যখন অন্ধকার আর দুর্দিন তখন ছিল মহিউদ্দিন -সেতু মন্ত্রী
সিটি নিউজবিডিঃ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ছিল মহিউদ্দিন চৌধুরীর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানেকে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট হত্যার পর যত আন্দোলন-সংগ্রাম হয়েছিল সবগুলোতেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ। দেশে যখন অন্ধকার আর দুর্দিন তখন ছিল এ বি এম মহিউদ্দিন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সেতু মন্ত্রী আজ চট্টগ্রামের সাবেক সফল মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বরণ সভায় নগরীর লালদিঘী ময়দানে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মহিউদ্দিন চৌধুরীর শূন্যতা সত্যিই অপূরনীয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে দরকার মহিউদ্দিনের সরকার। আর মহিউদ্দিনের সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে চাইলে সকলকে নিজ নিজ উদ্দ্যোগে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কোন ঘুষ খোর নেতার পিছু ধরে নয়, শেখ হাসিনার পথ ধরে দলকে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করতে হবে। আর এ জন্য তরুনদের কাজ করতে হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অবর্তমানে সভানেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের কাছে ঐক্য চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মহিউদ্দিনের আত্মাও চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের কাছে একই আহ্বান জানাচ্ছেন। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর লালদীঘি ময়দানে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই শোকসভার ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমি নেতাকর্মীদের কাছে একটি কথা বলব। আজ সকালে নেত্রীকে যখন বলেছি আমরা চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন ভাইয়ের স্মরণসভায় এসেছি, তখন নেত্রী আমাকে বলেছেন, চট্টগ্রামে গিয়ে শুধু একটা কথা বলবে। মহিউদ্দিন চৌধুরীর অবর্তমানে আমি ‘চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঐক্য চাই।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নেত্রী ঐক্য চান। আপনারা মহিউদ্দিন চৌধুরীকে যদি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চান, তাহলে ‘চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দু:সময়ে, দুর্দিনে মহিউদ্দিন চৌধুরী যেমন চট্টগ্রামবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করতেন, তেমনি শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর দুর্ভেদ্য ঘাঁটি এই ‘চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ অগ্রযাত্রা প্রত্যাশা করেছেন। এসময় নেতাকর্মীদের হাত তুলে ঐক্যবদ্ধ থাকার ওয়াদা করান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে কোন শক্তি ‘চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকাতে পারবে না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন আপনারা ঐক্যবদ্ধ হোন। চট্টগ্রামকে আবারও সংগ্রাম-আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ আর গণতন্ত্রের দুর্ভেদ্য ঘাঁটিতে পরিণত করুন। মহিউদ্দিন চৌধুরীর আত্মা আপনাদের এটাই আহ্বান জানাচ্ছে।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্বরণ সভায় স্মৃতিচারন কালে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আদর্শ গণমানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য কাজ করেছেন মহিউদ্দিন। রাজনৈতিক অপশক্তিকে কোনদিন প্রশ্রয় দেয়নি মহিউদ্দিন চৌধুরী। তিনি সব নেতাদের উর্ধে। তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে জাতীয় নেতা হয়েছিলেন মহিউদ্দিন, হয়েছেন চট্টগ্রামের মাটি ও গণমানুষের নেতা।
গণপূর্ত মন্ত্রী আরও বলেন, আমি এবং মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলাম বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহচর। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে শূণ্যতা বিরাজ করছে। মহিউদ্দিন মানুষের মুখের ভাষা চোখের ভাষা বুঝতেন। তাঁর নাম চট্টগ্রামের মানুষের হৃদয়ে স্বর্নাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ও মহিউদ্দিনের ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ও উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন। সংসদ সদস্যদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী ডা.আফছারুল আমিন, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, দিদারুল আলম, ও ওয়াসিকা আয়শা খান বক্তব্য রাখেন। আরো বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আলম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি নঈমউদ্দিন চৌধুরী ও খোরশেদ আলম সুজন বক্তব্য রাখেন।