রাঙ্গুনিয়ায় রাজনীতিতে হাইব্রীডরাই সক্রিয়ঃ ওসমান গনি চৌধুরী
গোলাম শরীফ টিটুঃ আলহাজ্ব মো: ওসমান গনি চৌধুরী চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮০-১৯৮৫ সালে) ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য, সভাপতি- বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তিনি।
বিশিষ্ট আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম এম.এ সাদেক চৌধুরীর ছোটভাই ওসমান গনি চৌধুরী ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে রাঙ্গুনিয়া আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিএনপি প্রার্থী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করেন। ওসমান গনি চৌধুরীর পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রাঙ্গুনিয়া থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ওবায়দুর রহমান চৌধুরী ওসমানগনি চৌধুরীর পিতা। ওবায়দুর রহমান চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ছিলেন।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানী বাহিনী উনাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ওসমান গনির এক চাচাতো ভাইকে পুড়িয়ে মারা হয়। তিনি সিটি নিউ্জ কে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে ওসমান গনি চৌধুরী বলেন,’২০০৬ সালে বড় ভাই সাদেক চৌধুরীর মৃত্যুর পর রাঙ্গুনিয়া থানা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত হই। সাকা চৌধুরীর বাহিনীর হাতে নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে থেকে নিজের অর্থে তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া বিভিন্ন মামলা মোকাবেলায় সক্রিয় ভুমিকা পালন করেছি।
এলাকার নেতাকর্মীদের অনুরোধে ২০০৭ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। ওই সময় জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে অনেকবার সাক্ষাৎ করি। তিনি আমাকে কাজ করে যাওয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ওয়ান ইলেভেনের পর নেত্রীর মুক্তির সংগ্রাম ও দলীয় কর্মসুচীতে সক্রিয় অংশগ্রহন করি।
২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু মনোনয়ন না পাওয়া সত্ত্বেও আওয়ামীলীগের প্রার্থী ড. হাসান মাহমুদের পক্ষে কাজ করে জয়লাভ করাতে সক্ষম হই। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনেও প্রার্থী হিসেবে আমি মনোনয়ন চেয়েছিলাম, কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৫ নভেম্বর ২০১৩ সালে গণভবনে আমাকে ডেকে বলেছিলেন,’ আমি যাকে মনোনয়ন দিব তার পক্ষে কাজ করতে হবে’। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করি।
তিনি বলেন,’ আমার যোগ্যতা, সততা ও পারিবারিক মর্যাদা, জনপ্রিয়তা, জনগনের কাছে গ্রহনযোগ্যতা ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ দিলে এই আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারব।
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ওসমান গনি চৌধুরী বলেন,’ ৭৫ পরবর্তীতে আমাদের পরিবার অনেকবার নির্যাতিত হয়েছে। আপনি জানেন, রাঙ্গুনিয়ার মাটিতে আমার বড়ভাই সাদেক চৌধুরী অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি কখনো দুর্নীতি বা অন্যায় কোন কাজ করেননি। আমরাও উনার মৃত্যুর পর রাজনীতিতে এসে সেই সততাকে ধরে রেখেছি। মানুষের জায়গা-জমি দখল, অত্যাচার-নির্যাতন আমরা কখনো করিনি। বর্তমানে রাজনীতির আবহাওয়া রাঙ্গুনিয়াতে ভাল নেই। দলে ত্যাগীদের কোন মুল্যায়ন নেই। বিএনপি-জামাত থেকে আসা বহিরাগত ও হাইব্রীড়রা এখন রাজনীতিতে সক্রিয়। এটা অশুভ লক্ষন।
ওসমান গনি চৌধুরী চলেন,’ রাঙ্গুনিয়াতে ত্যাগী-পরীক্ষিত ও সত্যিকার আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের পদচারনা না থাকায় মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। আমাদের পরিবারকে আগামী সংসদ নির্বাচনে মুল্যায়ন করলে রাঙ্গুনিয়াতে আওয়ামীলীগকে বিজয়ী করে আনতে পারব। কারন আমার বড় ভাই যে ক্লিন ইমেজের নেতা ছিলেন তা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। কখনো কোন অন্যায় বা দুর্নীতি করিনি।
২০০১ সালে নির্বাচনের পর যে সহিংসতা হয়েছিল তাতে আমাদের পরিবারও নির্যাতিত হয়েছে। আমাদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দেওয়া হয়। ২০০১ সালের পর রাঙ্গুনিয়াতে ঈদের জামাত পড়তে যেতে পারিনি। রাঙ্গুনিয়াতে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে নির্বাচন যত কঠোর ও নিরপেক্ষ হোক মানুষ শতস্ফুর্তভাবে আমাকে ভোট দেবেন। কারন আমরা মানুষের জন্য কাজ করেছি। একারনে মানুষ আমাকে চায়। আগামী নির্বাচনে যেন সৎ ও যোগ্য মানুষকে দেওয়া হয় এবং আমাদের পরিবারকে মুল্যায়ন করা হয়। এটি তৃনমুল আওয়ামীলীগের দাবী।
তিনি বলেন,’ দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। জননেত্রী শেখ হাসিনার শাসনামল দেশের সাফল্যের। যে কোন দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। মানুষের পাশে থাকতে চাই। মানুষের কল্যানে আমাদের পরিবার অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই হবে আমার নিরন্তর সংগ্রাম।