশ এবং সাতকানিয়ার আলু চাষিরা যথা নিয়মে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিকে জমিতে পুরোদমে আলু রোপন শুরু করে। আলুর চারা গজিয়ে উঠার পর দেখা যায় প্রায় আলু ক্ষেতই পাতা মোড়ানো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। চন্দনাইশে চলতি মৌসুমে ৬৩০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে,চন্দনাইশের সাতবাড়িয়া,হাছানদন্ডী,দোহাজারী,চাগাচর,চন্দনাইশ পৌরসভা ও সাতকানিয়ার খাগরিয়া,নলুয়া, চরতি আমিলাইশ এলাকায় সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়। গাছে আলু ধরার সময় ঘনিয়ে এলেই সব গুলোর আলুর ক্ষেত আক্রান্ত হয়ে পড়ে মোজাইক ভাইরাস নামে এক রোগে। এ রোগের কারণে আলু গাছের পাতা গুলো মুড়িয়ে গাছের সতেজতা কমে যায়। ফলে গাছে আলু ধরলে তা আকারে অনেক ছোট  হয়ে যায়।

মোজাইক ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় চলতি মৌসুমে আলু ফলনের লক্ষ মাত্রা অর্জন ব্যর্থ হবে বলে আংশকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে কৃষক,আলু উপর নির্ভরশীল তিনটি হিমাগার। মরা শঙ্খচরে প্রায় ৭০-৮০ ভাগ আলুর ক্ষেতে  এ ভাইরাসে আক্রমন করেছে বলে কৃষকেরা জানান।

শীত মৌসুমের শুরু থেকেই বৈরি আবহাওয়ার কারণে আলু চাষের ফলন ভালো না হওয়ায় ভালো নেই এ এলাকার কৃষকেরা। ক্ষেতে গাছ বেড়ে উঠার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে ভাইরাস। ফলে পচে মুড়িয়ে যাচ্ছে আলু নরম কোমল পাতা। এতে আশংকার মধ্যে রয়েছে ভুক্তভোগি আলু চাষিরা। ভরা মৌসুমে আলুর দরপতন ও বৈরি আবহাওয়ার কারণে আলু চাষাবাদের লক্ষ্য মাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা রয়েছে।

সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইতিমধ্যে তাদের আলু ক্ষেতের ৬০ ভাগ আলু গাছের পাতা মোড়িয়ে গেছে। এভাবে পুরো চরের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ ভাগ আলু ক্ষেত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। জমিতে আলু চাষ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে তাদের লাখ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এভাবে পুরো চরের কয়েক সহস্রাধিক চাষি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

বিষয়টি উপজেলা কৃষি অফিসে জানানোর পর কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শ মতে আলু ক্ষেতে কীটনাশক ছিটানোর পর কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিগত কয়েক বছর আগে আলু ক্ষেতে ব্যাপক আকারে এ রোগটি দেখা দিয়েছিল। চলতি মৌসুমে এ রোগ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

চন্দনাইশের দোহাজারীর পৌর এলাকার  কৃষক মোঃ আয়ুব  জানান, তার ২ খানি জমির আলু ক্ষেতে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। প্রায় আলু গাছের পাতা মোড়িয়ে যাচ্ছে।

দায়িত্ব প্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা জানান, মোজাইক নামের এক প্রকার ভাইরাস আলু ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ছে। ক্ষেত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে আলুর আকার ছোট হয়ে যায়। তারা এ সমস্যা সমাধানে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান। বিশেষ করে মাকড়সা দমন করার জন্য কৃষকদের এটোমাইট নামক ওষুধ ও বাহক পোকা দমনে টিডো অথবা ইমিটাফ নামক ওষুধ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শামীম হোসেন চলতি মৌসুমে আলু ক্ষেতে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা সত্যতা স্বীকার করে বলেন,  কৃষকদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য তারা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে আলু চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ ও কীটনাশক ব্যবহারের পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা ও প্রস্তুত করে চলেছেন।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.