রাজনীতি ও সমাজসেবা আমার নেশা- এড.সালাহ্উদ্দিন লিপু

0

বিশেষ প্রতিবেধক,সিটিনিউজ : আনোয়ারার কৃতিসন্তান বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ ও কলামিষ্ট এড.সালাহ্উদ্দিন লিপু একান্ত সাক্ষাৎকারে সিটিনিউজকে বলেছেন মাননীয় ভুমি প্রতিমন্ত্রীর উন্নয়নের ছোঁয়ায় আনোয়ারা এখন স্বপ্নের উপজেলা, দলের দায়িত্ব পেলে দলকে আরো গতিশীল করবো । রাজনীতি ও সমাজসেবা আমার নেশা ।

রাজনীতিবীদ, কলামিষ্ট, গবেষক, সংগঠক ও আইনজীবি এডভোকেট সালাহউদ্দিন আহমদ চৌধুরী লিপু একজন পরিচ্ছন্ন, সৎ, নির্লোভ, মেধাবী, নিষ্ঠাবান, যোগ্য, প্রাজ্ঞ ব্যক্তি। তিনি আওয়ামীলীগের ত্যাগী, পরিশ্রমী, পরিক্ষিত, র্দুদিনের কান্ডারি ও নিবেদিত প্রাণ। উদারমনা, দানশীল ও পরোপকারী এই মহান ব্যক্তি ১৯৬৯ সালের ১৭ জানুয়ারী চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ারা উপজেলার বটতলী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত ও বনেদী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতামহ মরহুম আবদুল আজিজ চৌধুরী ও মরহুম আলহাজ্ব এয়াকুব আলী চৌধুরী তারা উভয়ে বটতলী ইউ,পির দীর্ঘদিন প্রেসিডেন্ট/চেয়ারম্যান ছিলেন। তার পিতা মরহুম আলহাজ্ব ছালেহ আহমদ চৌধুরী তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের সাবেক জুরার (বিচারক) ছিলেন। তার পিতামহ দ্বয়ও তৎকালীন চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের সাবেক জুরার (বিচারক) ছিলেন। বটতলী শাহ্ মোহছেন আউলিয়া ডিগ্রি কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাখিল মাদরাসা সহ বিভিন্ন মসজিদ ও মক্তব তার পিতা ও পিতামহ প্রতিষ্ঠা করেন।

বিশিষ্ট আইনজীবি ও রাজনীতিবীদ সালাহউদ্দিন লিপু এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতিতে আইন পেশায় যোগদান করি। আইন পেশা এবং সাহিত্য চর্চার পাশাপশি রাজনীতি ও সমাজ সেবায় সর্বদা নিয়োজিত আছি। আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, অতীতেও আমার পরিবার অসহায়, দুঃখী ও নির্যাতিত মানুষের সহায়তা ও সেবা করেছে। পারিবারিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় আমিও জনসেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছি। আজীবন আমি মানুষের সেবা করে যেতে চাই। আজীবন মানুষের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। রাজনীতি ও সমাজসেবা আমার নেশা। আনোয়ারাকে ঘিরে আমার স্বপ্ন ও ভবিষ্যত।

দুঃসময়ের কান্ডারী এডঃ লিপু ১৯৮৩ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে আসেন। স্বৈরাচার এরশাদ-খালেদা ও সেনা সমর্থিত ফখরুদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৫ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করেন। তৎকালে আন্দোলন করতে গিয়ে তাকে অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।

২০১৩-১৪ সালে দেশব্যাপী জামায়াত-বিএনপির নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেন এই আইনজীবি। ছিলেন যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবীতে মিছিল সমাবেশেও।

তিনি বলেন, এখনো আমি আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় আছি। সংগঠনের নেতৃত্ব দেয়ার মতো সাংগঠনিক ক্ষমতা ও যোগ্যতা থাকার পরও দলের জন্য এত ত্যাগ, শ্রম, অর্থ বিসর্জন দেয়ার পরও দল আমাকে যথাযথ মূল্যায়ন করেনি।

