রাস্তা কাটা চলতি মাসেই শেষ করতে হবেঃ মেয়র

0

সিটি নিউজঃ  চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন ওয়াসার সংযোগ লাইন স্থাপন ও উন্নয়ন কাজের জন্য ওয়াসাসহ বিভিন্ন সরকারী ও সেবাপ্রতিষ্ঠান সমূহের রাস্তা কাটার কাজ আপাতত স্থগিত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। সংযোগ লাইন স্থাপনের জন্য নগরীর বিভিন্ন স্থানের রাস্তা সমূহ কাটার কারণে কিছুটা নাগরিক ভোগান্তি হচ্ছে একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। আবার জনস্বার্থে এই উন্নয়ন কার্যক্রম বন্ধও রাখা যাবে না। তাই চলতি বছর নভেম্বর মাস পর্যন্ত সংযোগ লাইন স্থাপনের জন্য রাস্তা কাটার কাজ চলবে।

এরপর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত আর কোনো সংস্থাকে সংযোগ লাইনের জন্য রাস্তার কাটার অনুমতি দেয়া হবে না। এর মধ্যে সংযোগ লাইন স্থাপনের জন্য কাটা সড়কগুলো মেরামত ও গর্ত ভরাট করে যান চলাচলের উপযোগী করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

আজ মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) সকালে চসিকের কেবি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চসিকের ৪০তম সাধারন সভায় সভাপতির বক্তব্যে সিটি মেয়র এ কথা বলেন। চসিক সচিব মোহাম্মদ আবুল হোসেন এর সঞ্চালনায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু শাহেদ চৌধুরী, মেয়রের একান্ত সচিব মুফিদুল আলম, উপ পুলিশ কমিশনার সদর শ্যামল বৈদ্য নাথ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সভায় চসিকের প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলসহ চসিকের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানসহ সরকারি ও সেবা সংস্থা দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

মেয়ল সামনের মাসে যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেই নির্বাচনকে অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহিনীকে সবাত্মাক সহযোগিতার করার আহবান জানান। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই কাজে আপনাদের ভূমিকা রয়েছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে যাতে নগরীতে শান্তি শৃংখলা বজায় থাকে এ ব্যাপারে আপনাদের দায়িত্ব রয়েছে। পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনী আপনাদের সহযোগীতা করবে। আপনারা শুধু সজাগ থাকবেন কোন ধরনের গোলযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ যাতে ব্যাহত না হয়।

সভায় সিটি মেয়র আরো বলেন নগরীর ৪১ টি ওয়ার্ডে অনেক সম্পদ আছে। এগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। কর্পোরেশনের আয়ের ওপর নির্ভর করবে নগরীর উন্নয়ন কার্যক্রম। তাই থানা ভিত্তিক জরিপের মাধ্যমে আয়বর্ধক কি ধরনের প্রকল্প হাতে নেয়া যায় এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কাউন্সিলরদের প্রতি আহবান জানান। তিনি সড়ক বাতি স্থাপনের মাধ্যমে নগরীর আলোকায়নের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।

মেয়র সড়ক বাতি সরববাহ ও মেরামতের জন্য কাউন্সিলরদের চাহিদা মোতাবেক মালামাল সরবরাহ করা হচ্ছে জানিয়ে, তাদেরকে তা বুঝে নিয়ে কাজের তদারকী করতে বলেন। পরিচ্ছন্ন কাজে সব ওয়ার্ডে ভ্যানগাড়ির পরিবর্তে টমটম গাড়ী ব্যবহার হবে বলে মেয়র সভায় জানান। সভায় সিটি মেয়র বলেন চট্টগ্রামেই হচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম আধুনিক কসাইখানা। নগরীর চান্দগাঁও পুরাতন থানা এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের ৮৮শতক জায়গার উপর এই কসাইখানা নির্মিত হবে। অত্যাধুনিক এই কসাইখান (স্লটার হাউজ) নির্মানে ব্যয় হবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পশু জবাই ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ রক্ষায় দেশের অন্যান্য মেগা সিটির চেয়ে একধাপ এগিয়ে যাবে চট্টগ্রাম নগর।

তিনি বলেন এটি কেবল স্লটার হ্উাজ নয়, বরং বড় মাপের ইনস্টিটিউশনই হবে। থাকবে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুবিধা, আইসোলেশন সুবিধা ,স্মাট স্টকিং স্পেস, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, রক্ত থেকে ব্লাড মিল তৈরী ইত্যাদি থাকবে। এ্ই প্রকল্পের আওতায় থাকবে পাঁচতলা বিশিষ্ট ভবন, জবাই এরিয়া, একদিনে জবাই করা যাবে ১০০ পশু। অপেক্ষায় রাখা যাবে ৩০০ পশু।

এছাড়াও কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উদ্যাপন ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনাসহ আসন্ন মহান বিজয় দিবস উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সভায় চসিক পরিচালিত গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজসহ শিক্ষা কার্যক্রম ও টেকনিক্যাল ইনষ্টিটিউটে বিভিন্ন ট্রেড কোর্স চালু, অন্যান্য স্কুল কলেজে মাদক জঙ্গীবাদ, বাল্য বিয়ে রোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা মূলক কর্মসূচি গ্রহন, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ নগরীর যানজট সমস্যার নিরসনে বাস ট্রাক টার্মিনাল, ফুটওভার ব্রিজ, যত্রতত্র গরু-মহিষ জবাই বন্ধ, যাত্রী ছাউনি, পাবলিক টয়লেট, কিচেন মার্কেট নির্মাণ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

ৎসভায় চসিকের বিভিন্ন স্থাপনার পরিচালনায় নিয়োজিত রক্ষনাবেক্ষণ কমিটিগুলো হালনাগাদ করা, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা সহ বিভিন্ন ওর্য়াডে চলমান ছাদ বাগান কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। নগরীকে মেয়রের স্বপ্নের গ্রীন ক্লিন সিটিতে রূপান্তরের লক্ষ্যে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে সৌন্দর্য্যবধন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, কর্পোরেশনের পরিত্যক্ত জায়গায় উদ্যানে পরিণত করা, দুর্যোগ কালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি ও সচেতনতা কার্যক্রম গ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সভায় অর্থ ও সংস্থাপন,শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংরক্ষণ,আইন শৃংখলা,পরিচালনা ও রক্ষণা বেক্ষণ, যোগাযোগ, দারিদ্র হ্রাস করন ও বস্তি উন্নয়ন,নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন,পরিবেশ উন্নয়ন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা,সমাজকল্যান ও কমিউনিটি সেন্টার এবং পানি ও বিদ্যুৎ ষ্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানগণ স্ব স্ব কমিটির কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন এবং আলোচনান্তে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভার প্রারম্ভে সম্প্রতি নগরীতে নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.