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারি এডঃ লিপু বলেন, ১৯৮৫-৮৭ সালে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক, দলকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে আনোয়ারা বটতলী শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ প্রতিষ্ঠা করে সভাপতির দায়িত্ব পালন করি। যে সংগঠনকে দলের তৎকালীন দুঃসময়ের কর্মী সৃষ্টি ও আন্দোলনের সুতিকাগার হিসেবে বলা হতো। ১৯৯৩-৯৬ আইন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সস্পাদক, ১৯৯৪-৯৫ সালে চট্টগ্রাম আইন কলেজ ছাত্র-সংসদের অর্থ সম্পাদক, ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতিতে নির্বাহী সদস্য, ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির পাঠাগার সম্পাদক নির্বাচিত হই। ২০০৯-১৪ সালে প্রশাসনিক ট্রাইবুন্যাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পি,পি, ২০১২-১৬ সালে দুই মেয়াদে বটতলী শাহ্ মোহছেন আউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, ২০১৪ সালে আনোয়ারা আইনজীবি কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিষ্ঠা ও সততার সাথে পালন করি। ২০০৯ সালে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাচনে “ভাইস-চেয়ারম্যান” পদে এবং ২০১১ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতি নির্বাচনে “সহ-সাধারণ সম্পাদক” পদে প্রতিদ্ধিতা করি, কিন্তু জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও দলীয় অভ্যন্তরীন কারণে আমাকে পরাজয় বরণ করতে হয়।

কর্মবীর এড. লিপু বর্তমানে এয়াকুব-ছালেহ ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের সভাপতি, নিজেদের প্রতিষ্ঠিত বটতলী শাহ্ মোহছেন আউলিয়া এয়াকুবিয়া দাখিল মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, জল-ভূমি-পরিবেশ রক্ষা পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত আইনজীবি সমন্বয় পরিষদের সদস্য। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের আইন উপদেষ্ঠা, সিটিনিউজবিডিডটকমের আইন উপদেষ্ঠা, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, চট্টগ্রাম জেলার আজীবন সদস্য সহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত আছেন। তার এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক প্রবন্ধ বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গুণী ব্যক্তি জনাব লিপু শিক্ষা, সমাজসেবা ও রাজনীতিতে অনবদ্য অবদানের জন্য বিভিন্ন পুরুষ্কারের ভূষিত হন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসন্ন উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে “সাধারণ সম্পাদক” পদে আমি পদপ্রার্থী। তৃণমূল পর্যায়ে আমার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আছে। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আমাকে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে। আশা করি আমার যোগ্যতা ও সাংগঠনিক ক্ষমতা বিবেচনা করে আমার প্রাণপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা মাননীয় ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি মহোদয় আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করে দলকে আরো গতিশীল করবেন। আমি মনে করি মন্ত্রী মহোদয় আমাকে সংগঠনের দায়িত্ব প্রদান করলে আমি সংগঠনকে উজ্জীবিত করতে পারবো।

আনোয়ারার সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উপনীত হয়েছে। দেশ এখন সম্পূর্ণ স্থিতিশীল। আনোয়ারায় বিদেশী বিনিয়োগকারীরা এদেশে বিনিয়োগ করার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছে। যার ফলে ভূমি প্রতিমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আনোয়ারায় গড়ে উঠছে চায়না ইকোনোমিক জোন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, জাইকা ইকোনোমিক জোন, গ্যাস সঞ্চালন লাইন। তা ছাড়া আনোয়ারায় ফায়ার সার্ভিস, নতুন থানা ভবন, ২৮০ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের প্রভূত উন্নয়ন সাধন করেন। আনোয়ারা আজ অবহেলিত নয়, এখন স্বপ্নের উপজেলা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.